আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
253 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (41 points)
edited by
(১) আযানের পর জবাব কিভাবে দিতে হয়?
(২) আযানের সময় দুরু শরীফ পড়তে হবে কি না? না আযানের শেষে পড়তে হবে।
(৩)আযানের সময় দু'আ কবুল হয়।এটা কোন সময়?
সাহল ইবনে সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃদুইটি মুহুর্তে আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। তখন দোয়াকারীদের দোয়া খুব কমই প্রত্যাখ্যাত হয়। (১) আযানের সময় এবং (২) যখন (মুজাহিদগণ) আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে কাতারবন্দী হয়।(আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ৬৬৬)

হযরত,
এই হাদিসে আযানের সময় বলতে কোন সময়টা বুঝানো হয়েছে। আমি তো জানি আযানের সময় আযানের জবাব দিতে হয়।এই সময় কী আযানের জবাব বাদ দিয়ে দুআ করা ঠিক হবে? না এখানে, আযানের সময় বলতে আমান ও ইকামতের মাঝে দুআ করতে হবে। এই বিষয়গুলো একটু পরিষ্কার করে দিবেন, ইনশাআল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (697,520 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
আযানের জবাব দেয়ার পদ্ধতি হল,
আযানের সময় আযানের জবাব দিতে হবে।যেমন নিম্নের হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত।
عن عمر بن الخطاب قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : " إذا قال المؤذن الله أكبر الله أكبر فقال أحدكم الله أكبر الله أكبر ثم قال أشهد أن لا إله إلا الله قال أشهد أن لا إله إلا الله ثم قال أشهد أن محمدا رسول الله قال أشهد أن محمدا رسول الله ثم قال حي على الصلاة قال لا حول ولا قوة إلا بالله ثم قال حي على الفلاح قال لا حول ولا قوة إلا بالله ثم قال الله أكبر الله أكبر قال الله أكبر الله أكبر ثم قال لا إله إلا الله قال لا إله إلا الله من قلبه دخل الجنة "
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি মুয়াজ্জিনের আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার-এর জওয়াবে আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার বলে এবং আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর জওয়াবে আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে এবং আশহাদু আন্না মুাহম্মাদার রাসূলুল্লাহ এর জওয়াবে আশহাদু আন্না মুাহম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলে। অতঃপর হাইয়্যা ‘আলাস্-সলাহ-এর জওয়াবে যদি লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলে। তারপর হাইয়্যা ‘আলাল-ফালাহ-এর জওয়াবে যদি লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলে। তারপর যদি আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার জওয়াবে আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর জওয়াবে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।(সহীহ মুসলিম-৩৮৫)



(২)
আযানের মুহূর্তে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর উপর দুরুদ পড়তে হবে না।বরং আযানের জবাব শেষ করার পরই দুরুদ পড়তে হবে।
আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর ইবনুল ’আস (রাঃ) হতে বর্ণিত।
"عن عبد الرحمن بن جبير، عن عبد الله بن عمرو بن العاص، أنه سمع النبي صلى الله عليه وسلم يقول: «إذا سمعتم المؤذن، فقولوا مثل ما يقول، ثم صلوا علي، فإنه من صلى علي صلاةً صلى الله عليه بها عشراً، ثم سلوا الله لي الوسيلة، فإنها منزلة في الجنة، لا تنبغي إلا لعبد من عباد الله، وأرجو أن أكون أنا هو، فمن سأل لي الوسيلة حلت له الشفاعة»".
 তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মুয়াযযিনের আযান শুনলে উত্তরে সে শব্দগুলোরই পুনরাবৃত্তি করবে। আযান শেষে আমার ওপর দরূদ পাঠ করবে। কারণ যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করবে (এর পরিবর্তে) আল্লাহ তার ওপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। এরপর আমার জন্য আল্লাহর কাছে ’ওয়াসীলা’ প্রার্থনা করবে। ’ওয়াসীলা’ হলো জান্নাতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান, যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে শুধু একজন পাবেন। আর আমার আশা এ বান্দা আমিই হব। তাই যে ব্যক্তি আমার জন্য ’ওয়াসীলা’র দু’আ করবে, কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন তার জন্য সুপারিশ করা আমার জন্য ওয়াজিব হয়ে পড়বে। (সহীহ মুসলিম ৩৮৪, আবূ দাঊদ ৫২৩, নাসায়ী ৬৭৮, তিরমিযী ৩৬১৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ১৬৯০, ইরওয়া ২৪২, সহীহ আল জামি‘ ৬১৩,মিশকাত-৬৫৭)

