আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
141 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (55 points)
edited by
শায়খ অনেক আগে একটা প্রশ্ন করেছিলাম তার বিবরণ টা নিচে দিলাম।কিন্তু আজ হঠাৎ করে মনে সন্দেহ শুরু হচ্ছে-

আমাকে আমার স্বামী একদিন বলছিল তোমাকে পরিত্যাগ করার কথা কখনো ভাবিনা তবে যদি তুমি বেদ্বীন হয়ে যাও,নামাজ না পড়ো, রোজা না রাখো,(দ্বীনের ব্যাপারে বিদ্বেষ বা অস্বীকার করো এবাক্যটা বলেছিলো কিনা সন্দেহ আছে),শরীয়তের কোনো বিধান লঙ্গন করো (এটাও মনে হয় বলছে) তাহলে তুমি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা সরাসরি তালাক শব্দ ব্যবহার করেনি এটা নিশ্চিত। আমার সব কথা মনে নেই।আর তালাকের ব্যাপারটা তো খুব সিরিয়াস।তাই আমার সব মনে না থাকায় আমি তাকে উক্ত ঘটনার পরের দিনই জিজ্ঞেস করি কিভাবে কি সেদিন বলছিলেন যতটুকু মনে আছে ততটুকুই বলেন।শর্ত জিনিস টা এমন করলেই বা মনের ভুলে করলেও পতিত হয়ে যায়।আর শরিয়তের সব বিধানতো মানতে পারিনা ভুলে লঙ্গন হতে পারে।ওজন বশত নামাজ পড়তে নাও পারি। আমি মনে করছি এগুলো তালাকের শর্ত হয়ে গেছে তাই তাকে প্রশ্ন করছি।তখন সে আমায় উত্তর দেয়-

"তুমি যদি দ্বীন থেকে দুরে সরে যাও বেদ্বীন হয়ে যাও তাহলে তোমার সাথে সম্পর্ক রাখবো না।এমনিতেই তো থাকবে না।সে বলে আমার প্রত্যেকটা কথার মূল কথা ছিলো দ্বীন থেকে বের হয়ে যাওয়ার।যেমনঃ যদি তুমি নামাজ পরিত্যাগ করো,পর্দা পরিত্যাগ করো,ইসলামের মৌলিক বিধান পরিত্যাগ করো, দ্বীনের ব্যাপারে যদি বিদ্বেষ করো।আর যদি আমি কিছু বলি তাহলে সাথে সাথে বলবা।পরে ডাউট দিবানা।আমার হুবহু মনে নাও থাকতে পারলে রেকর্ড  করে রাখবা।তখন আমি বলি আমার তো অনিচ্ছায় হয়ে যাতে পারে।তখন সে বলে নামাজ মিসটেক হতে পারে আমি তো নামাজ মিসটেক হওয়ার কথা বলিনি নামাজ অস্বীকারের কথা বলতিছি মানে যদি তুমি কোনোদিন বেদ্বীন হয়ে যাও দ্বীনকে তোমার কাছে অপছন্দনীয় লাগে।তুমি যদি অমুসলিম হয়ে যাও শিরকে পতিত হও।আমি যে কথাগুলো বলছি তার মুল কথা একটিই ছিলো তুমি যদি দ্বীন থেকে দূরে সরে যাও।কাফের মুশরিক হও।এখন আমি তখন কি বাক্য বা কি শব্দ ব্যবহার করছি তা আমার পক্ষে বলা সম্ভব না।সে আবার বলে আমি শেষবারের বলছি কান খুলে শুনে নাও তুমি যদি দ্বীন থেকে সরে যাও,কাফের মুশরিক মুরতাদ হও,তুমি দ্বীনে নাই এ রকম যদি কোনো কারন হয় তাহলে তোমাকে ত্যাগ করবো।সাধারনত কোনো কবীরা গুনাহর কারনে তোমাকে ত্যাগ করতে চাইনা।তখন জিজ্ঞেস করি আাপনার কি তখন এই নিয়তই ছিলো।আপনি তখন কি বলেছিলেন আপনার কি কিছু মনে নেই।সে উত্তর দেয় আমিতো এই কথাগুলোই বলেছিলাম যে তুমি যদি নামাজ পরিত্যাগ করো।একটা হলো নামাজ কাযা করা এটা বলি নাই বলছি যদি তুমি নামাজ পরিত্যাগ করো,পর্দা পরিত্যাগ করো,দ্বীন ইসলাম থেকে বের হয়ে যাও দ্বীন ইসলামকে অপছন্দ করো এ কথা গুলোই আমি বলছি হয়তো দু একটা কতা কম আর বেশি।মানে আমার যতগুলো কথা কথা ছিলো সবগুলো কথার মেইন কথা হলো যে কাজগুলো করলে মানুষ দ্বীন থেকে বের হয়ে যায় মুশরিক হয় মুরতাদ হয়।তুমি আবার আমায় জিজ্ঞেস করো কি নিয়ত ছিলো তখন?তখনতো এই নিয়ত ছিলো।প্রত্যেকটা কথা বলার উদ্দেশ্য ছিলো এটা যদি কেউ নামাজ পরিত্যাগ করে,পর্দা পরিপূর্ণ ভাবে পরিত্যাগ করে তাহলে সে কি হয় তুমিই বলো তার মাসয়ালা কি হয়?নামাজ যদি কেউ পরিত্যাগ করে পরিত্যাগ মানে বুঝো নামাজকে যদি কেউ অস্বীকার করে। তখন তাকে জিজ্ঞেস করি নামাজ না পড়া মানে কি যদি কেউ নামাজকে কেউ পরিপূর্ণ ভাবে পরিত্যাগ করে এরকম।তখন সে বলে নামাজ যদি কেউ পরিত্যাগ করে,রোজা যদি কেউ পরিত্যাগ করে,পর্দা যদি কেউ পরিপূর্ণ ভাবে পরিত্যাগ করে,দ্বীন ইসলামের কোনো মৌলিক বিধান যদি কেউ অস্বীকার করে পরিত্যাগ করে তাহলে সে কি হয় সে কি কাফের হয় না।?সে উপরের সব কথা গুলো ১ম দিন বলা সে সব শর্তের মূল কথা  হিসেবে বলেছেন কারণ তার হুবহুু কথাগুলো মনে নাই।
#এ ব্যাপারে আমি তাকে পরবর্তী দিনে  জিজ্ঞেস করি যে তালাকের নিয়ত ছিলো কিনা?? সে বলে  তালাকের নিয়ত নাকি তার ছিলোই না এবং শর্ত দানের উদ্দেশ্যেও বলেনি। সে নাকি জানতোই শর্ত দিয়েও তালাক দেয়া যায়।সে যে কথাগুলো বলছে(নামাজ না পরো,রোজা না রাখো,পর্দা পরিত্যাগ করো ইত্যাদি) সব কথার মূল কথা ছিলো কাফের মুশরিক মুরতাদ হয়ে যাওয়া।আমি তাকে জিজ্ঞেস করি যে তাহলে আপনি কি ভেবে আমার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন সেদিন(২য় দিন) সে উত্তর দেয় আমি মনে করছি কাফের মুশরিক ঐ কথাটা মনে হয় শর্ত হয়ে গেছে।আবার বলে মনে করছি ঐ কথাগুলো মনে হয় কাফের মুশরিক হওয়ার শর্ত হয়ে গেছে।তুমি অতিরিক্ত জিজ্ঞেস করার কারণে বলেছি এগুলো ছিল আমার কথার শর্ত(সে কোন কথাগুলোকে কোন কথার শর্ত হিসেবে বলছে সেটা স্পষ্ট করে বলেনি)।তার এ কথাগুলো শুনে ভয় পেয়ে যাই কারণ আমি সেদিনকার সব কথাগুলো শর্ত হয়ে গেছে এটা ভেবেই জিজ্ঞেস করি যে আপনি সেদিন কি কি বলেছিলেন আর সেও উত্তর দেয় ।আর একটা কথা আমি আসলে এখানে তাকে "বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা" এ কথাটার নিয়তের ব্যাপারে মনে হয়  স্পেসিফিকভাবে জিজ্ঞেস করি নি যে এ কথাটা সে তালাকের নিয়তে বলেছিলো কিনা??শুধু মনে ঐ দিনের ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে তালাক হয়ে যাবে এমন কোন নিয়ত ছিলো কি না সেটা জিজ্ঞেস করেছি।কিন্তু বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বলতে সে কি বুঝিয়েছে এটা কখনো জিজ্ঞেস করি নি।

