আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
85 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (39 points)

আসসালামু আলাইকুম শায়েখ।

১/

তাফসির আবু বকর জাকারিয়া(কিছু অংশ)

             সূরা লাহাব

সূরা সম্পর্কিত তথ্যঃ

হাদীসে এসেছে, আল্লাহ্র বাণী

وَاَنْذِرْعَشِيْرَ تَكَ الْاَقْرَ بِيْنَ

“আর আপনি আপনার গোত্রের নিকটাত্মীয়দেরকে ভীতি প্রদর্শন করুন” [সূরা আশ-শু‘আরা: ২১৪] এ আয়াতটি অবতীর্ণ হলে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাফা পর্বতে আরোহণ করে কোরাইশ গোত্রের উদ্দেশ্যে وَا صَبَاحَاه (‘হায়! সকাল বেলার বিপদ’) বলে অথবা আবদে মানাফ ও আবদুল মোত্তালিব ইত্যাদি নাম সহকারে ডাক দিলেন। (এভাবে ডাক দেয়া তখন আরবে বিপদাশঙ্কার লক্ষণরূপে বিবেচিত হত) ডাক শুনে কোরাইশ গোত্র পর্বতের পাদদেশে একত্রিত হল। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: যদি আমি বলি যে, একটি শত্রুদল ক্রমশই এগিয়ে আসছে এবং সকাল বিকাল যে কোন সময় তোমাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়বে, তবে তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে কি? সবাই একবাক্যে বলে উঠল: হ্যাঁ, অবশ্যই বিশ্বাস করব। অতঃপর তিনি বললেন: আমি (শিরক ও কুফরের কারণে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে নির্ধারিত) এক ভীষণ আযাব সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করছি। এ কথা শুনে আবু লাহাব বলল, تَبًا لَكَ أَلِهٰذَا جِمَعْتَنَا ‘ধ্বংস হও তুমি, এজন্যেই কি আমাদেরকে একত্রিত করেছ’? অতঃপর সে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে পাথর মারতে উদ্যত হল। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সূরা লাহাব অবতীর্ণ হয়। [বুখারী: ৪৯৭১,৪৯৭২, মুসলিম:২০৮]

আমার প্রশ্ন:রাসুল (সাঃ) এর কথা মোতাবেক পাহাড়ের অপর পাশে কি শত্রুদল ছিল??----এই জায়গাটিতে বুঝতে পারিনি।

২/আমাদের শাফায়াত হবে রাসুল (সাঃ) এর হাতে।অন্য নবির উম্মত যারা ছিলেন ওনাদের শাফায়াত কোন নবি করবেন??আমাদের নবি (সাঃ) নয় কি??

[শায়েখ প্রশ্নগুলো ভাবছিলাম আমার উস্তাদ বা মসজিদের ইমামের কাছে করব।তবে আমার এসব উল্টাপাল্টা প্রশ্নে উনার ইমানের উপর যদি আঘাত আসে অথবা উনার যদি এসব প্রশ্নের  উত্তর যদি জানা না থাকে তবে উনি যদি রাগ করেন।এই চিন্তা করে প্রশ্নগুলো ifatwa তে-ই করলাম। 

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ [وَأَنْذِرْ عشيرتك الْأَقْرَبين] خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى صَعِدَ الصَّفَا فَجَعَلَ يُنَادِي: «يَا بَنِي فِهْرٍ يَا بني عدي» لبطون قُرَيْش حَتَّى اجْتَمعُوا فَجَعَلَ الرَّجُلُ إِذَا لَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يَخْرُجَ أَرْسَلَ رَسُولًا لِيَنْظُرَ مَا هُوَ فَجَاءَ أَبُو لَهَبٍ وَقُرَيْشٌ فَقَالَ: أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَخْبَرْتُكُمْ أَنَّ خيَلاً تخرجُ منْ سَفْحِ هَذَا الْجَبَلِ - وَفِي رِوَايَةٍ: أَنَّ خَيْلًا تَخْرُجُ بِالْوَادِي تُرِيدُ أَنْ تُغِيرَ عَلَيْكُمْ - أَكُنْتُمْ مُصَدِّقِيَّ؟ قَالُوا: نَعَمْ مَا جَرَّبْنَا عَلَيْكَ إِلَّا صِدْقًا. قَالَ: «فَإِنِّي نَذِيرٌ لَكُمْ بَيْنَ يَدَيْ عَذَابٌ شديدٍ» . قَالَ أَبُو لهبٍ: تبّاً لكَ أَلِهَذَا جَمَعْتَنَا؟ فَنَزَلَتْ: [تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ] مُتَّفق عَلَيْهِ 

ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন (ভীতি প্রদর্শন সম্পর্কীয় আয়াত) “তুমি তোমার নিকটতম আত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দাও”- (সূরাহ আশ শুআরা ২৬: ২১৪); অবতীর্ণ হলো, তখন নবী (সা.) সাফা পাহাড়ে আরোহণ করে- হে বানী ফিহর! হে বানী ‘আদী! বলে কুরায়শদের গোত্রসমূহকে আহ্বান করেন। পরিশেষে সেখানে সকলে একত্রিত হলো। এমনকি যারা স্বয়ং উপস্থিত হতে পারেনি, তারা প্রতিনিধি পাঠিয়ে জানতে চাইল যে, ব্যাপার কি? বিশেষত আবূ লাহাব এবং কুরায়শের সর্বসাধারণ লোকেরাও আসলো।
তখন তিনি (সা.) বললেন, বল তো! আমি যদি তোমাদেরকে বলি যে, (শত্রুপক্ষের) একদল অশ্বারোহী এ পাহাড়ের অপর প্রান্ত হতে। অপর এক বর্ণনা মতে, একদল অশ্বারোহী উপত্যকার এক প্রান্ত হতে বের হয়ে হঠাৎ তোমাদের ওপর আক্রমণ করতে চায়, তোমরা কি আমার এ কথাটি বিশ্বাস করবে? তারা সকলে বলে উঠল; হ্যাঁ, নিশ্চয়। কেননা তোমাকে আমরা বিগত দিনে সত্যবাদীই পেয়েছি। তখন তিনি (সা.) বললেন, আমি তোমাদের সম্মুখে আগত এক কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করেছি। এতদশ্রবণে আবূ লাহাব বলে উঠল, তোমার ধ্বংস হোক! এজন্যই কি তুমি আমাদেরকে একত্রিত করেছ? বর্ণনাকারী বলেন, তখনই আয়াত অবতীর্ণ হলো “আবূ লাহাব-এর উভয় হাত ধ্বংস হয়েছে"- (সূরাহ্ আল লাহাব ১১১ : ১)।

(সহীহঃ বুখারী ৪৮০১, মুসলিম ৩৫৫-(২০৮), সহীহুল জামি ৭৯০২, মুসনাদে আহমাদ ২৮০২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৬৫৫০, আস্ সুনানুল কুবরা লিন্ নাসায়ী ১১৪২৬, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী ১৩৪৮৬।)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ঐ সময়ে পাহাড়ের অপর পাশে শত্রুদল ছিলোনা।
এটি স্রেফ ধরে নেয়া মূলক হিসেবে বলা হয়েছে।

যদি আমি বলি যে পাহাড়ের অপর পাশে শত্রুদল আছে,তাহলে কি আমার কথা বিশ্বাস করবে?

এখানে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর প্রতি তাদের কেমন বিশ্বাস ছিলো,সেটি জানার জন্য বলেছেন।

(০২)
অন্য নবির উম্মত যারা ছিলেন উনাদের শাফায়াত,আমাদের রাসুলুল্লাহ সাঃ-ই করবেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أُعْطِيتُ خَمْسًا لَمْ يُعْطَهُنَّ أَحَدٌ قَبْلِي: نُصِرْتُ بِالرُّعْبِ مَسِيرَةَ شَهْرٍ وَجُعِلَتْ لِيَ الْأَرْضُ مَسْجِدًا وَطَهُورًا فَأَيُّمَا رَجُلٍ مِنْ أُمَّتي أدركتْه الصَّلاةُ فليُصلِّ وأُحلَّتْ لي المغانمُ وَلَمْ تَحِلَّ لِأَحَدٍ قَبْلِي وَأَعْطِيتُ الشَّفَاعَةَ وَكَانَ النَّبِيُّ يُبْعَثُ إِلَى قَوْمِهِ خَاصَّةً وَبُعِثْتُ إِلَى النَّاسِ عامَّةً . مُتَّفق عَلَيْهِ متفق علیہ ، رواہ البخاری (335) و مسلم (3 / 521)، (1163) ۔ (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ) 

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আমাকে এমন পাঁচটি জিনিস দেয়া হয়েছে, যা আমার আগে আর কাউকে দেয়া হয়নি।
১. আমাকে এক মাসের দূরত্বের মধ্যে রু’ব (ভীতি) দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে।
২. আমার জন্য মাটিকে মসজিদ ও পবিত্রতা অর্জনের উপকরণ বানানো হয়েছে। কাজেই আমার উম্মতের কোন লোক যেখানেই সালাতের সময় হয়ে যাবে, সে যেন সেখানেই সালাত আদায় করে নেয়।
৩. আমার জন্য গনীমাতের সম্পদ বৈধ করা হয়েছে, যা ইতোপূর্বে কারো জন্য বৈধ ছিল না।
৪. আমাকে শাফাআতের অধিকার দেয়া হয়েছে।
৫. প্রত্যেক নবী প্রেরিত হয়েছেন কেবলমাত্র আপন আপন গোত্রের জন্য, কিন্তু আমি প্রেরিত হয়েছি সমগ্র মানবজাতির জন্য।

(সহীহঃ বুখারী ৩৩৫, মুসলিম ৩-(২১), নাসায়ী ৪৩২, সহীহ আবু দাউদ ৫০৬, ইরওয়াউল গালীল ২৮৫, মা'রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার ৩১৬৪৫, মুসনাদে আবদ ইবনু হুমায়দ ১১৫৪, মুসনাদুল হুমায়দী ৯৪৫, মুসনাদে বাযযার ৬৪৬, মুসনাদে আহমাদ ২৭৪২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৬৩৯৮।)

উল্লেখিত হাদীসে বলা হয়েছে যে কেবল রাসূল (সা.) -কেই শাফায়াতের অনুমতি দেয়া হয়েছে।, এটা বিশেষ সুপারিশ। সুতরাং অন্য কোনো নাবী শাফায়াতের অনুমতি পাবেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...