আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
105 views
in পবিত্রতা (Purity) by (42 points)

১) আসলে ব্যাপারটা হলো এমন, 

আমার প্রস্রাবের সমস্যা আছে, এখন প্রস্রাব সবসময় পড়তেই থাকে। কিন্তু বাথ্রুম করার পর আমি পুরো পায়ে পানি ঢালি। তো সেগুলো তো তোয়ালে দিয়ে মুছতে হয়। এখন বাথ্রুম থেকে রুমে যাওয়ার পথেই কিছু প্রস্রাব বের হয়ে পড়ে। এখন আমি হাটুর নিচের অংশ টুকু মুছি। তো হাটুর নিচেও প্রস্রাব এসে পড়েছিল কিনা, সেটা আমি সিউর না। তাহলে কি সবকিছুকে পাক ধরব? 

পূর্বের প্রশ্নের ২ নং প্রশ্নের ভিত্তিতেঃ

২)

যদি কখনো এমন হয়ে যায় আমার কারনে অনেক জায়গায় অদৃশ্যমান নাপাকি ছড়িয়ে গেছে যেটা আমার পক্ষে ধুয়া কষ্টসাধ্য, তাহলে কি এভাবে দুয়া করা যাবে?

❝হে আল্লাহ, যে যে জিনিসগুলাতে নাপাকি লেগেছে তুমি সেই জিনিসগুলোর পরিবর্তে হুবুহু সেরকম জিনিস দিয়ে দাও।কিন্তু অইটা হবে পাক, এমন জিনিস দিয়ে দাও?❞

ক)

অথবা,  

যে স্থান গুলোতে নাপাকি লেগেছে সেগুলো সবগুলো যদি আমি পাক না করতে পারি তাহলে আমি কি  সেগুলো পাক না করে আল্লাহর কাছে শুধুমাত্র ক্ষমা চেয়ে নিতে পারব?

পূর্বের প্রশ্নের ৩নং প্রশ্নের ভিত্তিতে ঃ

৩) আমি নিশ্চিত সেখানে নাপাকি লেগেছে এবং সেই অবস্থায় এক ব্যক্তি নামাজ পড়েছে। এমতাবস্থায়ও কি একই উত্তর অর্থাৎ সেই ব্যক্তির নামাজ হবে এবং আমার কুফর হবে না?

 

৪)

মুখের ভিতরে অদৃশ্যমান নাপাকি এসে পড়েছিল একবার। এখন মুখ তো সবসময় ভিজা থাকে। কথা বলার সময় মুখ থেকে একটু লালা বাইরে এসে সামনের জিনিসে লাগে( আশা করি বুঝতে পেরেছেন কেমন লালা, মানে বেশি পরিমাণে নয়, হালকা থুথু দিলে যেমন হয়, তেমন লালাই বের হয়ে সামনের জিনিসে লাগে),  এখন সেই সামনের জিনিস টা কি নাপাক হয়ে যাবে???

ক)এমতাবস্থায় অর্থাৎ মুখের ভিতর অদৃশ্যমান নাপাকি থাকা অবস্থায় যদি আমি মুখের ভিতর আংুল দেই এবং আংুল এ লালা ভরে যায়, তাহলে কি হাত নাপাক হয়ে যাবে? 

বিঃদ্রঃ অদৃশ্যমান নাপাকির কোন চিহ্ন বা গন্ধের অস্তিত্ব নেই]

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْعَلَاءِ ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شَوْكَرِ بْنِ رَافِعٍ الطُّوسِيُّ ، نَا أَبُو إِسْحَاقَ الضَّرِيرُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ زَكَرِيَّا ، نَا ثَابِتُ بْنُ حَمَّادٍ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ ، عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ ، قَالَ : أَتَى عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - وَأَنَا عَلَى بِئْرٍ أَدْلُو مَاءً فِي رِكْوَةٍ لِي ، فَقَالَ : يَا عَمَّارُ ، مَا تَصْنَعُ ؟ قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، بِأَبِي وَأُمِّي ، أَغْسِلُ ثَوْبِي مِنْ نُخَامَةٍ أَصَابَتْهُ . فَقَالَ " يَا عَمَّارُ ، إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ : مِنَ الْغَائِطِ ، وَالْبَوْلِ ، وَالْقَيْءِ ، وَالدَّمِ ، وَالْمَنِيِّ ، يَا عَمَّارُ ، مَا نُخَامَتُكَ وَدُمُوعُ عَيْنَيْكَ وَالْمَاءُ الَّذِي فِي رِكْوَتِكَ إِلَّا سَوَاءٌ "

