আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
166 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (1 point)
কোন স্টুডেন্ট টাকা জমিয়েছে ৩ লাখ টাকা, তার মা মারা গিয়েছে। মায়ের স্বপ্ন পুরন করতে, একটা ফ্লাট কিনার উদ্দেশে সে টাকা জমিয়েছে। তার বাবার জিম্মায় আছে সে এখন।তবে তার বাবার ইনকাম খুব ই কম, দিন আনে দিন খায়। এই অবস্থায় কি তাকে যাকাত দিতে হবে?বা তার উপর ফরজ হবে?তার বয়স ২১ বছর

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/43469/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-

যাকাত ইসলামের মৌলিক পাঁচটি বিধানের একটি।নেসাব পরিমাণ মালের মালিকের উপর যাকাত প্রদান করা ফরয।
যাকাতের নেসাব-
৭.৫ তুলা স্বর্ণ অথবা ৫২ভড়ি রূপা বা তার সমমূল্যের টাকার মালিকের উপর ২.৫%করে যাকাত দেওয়া ফরয।

যাকাতের নেসাব-
সোনা, রূপা,টাকা,এবং ব্যবসায়িক মালে যাকাত আসে, যদি তা নেসাব পরিমাণ হয়।
স্বর্ণের নেসাবঃ৭. ৫ভড়ি।
রূপার নেসাবঃ৫২. ৫ভড়ি।
এখানে একটি জিনিষ লক্ষণীয় যে,কারো কাছে শুধুমাত্র স্বর্ণ বা শুধুমাত্র রূপা থাকলে সেটার নেসাব পূর্ণ হলেই যাকাত আসবে।অন্যথায় যাকাত আসবে না।তবে হ্যা যদি কারো নিকট স্বর্ণ এবং রূপা যদি এভাবে থাকে যে,কোনো একটির নেসাব পূর্ণ হওয়ার জন্য সামান্য বাকী। তাহলে এক্ষেত্রে যেটা বেশী সেটারই নেসাব পূর্ণ করা হবে।যেমন কারো কাছে স্বর্ণ ৭. ৫ভড়ির চেয়ে সামান্য কম, তাহলে এমতাবস্থায় রূপা দ্বারা স্বর্ণের নেসাবকে পূর্ণ করা হবে।
টাকা এবং মালের নেসাবঃ
টাকা এবং মালকে রূপার সাথে সংযুক্ত করে রূপার নেসাব হিসেবেই ধরা হবে।তথা কারো কাছে ৫২. ৫ভড়ি সমমূল্যে র টাকা বা ব্যবসায়িক পণ্য থাকলে তার উপর যাকাত আসবে।
এক্ষেত্রে স্বর্ণকে মানঢন্ড হিসেবে ধরা হবে না।সোনা রূপার বিক্রয়মূল্য র উপরই যাকাত আসে।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/121

মালে নামীতে যাকাত আসে।
মালে নামী বলতে যে মাল শরীয়তের দৃষ্টিতে বাড়তে থাকে,সেগুলো সর্বমোট চার প্রকার,(১)সোনা(২)রুপা(৩)ব্যবসার মাল(৪)গবাদি পশু
এগোলো কে যেহেতু শরীয়ত বাড়ন্ত মাল বলে আখ্যা দিয়েছে,সুতরাং এগুলো বাড়ন্ত মাল।বাস্তবে সবগুলো বাড়ুক বা নাই বাড়ুক।

মালে গায়রে নামী বলতে যে মাল শরীয়তের দৃষ্টিতে বাড়ে না।উপরোক্ত মাল ব্যতীত সবগুলোই অবাড়ন্ত।যেমন-স্থাবর সম্পত্তি এবং নিজ প্রয়োজনে ক্ররিদকৃত গাড়ী আসবাবপত্র ইত্যাদি। বিস্তারিত দেখতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1434

★যাকাত আদায় না করলে এর জন্য কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عن عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده أن امرأة أتت رسول الله صلى الله عليه و سلم ومعها ابنة لها وفي يد ابنتها مسكتان غليظتان من ذهب فقال لها ” أتعطين زكاة هذا ؟ ” قالت لا قال ” أيسرك أن يسورك الله بهما يوم القيامة سوارين من نار ؟ ” قال فخلعتهما فألقتهما إلى النبي صلى الله عليه و سلم وقالت هما لله عزوجل ولرسوله

অনুবাদ- আমর বিন শুয়াইব থেকে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিন [দাদা] বলেনঃ এক মহিলা তার কন্যাসহ রাসূল সাঃ এর খিদমতে উপস্থিত হন। তার কন্যার হাতে মোটা দুই গাছি স্বর্ণের চুড়ি [কাঁকন] ছিল। তিনি [রাসূল সাঃ] তাকে বললেনঃ তোমরা কি এটার যাকাত আদায় কর? মহিলা বলেনঃ না। রাসূল সাঃ বলেনঃ তুমি পছন্দ কর যে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা এর পরিবর্তে তোমাকে এক জোড়া আগুনের কাঁকন পরিধান করান? রাবী বলেনঃ একথা শুনে মেয়েটি তার হাত থেকে তা খুলে নবী করীম সাঃ এর সামনে রেখে দিয়ে বললঃ এ দু’টি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৫৬৩, সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৭৭৯৯, সুনানুল কুবরা লিননাসায়ী, হাদীস নং-২২৫৮, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২০০৫}

عن عبد الله بن شداد بن الهاد أنه قال دخلنا على عائشة زوج النبي صلى الله عليه و سلم فقالت ” دخل علي رسول الله صلى الله عليه و سلم فرأى في يدي فتخات ( خواتيم كبار ) من ورق فقال ” ما هذا يا عائشة ” ؟ فقلت صنعتهن أتزين لك يارسول الله قال ” أتؤدين زكاتهن ؟ ” قلت لا أو ماشاء الله قال ” هو حسبك من النار “

হযরত আব্দুল্লাহ বিন শাদ্দাদ ইবনুল হাদ থেকে বর্ণিত। তিন বলেন, আমরা রাসূল সাঃ এর স্ত্রী হযরত আয়শা রাঃ এর খেদমতে উপস্থিত হই। তখন তিনি বলেন, একদা রাসূল সাঃ আমার নিকট উপস্থিত হয়ে আমার তাতে রূপার বড় বড় আংটি দেখতে পান। তিনি বলেন, হে আয়শা! এটা কি? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার উদ্দেশ্যে রূপচর্চা করার জন্য তা বানিয়েছি। তিনি জিজ্ঞাসা করেনঃ তুমি কি এর যাকাত পরিশোধ করে থাক? আমি বললাম, না অথবা আল্লাহ পাকে যা ইচ্ছে ছিল। রাসূল সাঃ বললেনঃ তোমাকে দোযখে নিয়ে যাওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৫৬৫, সুনানে সুগরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১২৩৩, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৭৩৩৮, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১৯৭৪, মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-১৪৩৭}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত স্টুডেন্ট এর উপর যাকাত আবশ্যক।
প্রতি বছর তাকে তার জমানো অর্থের উপর শতকরা আড়াই পার্সেন্ট হারে যাকাত দিতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...