আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
209 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (38 points)

আসসালামু আলাইকুম। নিম্নের ঘটনাটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ এর " আবু তালিবের মৃত্যুর পর কুরাইশদের নির্যাতন বৃদ্ধি" শীর্সক অধ্যায়ে বর্ণনা করা হয়েছে। ঘটনাটির সনদ সহীহ কিনা জানতে চাই। 

 

"হাফিজ আবুল ফারাজ ইবনে জাওজী আপন সনদে ছা’লাবাহ ইবনে সাঈর ও হাকীম ইবনে হিজাম রা. থেকে বর্ণনা করেন তারা বলেন আবু তালিব ও খাদিজা রা. যখন ইন্তেকাল করেন তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একই সাথে এই দুইটি বিপদের সম্মুখীন হন। তাঁদের উভয়ের মৃত্যুর মধ্যে মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধান ছিল। তখন তিনি অধিকাংশ সময় ঘরেই থাকতেন। বের হতেন কম। ইতোপূর্বে কুরাইশরা তাঁর সাথে যে আচরণ করতে সাহস পেতো না  এখন তাঁরা সেই আচরণ করতে লাগল। এই সংবাদ আবু লাহাবের নিকট পৌছল। সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলে, ‘ হে মুহাম্মাদ! তুমি তোমার লক্ষ্যে এগিয়ে যাও এবং আবু তালিবের জীবদ্দশায় তুমি যা করতে এখনও তা তুমি করে যাও। লাত দেবীর কসম। আমার মৃত্যু পর্যন্ত ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে কেউ তোমার নিকট পৌছাতে পারবে না। ইবনে গায়তালাহ নামে এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে গালি দিয়েছিল। আবু লাহাব এগিয়ে গিয়ে তাঁকে শাস্তি দেয়। ইবনে গায়তালাহ তখন চীৎকার করে কুরাইশদেরকে ডেকে বলে, ‘ হে কুরাইশ সম্প্রদায়! আবু উতবা অর্থাৎ আবু লাহাব পিতৃধর্ম ত্যাগ করেছে, সে ধর্মান্তরিত হয়েছে। কুরাইশরা ত্বরিত গতিতে আবু লাহাবের বাড়িতে উপস্থিত হয়। সে বলে, আমি আমার পিতা আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করি নি। তবে আমি আমার ভাতিজাকে সকল অত্যাচার থেকে রক্ষা করব যাতে করে সে তাঁর লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারে। তাঁরা বলল তাহলে তো আপনি ভাল ও মহৎ কাজ করেছেন এবং আত্নীয়তার মর্যাদা রক্ষা করেছেন। ফলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিছুদিন নিরাপদ রইলেন। নিজের মত করে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে লাগলেন। আবু লাহাবের ভয়ে কেউ কিছু বলার সাহস পেতো না। এভাবে চলছিল। একদিন উকবা উবনে আবু মুয়াইত এবং আবু জাহল,  আবু লাহাবের নিকট এসে উপস্থিত হল। তাঁরা বলল আপনি আপনার ভাতিজাকে জিজ্ঞেস করুন, সে বলুক আপনার পিতার শেষ ঠিকানা কোথায়? আবু লাহাব বলল, ‘ হে মুহাম্মাদ! আবদুল মুত্তালিবের শেষ ঠিকানা কোথায়? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাঁর ঠিকানা তাঁর সম্প্রদায়ের সাথে। আবু লাহাব ওদেরকে গিয়ে বলল আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছি। সে বলেছে যে, আমার পিতার শেষ ঠিকানা তাঁর সম্প্রদায়ের সাথে। তাঁরা দুজনে বলল, সে তো বলে যে, আবদুল মুত্তালিবের শেষ জাহান্নামে। এবার আবু লাহাব বলল, হে মুহাম্মাদ! আবদুল মুত্তালিব কি জাহান্নামে যাবেন? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আবদুল মুত্তালিব যে ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন ঐ ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে কারো মৃত্যু হলে সে তো জাহান্নামেই যাবে। তখন অভিশপ্ত আবু লাহাব বলল, আল্লাহর কসম, আমি চিরদিনের জন্যে তোমার শত্রু হয়ে থাকব। কারণ, তুমি বিশ্বাস কর যে, আবদুল মুত্তালিব জাহান্নামে যাবেন। তখন থেকে আবু লাহাব ও সমগ্র কুরাইশ সম্প্রদায় বহুগুণ কঠোর হয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি শত্রুতায় লিপ্ত হয়।  "

 

