বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
এক তালাক দেওয়া পর স্বামীর বাড়ীতে যদি স্ত্রী থাকে,এবং ইদ্দতের ভিতর স্বামীর সাথে সহবাস বা এ জাতীয় কিছু হয়ে থাকে,তাহলে রাজ'আত হয়ে গেছে।
তবে যদি স্বামী বিদেশ থেকে তালাক দেয়,এবং স্ত্রীর তিন হায়েয এর ভিতর স্বামী বিদেশ থেকে দেশে চলে না আসে,তাহলে যখনই ইদ্দত খতম হবে,সাথে সাথেই তালাক রাজয়ী টি বায়িন তালাকে পতিত হবে।
মহরকে নগদ বা বাকীতে রাখা স্ত্রী বা স্ত্রীর অভিভাবকের সন্তুষ্টির উপর নির্ভরশীল।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ النِّسَاء إِلاَّ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ كِتَابَ اللّهِ عَلَيْكُمْ وَأُحِلَّ لَكُم مَّا وَرَاء ذَلِكُمْ أَن تَبْتَغُواْ بِأَمْوَالِكُم مُّحْصِنِينَ غَيْرَ مُسَافِحِينَ فَمَا اسْتَمْتَعْتُم بِهِ مِنْهُنَّ فَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِيضَةً وَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا تَرَاضَيْتُم بِهِ مِن بَعْدِ الْفَرِيضَةِ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا
এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ।(সূরা নিসা-২৪)
নগদ বা বাকী যেকোনো প্রকারের মহর সম্পর্কে যখন স্বামী স্ত্রী পরস্পর সম্মত, তখন সেই চুক্তিকে বাস্তবায়ন করা জরুরী।
কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
(الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ)
মুসলমান তার কৃত চুক্তি ও ওয়াদা সমূহকে অত্যাবশ্যকীয় ভাবে পূর্ণ করবে।
উকবা ইবন আমির (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত।
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ أَحَقَّ الشُّرُوطِ أَنْ يُوَفَّى بِهِ مَا اسْتَحْلَلْتُمْ بِهِ الْفُرُوجَ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সর্বাধিক পালনীয় শর্ত হলো তোমরা যা দ্বারা মহিলার লজ্জাস্থান হালাল করবে, তা আদায় করা।(সুনানু নাসাঈ-৩২৮৫)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
রাসূলুল্লাহ সাঃ এর যুগে নগদ মহরের আলোচনাই পাওয়া যায়।এবং সাহাবায়ে কেরামের যুগেও নগদ মহরের আলোচনা পাওয়া যায়।তবে যেহেতু মহর স্ত্রীর হক,তাই সে চাইলে তার হককে দেড়ীতে উসূল করতে পারবে।এ বিষয়ের সম্পূর্ণ অধিকার শরীয়ত স্ত্রীকে দিয়েছে।সুতরাং সে হিসেবে নগদ মহরের শর্তে বিয়ের পর মহর উসূলের পূর্বে স্ত্রী তার স্বামীকে সহবাস থেকে বাধা প্রদাণ করতে পারবে।
(২)
বিয়ে শুদ্ধ হবে।এমনকি যদি স্বামী মহর না দেবার শর্ত করে বিয়ে করে,তবেও বিয়ে শুদ্ধ হবে।এবং মহর ওয়াজিব হবে।ইসলামি সরকার স্বামীকে মহর প্রদানের জন্য বাধ্য করবে।কোর্ট বিচারের মাধ্যমে জোড় প্রদর্শনের মাধ্যমে মহর উসূল করা হবে।শরীয়তে এর অনুমোদন রয়েছে।
(৩)
স্বামীর মহর আদায়ের নিয়ত না থাকলে হবেনা।বরং স্বামীকে আদায় করতেই হবে।শরীয়ত কর্তৃক স্বামী বাধ্য।কাযী বা ইসলামী সরকার স্বামীকে বাধ্য করবে।স্বামী যাই নিয়ত করুক না কেন,তাদের মধ্যকার বিবাহ সম্পর্ক নষ্ট হবে না।
(৪)
স্বামী যদি বলে যে, তোমার কারণে অন্যান্য অনেক দিক থেকে এতো এতো টাকা নষ্ট হইসে, তাই তোমার মোহর পরিশোধ হয়ে গেছে- এই কথা গ্রহণযোগ্য নয়।বরং তাকে পৃথকভাবে মহর আদায় করতেই হবে।