ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/4223/?show=4235#a4235 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,
আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করার মূল কথা হলো-‘পরস্পরের সঙ্গে মেহেরবানী করা ও অনুগ্রহ
করা।’
আত্মীয়তার সম্পর্কের ক্ষেত্রে মেহেরবাণী ও অনুগ্রহ সম্পর্কে আল্লামা কুরতবি
রহমাতুল্লাহি আলাইহি যথার্থই বলেছেন, রাহেম বা
আত্মীয়তার সর্ম্পক দুই ধরনের হয়-
>> সাধারণ
সম্পর্কএ সম্পর্কটি ব্যাপক এবং বিস্তৃত। যাকে বলা হয় দ্বীনি সম্পর্ক। একজন মানুষের
সঙ্গে ঈমানি বন্ধনের কারণে তার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা। ঈমানদারদের সঙ্গে ভালবাসা
রাখা। তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা। সব সময় তাদের কল্যাণে কাজ করা।
তাদের ক্ষতি হয় এমন কাজকে তাদের থেকে প্রতিহত করা। তাদের জন্য ন্যায় ও ইনসাফ
প্রতিষ্ঠা করা। লেন-দেন ও যাবতীয় ব্যবহারিক কর্মকাণ্ডে বৈষম্য দূর করা এবং তাদের
ন্যায় সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ তাদের হকগুলো আদায় করা।
যেমন- অসুস্থদের দেখতে যাওয়া;
তাদের
হকসমূহের ব্যাপারে সচেতন থাকা;
তাদের গোসল
দেয়া; জানাযার
নামাজ আদায় করা; দাফন-কাফন
ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করা।
,
>> বিশেষ
সম্পর্কমাতা-পিতা উভয় দিক থেকে রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়তা রক্ষা করা। তাদের হক বা
অধিকারসমূহ এবং তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা সন্তানের ওপর ওয়াজিব বা আবশ্যক।
যেমন- পিতামাতার খরচ বহন করা;
তাদের
খোঁজ-খবর নেয়া; প্রয়োজনের
সময় বিশেষ করে বার্ধক্যে তাদের পাশে থাকা।
আর যখন অনেক আত্মীয়ের অধিকার একত্রিত হয়; তখন
নিকটাত্মীয় হওয়ার ক্ষেত্রে অধিকার বাস্তবায়ন অগ্রাধিকার পাবে। পর্যায়ক্রমে তারপর
যেটি তুলনামূলক কাছের সেটি অগ্রাধিকার পাবে।
,
নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষার ধরন আল্লাম ইবনু আবি জামরাহ
রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
>> আত্মীয়তার
সম্পর্ক বজায় রাখা অনেক সময় মালামাল ও ধন-সম্পদ দ্বারা হয়;
>> প্রয়োজনের
সময় সাহায্য করার দ্বারা হয়;
>> ক্ষতিকে
প্রতিহত করার মাধ্যমে হয়;
>> পরস্পরের
সঙ্গে হাসি-খুশি ও ব্যবহারের মাধ্যমে হয়;
>> দোয়া করার
দ্বারাও হয়;
>> সাধ্যানুযায়ী
কারো কাছে কল্যাণকর কিছু পৌঁছানো দ্বারাও হয়;
>> সাধ্য ও
সামর্থ অনুযায়ী ক্ষতি থেকে বাঁচানোর দ্বারাও হয় এবং তাদের উপকার করার দ্বারাও হয়।
,
সুতরাং সময় সুযোগ তেমন না মিললে শুধু ফোনে কথা বলেও আত্মীয়তা সম্পর্ক ঠিক রাখা
যাবে।
তবে সময় সুযোগ হলে মাঝে মাঝে অল্প সময়ের জন্য হলেও নিকটতম আত্মীয়দের সাথে দেখা
সাক্ষাৎ করা দরকার।
★কেউ যদি মনে
মনে কোনো আত্মীয়ের প্রতি বিদ্বেষ না রাখে, কিন্তু সে
হয়ত মাসে একবারও তাদেরকে ফোন করেনা, তাদের সাথে
৬ মাসে একবার বা বছরে একবার বা ২-৩ বছর পর একবার দেখা করে তবে সে সম্পর্ক ছিন্নকারীর দলভুক্ত হবেনা।
,
এখানে কথা বন্ধ রাখার মাসয়ালা স্পষ্ট করছিঃ
শরীয়তের বিধান হলো কাহারো সাথে শরয়ী ওযর ব্যাতিত তিন দিনের বেশি কথাবার্তা বন্ধ রাখা, সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ নেই।
(কিতাবুল ফাতওয়া ৬/২১৭)
এটা যদি তাদের সামনা সামনি না হওয়ার কারনে হয়,যে সামনা
সামনি, দেখা
সাক্ষাৎ যেহেতু
আমাদের হচ্ছেনা,তাই কথা বলার সুযোগও হচ্ছেনা।
তাহলে তো কোনো সমস্যা নেই।
তবে দেখা সাক্ষাৎ হওয়ার পরেও বিনা কারনে কাহারো সাথে কথা বার্তা বলা বন্ধ করে
দেওয়া,সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ নেই।
★
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই/বোন!
১.
আপনি আপনার সাধ্যমত তাদের সাথে ভালো ও আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য চেষ্টা
চালিয়ে যাবেন।
২. মাঝে মাঝে ফোন দিয়ে তাদের খোঁজ খবর নিবেন। তাদের সাথে কথা বলবেন।
আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/4223/?show=4235#a4235