বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
জাস্টিস আল্লামা তাকী উসমানী (দাঃবাঃ)লিখেন,
ﻛﺜﻴﺮ ﻣﻦ ﻋﻠﻤﺎﺀ ﺍﻟﺒﻼﺩ ﺍﻟﻌﺮﺑﻴﺔ، ﻭ ﺟﻠﻬﻢ ﺃﻭﻛﻠﻬﻢ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﻼﺩ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ، ﻗﺪ ﺃﻓﺘﻮﺍ ﺑﺄﻧﻪ ﻻﻓﺮﻕ ﺑﻴﻦ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﻤﺮﺳﻮﻣﺔ ﻭ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﺸﻤﺴﻴﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻜﻢ ..… ﻭﺍﻟﻮﺍﻗﻊ ﺃﻥ التفريق ﺑﻴﻦ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﺸﻤﺴﻴﺔ ﻻ ﻳﻨﺒﻐﻲ ﻋﻠﻰ ﺃﺻﻞ ﻗﻮﻯ، ﻭﻣﻦ ﺍﻟﻤﻘﺮﺭ ﺷﺮﻋﺎ ﺃﻥ ﻣﺎﻛﺎﻥ ﺣﺮﺍﻣﺎ ﺃﻭ ﻏﻴﺮﻣﺸﺮﻭﻉ ﻓﻲ ﺃﺻﻠﻪ ﻻﻳﺘﻐﻴﺮ ﺣﻜﻤﻪ ﺑﺘﻐﻴﺮ ﺍﻵﻟﺔ
আরব দেশের অনেক উলামায়ে কেরাম,এবং হিন্দুস্তানের অধিকাংশ বা সকল উলামায়ে কেরাম সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন যে,হাতে অঙ্কিত ছবি এবং ডিজিটাল ছবির মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই। বাস্তবতা হচ্ছে, হাতে অঙ্কিত ছবি এবং ডিজিটাল ছবির মধ্যে পার্থক্য করার ভিত্তি মজবুত নয়।শরয়ী সিদ্ধান্তকৃত মাস'আলা হল,যে জিনিষের মূল হারাম,সেই জিনিষের হুকুমে মাধ্যম বা উসিলা পরিবর্তনের কারণে কোনো প্রকার পরিবর্তন আসবে না।(তাকমিলাতু ফাতাহিল মুলহিম-৪/৯৭)
প্রামাণ্য গ্রন্থাবলীঃ
(১)বুখারী শরীফ : ২/৮৮০; হাঃ ৫৭২৯
(২)মুসলিম শরীফ- ২/২০০, হাঃ ৫৪৭১
(৩)ফাতাওয়ায়ে শামী- ২/৪১৬-১৭
(৪)তাকমিলায়ে ফাতহুল মুলহিম- ৪৯৭,৯৮
(৫)শরহে নববী আলা সহীহ মুসলিম : (২)১৯৯;
(৬)কিফায়াতুল মুফতী : ৯/২৪৩
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
শরয়ী জরুরত ব্যতীত ছবি হারাম।চায় হাতে অঙ্কিত ছবি হোক বা মুবাইল দ্বারা তোলা ছবি হোক।হ্যা বিশেষ জরুরতে একটা ছবি প্রুফাইল পিকছারের জন্য রাখা যেতে পারে।এ সম্পর্কে জানুন-
3635
(২)
পুরুস্কার যাই হোক,দ্বীনী অথবা মুবাহ বিষয়ক কোনো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ জায়েয হবে।তবে ছবিযুক্ত পুরুস্কার গ্রহণ করা যাবে না।যদি কেউ গ্রহণ করে নেয়,তাহলে তার উপর ওয়াজিব,এমন পরুস্কারকে ফিরিয়ে দেয়া বা ছবিকে তুলে ফেলা।কেননা ছবি ফিরিস্তাকে বাধা প্রদাণ করে।হ্যা ছবি যদি এত ছোট্ট হয় যে,তা জমিনে থাকলে দাড়ানো অবস্থায় দেখা যাবে না।তাহলে এমন ছবি ফিরিস্তাকে বাধা প্রদাণ করবে না।
(৩)
সাধারণত পিপিলিকাকে হত্যা করা হারাম ও নাজায়েয।
ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত
عن ابن عباس رضي الله عنهما قال: "نهى رسول الله صلى الله عليه سلم عن قتل أربع من الدواب النملة، والنحلة، والهدهد، والصرد"
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চার প্রকার প্রাণী হত্যা করতে বারণ করেছেনঃ পিঁপড়া, মধুমক্ষিকা, হুদহুদ পাখি এবং চড়ুই সদৃশ বাজ পাখি।(সুনানু আবি-দাউদ-৫২৬৭, সুনানু ইবনি মা'জা-৩২২৪)
তবে কষ্টদায়ক পিপড়া যা মানুষের শরীরে কামড় দেয় বা যা খাদ্যকে নষ্ট করে দেয়,সেই সব পিপড়াকে হত্যা করা জায়েয আছে।যেমন সাদা পিপড়া,বা লাল পিপড়া।হাদীসে পিপড়া হত্যাকে নিষেধ করা হয়েছে,সেগুলো মূলত সেসব পিপড়াকে কেন্দ্র করে বলা হয়েছে,যেগুলো মানুষকে কোনো প্রকার ক্ষতি পৌছায় না।সুতরাং ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো পিপড়াকে হত্যা করা যাবে না,যতক্ষণ না সেই পিপড়া কষ্টদায়ক প্রমাণিত হবে।এবং উক্ত পিপড়াকে হত্যা ব্যতিত সামনে বিকল্প কোনো রাস্তা থাকবে না।
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " نَزَلَ نَبِيٌّ مِنَ الأَنْبِيَاءِ تَحْتَ شَجَرَةٍ فَلَدَغَتْهُ نَمْلَةٌ فَأَمَرَ بِجَهَازِهِ فَأُخْرِجَ مِنْ تَحْتِهَا ثُمَّ أَمَرَ بِهَا فَأُحْرِقَتْ فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَيْهِ فَهَلاَّ نَمْلَةً وَاحِدَةً " .
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন এক নবী (আঃ) এক গাছের নিচে বসবাস করছিলেন। একটি পিঁপড়া তাঁকে কামড় দিলো। তিনি বিছানাপত্র সরানোর নির্দেশ দিলে তা তাঁর নিচ হতে সরানো হলো। তারপর তিনি আদেশ দিলে সব পিঁপড়া জ্বালিয়ে দেয়া হলো। আল্লাহ তাঁর নিকট ওয়াহী পাঠালেনঃ একটি মাত্র পিঁপড়া নয় কেন?
মোটকথাঃ
কষ্টকর প্রাণীকে হত্যা করা জায়েয।এর জন্য বিকল্প রাস্তা গ্রহণ করা যেতে পারে।বিশেষ করে এমন পরিবেশ তৈরী করাই শ্রেয়, যা পিপিলিকা জন্মের প্রতিবন্ধ হয়।এতেকরে প্রাণী হত্যার বিধিনিষেধ সম্ভলিত হাদীস সমূহের সাথে সাথে পরিবেশ রক্ষার হাদীস সমূহের উপরও আ'মল হয়ে যাবে।বিস্তারিত জানুন-
4712