আহমাদ ইবনে আলী ইবনুল 'আলা (রহঃ) ... আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন, তখন আমি একটি কূপ থেকে বালতি দিয়ে পানি তুলে আমার একটি পানির পাত্রে ভর্তি করছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আম্মার! তুমি কি করছো? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কোরবান হোক। আমি আমার পরিধেয় বস্ত্রে লেগে যাওয়া শ্লেষ্মা পরিষ্কার করছি। তিনি বলেনঃ হে আম্মার! পাঁচটি জিনিস থেকে কাপড় ধৌত করা প্রয়োজনঃ বিষ্ঠা, পেশাব, বমি, রক্ত ও বীর্য। হে আম্মার! তোমার নাকের শ্লেষ্মা, তোমার উভয় চোখের অশ্রু এবং তোমার এই পানির পাত্রের পানি একই সমান (পাক-নাপাকীর হুকুমের ক্ষেত্রে)।
(সুনানে দারা কুতনি ৪৫০)

হাদীস শরীফে পেশাব থেকে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছেঃ
  
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: مَرَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَبْرَيْنِ، فَقَالَ: ” إِنَّهُمَا لَيُعَذَّبَانِ، وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ، أَمَّا أَحَدُهُمَا: فَكَانَ لَا يَسْتَنْزِهُ مِنَ البَوْلِ – قَالَ وَكِيعٌ: مِنْ بَوْلِهِ – وَأَمَّا الْآخَرُ: فَكَانَ يَمْشِي بِالنَّمِيمَةِ “.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূল সাঃ দু’টি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম হচ্ছিলেন। বললেন, এ দু’টি কবরে আযাব হচ্ছে। কোন বড় কারণে আজাব হচ্ছে না। একজনের কবরে আজাব হচ্ছে সে পেশাব থেকে ভাল করে ইস্তিঞ্জা করতো না। আরেকজন চোগোলখুরী করতো। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৯৮০, বুখারী, হাদীস নং-১৩৬১}

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন! 
পেশাব যেহেতু নাপাক,তাই এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
আপনি যেহেতু নিশ্চিত নন যে হাটুর নিচেও প্রস্রাব এসে পড়েছিল কিনা?

তাই হাটুর নিচে পেশাবের গন্ধ/চিন্হ পাওয়া না গেলে সেটিকে নিশ্চিত ভাবে নাপাক বলা হবেনা।
,
★তবে আপনি সতর্কতামূলক সেই স্থানও ধুয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন।

(০২)
এভাবে দোয়া করার দরুন কোনো লাভ হবেনা।
আপনার শরীরে নাপাকি লাগলে সেটি দোয়া করার দরুন পাক হবেনা।
বা দোয়া করার দরুন তাতে লাভ হবেনা।
আপনাকে পাকই করতে হবে। 

(০৩)
আপনার কুফর হবেনা।

উক্ত স্থানে সরাসরি নাপাকির উপর নামাজ পড়ার দরুন সেই ব্যাক্তির নামাজ হবেনা।
(তবে ঐ ব্যাক্তি যদি স্থানের নাপাকি সম্পর্কে না জানে,আর সারাজীবনেও কেউ তাকে বিষয়টি না জানায়,সেক্ষেত্রে উক্ত নামাজ তাকে পুনরায় আদায় করতে হবেনা।)

তবে যদি সেই নাপাক স্থানের উপর কোনো জায়নামাজ ইত্যাদি মোটা কিছু বিছিয়ে নামাজ আদায় করে,বা নাপাক স্থানে সেজদাহ.কিয়াম,বৈঠক কিছুই না করে,সেক্ষেত্রে নামাজ হয়ে যাবে।

(০৪)
হ্যাঁ, সামনের সেই জিনিস নাপাক হয়ে যাবে।

ক, হ্যাঁ এক্ষেত্রে হাত নাপাক হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 170 views
...