بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
অমুসলিমদের ধর্মীয় কাজে ব্যবহৃত জিনিষপত্র বা বিজাতীয় সংস্কৃতির
জিনিষপত্র এবং বিভিন্ন শরীয়ত বিরোধী কাজ সমূহে ব্যবহৃত উপকরণ ক্রয়-বিক্রয় এবং ভাড়া
দেওয়া সম্পর্কে ওলামায়ে কেরামের মাঝে কিছুটা দ্বিমত আছে।
একদল উলামায়ে কেরাম এজাতীয় ক্রয়-বিক্রয় বা ভাড়া প্রদানকে নাজায়েয
মনে করেন। তাদের দলীল হল, কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা করেছেন,
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ
وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ
اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অর্থ: সৎকর্ম ও খোদাভীতির কাজে পরস্পর সাহায্য কর। পাপকর্ম
এবং সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ
তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।(সূরা-মায়েদা-২)
অন্যদিকে উলামায়ে কেরামের বিরাট একটি অংশ বলেন, সুদ ,মদ, শুকর ব্যতীত অন্যান্য বিষয়ে মূল কাজ বৈধ হলে তা করা
যাবে। যেমন গির্জায় ঝাড়ু দেওয়া, ইত্যাদি। কেননা শুধুমাত্র ঝাড়ু
দানের কাজ অবৈধ নয়। তাই উক্ত ঝাড়ু দানের কাজ অবৈধ হবে না। চাই তা কোনো গির্জা বা
অনৈসলামিক স্থানেই হোক না কেন।
ফাতাওয়া শামীতে বর্ণিত আছে,
ﻭﻟﻮ ﺁﺟﺮ ﻧﻔﺴﻪ ﻟﻴﻌﻤﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﻜﻨﻴﺴﺔ ﻭﻳﻌﻤﺮﻫﺎ ﻻ ﺑﺄﺱ ﺑﻪ
ﻷﻧﻪ ﻻ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﻓﻲ ﻋﻴﻦ ﺍﻟﻌﻤﻞ
যদি কেউ কোনো গির্জায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে,অথবা টাকার
বিনিময়ে গির্জা নির্মাণ করে দেয়, তাহলে এতে তার কোনো গুনাহ হবে
না। কেননা এখানে মূল কাজে কোনো গুনাহ নাই।(রদ্দুল মুহতার,৬/৩৯২)
ফিকহে হানাফির প্রসিদ্ধ ও প্রামাণ্যগ্রন্থ হেদায়া কিতাবে আছে-
وَمَنْ أَجَّرَ بَيْتًا لِيُتَّخَذَ فِيهِ
بَيْتُ نَارٍ أَوْ كَنِيسَةٌ أَوْ بِيعَةٌ أَوْ يُبَاعُ فِيهِ الْخَمْرُ
بِالسَّوَادِ فَلَا بَأْسَ بِهِ.
কেউ যদি বাড়ি ভাড়া দেয় এবং ভাড়াটিয়া তাতে অগ্নিশিখা, গির্জা,
মন্দির কিংবা মদের থালা তৈরি করে, তাহলে বাড়ি
দানকারীর কোনো পাপ নেই।
مرغيناني، الهداية، 4: 94، المکتبة الاسلاميه
• এর থেকে তাদের কাছে ডেকোরেটরের মালামাল ভাড়া
দেওয়ার অবকাশ পাওয়া যায়।
তাছাড়া যেহেতু এসব বস্তু কেবল গুনাহের কাজের জন্যই প্রস্তুত
করা হয়নি বরং এগুলোর জায়েজ ব্যবহারেরও সুযোগ রয়েছে। যেমন ওয়াজ মাহফিলে কিংবা কোনো দ্বিনি
প্রোগামেও এগুলো ব্যবহার করা যায়। কাজেই মূল বস্তুতে কোনো দোষ নাই। তাই এসব ভাড়া দিয়ে
উপার্জন করা হালাল। তবে যারা ভাড়া নিয়ে গোনাহের কাজ করছে তারা তাদের কৃতকর্মের কারণে
গোনাহগার হবে। এতে ভাড়াদাতার গোনাহ হবে না।
★প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে উলামায়ে কেরাম থেকে দুই ধরণের মতামত পাওয়া
যায়। তবে আমাদের নিকট সর্বত্তম মনে হয় যে, যদি কাউকে ডেকোরেটরের মালামাল ভাড়া দেওয়ার
সময় নিশ্চিত মনে হয় যে, সে সেগুলি
গনাহের কাজে ব্যবহার করবে তাহলে তাকে গুনাহের কাজে সহযোগিতা না করার উদ্দেশ্যে সেগুলি
ভাড়া দিবে না। তবে যদি ভাড়া দেওয়ার সময় জানা না যায় যে, সে কি কাজে সেগুলি ব্যবহার করবে? এমতাবস্থায় উক্ত মালামাল ভাড়া দিয়ে ইনকাম
করা জায়েয আছে।
আপনাদের উদ্দেশ্য ও নিয়ত সত্যিই প্রশংসনীয়। যদি আপনারা আপনাদের
সেই কন্ডিশন অনুযায়ী উক্ত বিজনেস পরিচালনা করতে পারেন তাহলে তা আপনাদের জন্য জায়েয
আছে। উক্ত পদ্ধতিতে আপনাদের ইনকামও হালাল হবে ইনশাআল্লাহ।