টনাটির সনদ সহীহ কিনা জানতে চাই। 

1 Answer

0 votes
by (711,440 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ
আপনি যে হাদিস উল্লেখ করেছেন,সেই হাদিসটির আরবী টেক্সট নিম্নরূপ 
 نقل ابن كثير في السيرة عن ابن الجوزي قال: لَمَّا تُوُفِّيَ أَبُو طَالب، وَخَدِيجَة، وَكَانَ بَينهمَا خَمْسَة أَيَّام، اجْتمع عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مصيبتان، وَلزِمَ بَيْتَهُ، وَأَقَلَّ الْخُرُوجَ، وَنَالَتْ مِنْهُ قُرَيْشٌ مَا لَمْ تَكُنْ تَنَالُ، وَلَا تَطْمَعُ فِيهِ، فَبَلَغَ ذَلِكَ أَبَا لَهَبٍ، فَجَاءَهُ، فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ، امْضِ لِمَا أَرَدْتَ، وَمَا كُنْتَ صَانِعًا إِذْ كَانَ أَبُو طَالِبٍ حَيًّا فَاصْنَعْهُ، لَا وَاللَّاتِ، لَا يُوصَلُ إِلَيْكَ حَتَّى أَمُوتَ، وَسَبّ ابْنُ الْغَيْطَلَةِ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَقْبَلَ إِلَيْهِ أَبُو لَهَبٍ، فَنَالَ مِنْهُ، فَوَلَّى يَصِيحُ: يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ، صَبَأَ أَبُو عُتْبَةَ، فَأَقْبَلَتْ قُرَيْشٌ حَتَّى وَقَفُوا عَلَى أَبِي لَهَبٍ، فَقَالَ: مَا فَارَقْتُ دِينَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، وَلَكِنِّي أَمْنَعُ ابْنَ أَخِي أَنْ يُضَامَ حَتَّى يَمْضِيَ لما يُرِيد، فَقَالُوا: لقد أَحْسَنْتَ، وَأَجْمَلْتَ، وَوَصَلْتَ الرَّحِمَ.
فَمَكَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَذَلِكَ أَيَّامًا يَأْتِي وَيَذْهَبُ، لَا يَعْرِضُ لَهُ أَحَدٌ مِنْ قُرَيْشٍ، وهابوا أَبَا لَهب، إِذْ جَاءَ عُقْبَةُ بْنُ أَبِي مُعَيْطٍ، وَأَبُو جَهْلٍ إِلَى أَبِي لَهَبٍ، فَقَالَا لَهُ: أَخْبَرَكَ ابْنُ أَخِيكَ أَيْنَ مَدْخَلُ أَبِيكَ؟ فَقَالَ لَهُ أَبُو لَهَبٍ: يَا مُحَمَّدُ، أَيْنَ مَدْخَلُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ؟ قَالَ: مَعَ قومه، فَخرج إِلَيْهَا، فَقَالَ: قَدْ سَأَلْتُهُ، فَقَالَ: مَعَ قَوْمِهِ، فَقَالَا: يزْعم أَنه فِي النَّار، فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ، أَيَدْخُلُ عَبْدُ الْمُطَّلِبِ النَّارَ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: وَمَنْ مَاتَ عَلَى مَا مَاتَ عَلَيْهِ عَبْدُ الْمُطَّلِبِ دَخَلَ النَّارَ، فَقَالَ أَبُو لَهَبٍ - لَعَنَهُ اللَّهُ -: وَاللَّهِ لَا بَرِحْتُ لَكَ إِلَّا عَدُوًّا أَبَدًا، وَأَنْتَ تَزْعُمُ أَنَّ عَبْدَ الْمُطَّلِبِ فِي النَّارِ، وَاشْتَدَّ عِنْدَ ذَلِكَ أَبُو لَهَبٍ، وَسَائِرُ قُرَيْشٍ عَلَيْهِ.

সু প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম এবং হাদীস বিশেষজ্ঞদদের অনেকেই এ সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, এ হাদীসে সনদের দুর্বলতা বা মজবুতি কোনোটাই আমরা জানি না।তথা এটা সহীহ না কি দুর্বল আমরা জানি না।
তবে যেহেতু ইবনুল জাওযী এবং ইবনে কাসীরের মত বিজ্ঞ আলিম হাদিসটিকে নিয়ে এসেছেন,তাই আপতত এটাই বলা যায় যে এটা জাল হাদিস হবে না।
হাফিয ইরাকি আলফিয়াতুস সিয়ার কিতাবে উল্লেখ করেন,
وليعلمِ الطالبُ أنَّ السّيَرَا     تَجمَعُ ما صحَّ وما قدْ أُنْكرَا
ইতিহাসবিদ রা সহীহ দুর্বল সকল প্রকার হাদীসকেই জমা করে থাকেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...