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (1/ 397):
"(بأن يقول) بلسانه (كمقالته) إن سمع المسنون منه، وهو ما كان عربياً لا لحن فيه، ولو تكرر أجاب الأول (إلا في الحيعلتين) فيحوقل (وفي الصلاة خير من النوم) فيقول: صدقت وبررت. ويندب القيام عند سماع الأذان بزازية، ولم يذكر  هل يستمر إلى فراغه أو يجلس، ولو لم يجبه حتى فرغ لم أره. وينبغي تداركه إن قصر الفصل، ويدعو عند فراغه بالوسيلة لرسول الله صلى الله عليه وسلم".
(قوله: ويدعو إلخ) أي بعد أن يصلي على النبي صلى الله عليه وسلم لما رواه مسلم وغيره: «إذا سمعتم المؤذن فقولوا مثل ما يقول ثم صلوا علي، فإنه من صلى علي صلاةً صلى الله عليه بها عشراً، ثم سلوا لي الوسيلة فإنها منزلة في الجنة لا تنبغي إلا لعبد مؤمن من عباد الله، وأرجو أن أكون أنا هو، فمن سأل الله لي الوسيلة حلت له الشفاعة»". وروى البخاري وغيره: «من قال حين يسمع النداء: اللّٰهم رب هذه الدعوة التامة والصلاة القائمة، آت محمداً الوسيلة والفضيلة، وابعثه مقاماً محموداً الذي وعدته، حلت له شفاعتي يوم القيامة». وزاد البيهقي في آخره: «إنك لا تخلف الميعاد». وتمامه في الإمداد والفتح. قال ابن حجر في شرح المنهاج: وزيادة "والدرجة الرفيعة"، وختمه بـ "يا أرحم الراحمين"، لا أصل لهما." اهـ فقط واللہ اعلم

(৩)



আপনি যে দু'আর কথা বলছেন,সেই দু'আ হল,আযান এবং ইকামতের মধ্যকার দু'আ। যেমন নিম্নের হাদীসে বলা হচ্ছে,আযান েববং ইকামতের মধ্যবর্তী দু'আ কে ফিরিয়ে দেয়া হয় না।

حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَعَبْدُ الرَّزَّاقِ، وَأَبُو أَحْمَدَ وَأَبُو نُعَيْمٍ قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ زَيْدٍ الْعَمِّيِّ، عَنْ أَبِي إِيَاسٍ، مُعَاوِيَةَ بْنِ قُرَّةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الدُّعَاءُ لاَ يُرَدُّ بَيْنَ الأَذَانِ وَالإِقَامَةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَاهُ أَبُو إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَ هَذَا .
. رواه الترمذي ( 212 ) وأبو داود ( 437 ) وأحمد ( 12174 ) – واللفظ له – وصححه الألباني في صحيح أبي داود 489 .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আযান ও ইকামাতের মধ্যবর্তী সময়ের দু'আ ফেরত দেয়া হয় না। —সহীহ, মিশকাত— (৬৭১), ইরওয়া— (২৪৪), সহীহ আবু দাউদ- (৫৩৪)।

আবু ঈসা বলেনঃ আনাসের হাদীসটি হাসান সহীহ। ইবনু ইসহাকও তার সনদ পরম্পরায় আনাস (রাঃ) হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...