আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
119 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ উস্তাদ। প্রচন্ড টেনশনে আছি। পুরোটুকু পড়ার অনুরোধ রইল। পরিবার সাধারণ মুসলিম পরিবারের মত। দ্বীনের খুব বেশিআসসালামু বুঝ নেই। আমরা দুই বোন এক ভাই। আপু সবার বড়, তারপর ভাই, তারপর আমি। আব্বু ব্যবসায়ী ছিলেন, মা গৃহিনী৷ আব্বু ব্যবসা করাকালীন ব্যাংক থেকে অনেক টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। ২০১৪ সালের দিকে ব্যবসার পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যাওয়ায় সে ঋণ পরিশোধ করা হয়নি ফলে মামলা করা হয়ছে। এমতাবস্থায় আপু সংসারের হাল ধরেন। কিন্তু তিনি এনজিও তে চাকরি করছেন এখন প্রায় ৮বছর। ভাইয়ের বয়স এখন ২৮। সে ফ্রি ল্যান্সিং করার চেষ্টা করছে প্রায় দুই বছর যাবত। সে অলস প্রকৃতির। আমার বয়স ২২, আপুর ৩৪, অবিবাহিত । আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তা'য়ালার অশেষ রহমত উনি উনার এই পাপী বান্দাকে দ্বীনের বুঝ দান করেছেন। আব্বু যিনি আগে নামাজের ধারে কাছেও যেতেন না উনি এখন নামাজ পড়েন, তাবলীগে অংশগ্রহণ করেন আলহামদুলিল্লাহ। আমার প্রশ্ন হচ্ছেঃ

১. আপু যিনি মানেন উনি হারাম ইনকাম করছেন কিন্তু সংসারের হাল, ঋণের বোঝা এবং আমাদের দিকে তাকিয়ে  বাধ্য হয়ে চাকরিটা করছেন। সেক্ষেত্রে কি উনার গুন্নাহ হবে?
২. আমার ভাই দায়িত্ববান হয়ে সংসারের হাল না ধরে শুধু যে ফ্রী ল্যান্সিংয়ের চেষ্টা করছে এতে কি তার গুন্নাহ হবে?
৩. আমি সেকুলার ক্যারিয়ার চাই না। ধর্মীয় শিক্ষায় মননিবেশ করতে চাই। তাই অনার্স শেষ করতে চাইছি না। কিন্তু আমার পরিবারের মানুষজন এজন্য খুবই মন খারাপ করছে। আপু যিনি আমাদের জন্য এত কিছু করেছে এবং এখনও করছে, তিনি তো আমার সাথে কথাই বলেন না। আপুর ইচ্ছে ছিল বিসিএস দিবেন কিন্তু পরিবারের জন্য তা হয়ে উঠেনি। আপুর আমার প্রতি দাবি হচ্ছে আমি যেন ক্যারিয়ার করি, তার ইচ্ছে পূরণ করি।আমাকে অনেক কিছু বলে, দুনিয়া অনেক কঠিন, ক্যারিয়ার না থাকলে আমি দাওয়াত দিলেও মানুষ খুব বেশি গুরুত্ব দিবে না। এখন আমি কি করব? তাদের মনে কষ্ট দেওয়ার কারণে আমার কি গুন্নাহ হবে?
৪. এই ফিতনার যামানায় টিকে থাকা অনেক কঠিন। তাই আমি চাইছি বিয়ে করতে। আপুর বা ভাইয়ের কারোর ই বিয়ে হয়নি। আমার পরিবার আমার এহেন পরিবর্তনে ক্ষুব্ধ হলেও তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দিতে চাচ্ছেন। কিন্তু আম্মু বলছেন পরে পস্তাইতে হবে। আমি স্বার্থপর। শুধু নিজের চিন্তা করি। আপুর বিয়ে হয়নি। সে নিজের জীবন আমাদের জন্য নষ্ট করল। তার কথা ভাবছি না। আমি কি করব বুঝতে পারছি না। আমার কি করা উচিত উস্তাদ?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হ্যা,স্থান-কাল-পাত্র বেধে সময়ের  প্রয়োজনে ফুকাহায়ে কিরামগন সহজতার স্বার্থে আসল হুকুম থেকে সরে এসে তার বিপরীত সাময়িক হুকুম মাঝেমধ্যে প্রয়োগ করে থাকেন।একেই পরিভাষায় জরুরত বলে। জরুরত বা সময়ের চাহিদায় অনেক বিধিত সিদ্বান্তকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক পরিবর্তন করে দেয়।
এরকম কিছু ফিকহী মূলনীতি 'উসূলে ফিকহ' এর কিতাবাদিতে সবিস্তারে বর্ণিত আছে,তন্মধ্যে কিছু মূলনীতি হল।
 যথাক্রমেঃ-
 ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ
(প্রয়োজন অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে বৈধ করে দেয়)
এটা একাটা নীতিসিদ্ধ মৌলিক ফিকহী ক্বায়দা/ধারা যা কোরআন এবং হাদিসের থেকে চয়ন করা হয়েছে।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
আপনার বাবা ভাই জীবিত থাকাবস্থায় এভাবে আপনার বোনের জন্য এনজিওতে চাকুরী কখনো অনুমোদিত নয়। যদি মিশনারি এনজিও হয়, তাহলে সেটা আরো মারাত্বক পর্যায়ের। আপনার বোনের উপর ওয়াজিব যে, তিনি কেনো হালাল পেশায় আত্মনিয়োগ করবেন। যেহেতু আপনার বাবার বা ভাইয়ের আপাতত কোনো ইনকাম নেই, তাই আপনার বোন হালাল চাকুরীর সুযোগ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই চাকুরী করতে পারবেন।

(২)
আপনার ভাইয়ের উপর ওয়াজিব, বোনের পরিবর্তে সংসারের হাল সে নিজেই ধরবে। সুতরাং সংসারের হাল না ধরার জন্য সে ঘৃণিত হিসেবে বিবেচিত হবে। এবং তার গোনাহও হবে।

(৩)
আপনি আপনার শিক্ষার পরিপূর্ণ স্থরে উন্নতি করবেন।জাযাকিল্লাহ। আপনার বোনের পরামর্শ অনেকাংশে সঠিক।তবে সর্বদা নিজ ঈমান আমলের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে।

(৪)
আপনি বিয়ে করে নিবেন।বিয়ে শিক্ষার জন্য প্রতিবন্ধক হতে পারে না। পাশাপাশি বোনকেও বিয়ের পরামর্শ দিবেন। ভাইকেও বিয়ে করিয়ে নিবেন। বিয়ের দ্বারা রিযিকের প্রবৃদ্ধি ঘটে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...