#পরে একদিন আমার স্বামীকে আমি  জিজ্ঞেস করেছি আপনি সেদিন বলছিলেন এই কাজগুলো (প্রথমে আমি যেগুলো বলেছি যদি বেদ্বীন হয়ে যাও,,,.....)করলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা তখন সে বলে ওঠে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা এটাই তো স্বাভাবিক।শরীয়তের বিধান(কোন বিধান বুঝিয়েছে জানি না)অনুযায়ী সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।

পরবর্তীতে তাকে আবার জিজ্ঞেস করি ঐদিন ১ম দিন/তখন(কি বলেছি মনে নেই সঠিক) আপনার পক্ষ থেকে তালাক হয়ে যাবে এমন কোনো কথা বলেননি তো উত্তরে সে বলে না না এরকম কিছু বলিনি আমি আবার জিজ্ঞেস করি এরকম কোনো নিয়ত ছিলো নাতো সে উত্তর দেয় না ছিলো না। সে বলে তার নিয়ত ছিলো ইসলামী শর্ত পূরণ করলে/ইসলামী শর্তানুযায়ী(সন্দেহ হচ্ছে কোনটা বলছে তবে ১ম টা বলার সম্ভাবনা বেশি) সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হবো।(ইসলামী শর্ত বলতে কি বুঝিয়েছে জানি না এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞেস করিনি)।এখানেও মনে হয় বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা এটা উল্লেখ করে জিজ্ঞেস করা হয়নি।সে বিভিন্ন সময় আমাকে অনেকটা এভাবে বলেছে দেখ যদি ভাই বোনও কাফের মুশরিক হয়ে তাহলে কি তাদের সাথে সম্পর্ক থাকে??সে এটা বুঝাতে চেয়েছে কিনা আমি বুঝতে পারছি না।সে আমাকে কখনোই ছেড়ে দিতে চাননা।

১.শায়েখ এখানে আমার স্বামীর যত কথাবার্তা বলেছে সব ১ম দিনে আমার শোনা কথাগুলোর(যদি তুমি বেদ্বীন হয়ে যাও ইত্যাদি ইত্যাদি)ব্যাপারে জিজ্ঞেস করার আলোকে বলেছে। কারন আমি তাকে সে কি কি বলেছিলো হুবহু সেটা বলতে জিজ্ঞেস করি।এখন সমস্যা হলো ঐ যে প্রথমে উল্লেখ করেছি সে বলেছিলো যদি তুমি বেদ্বীন হয়ে যাও,নামাজ না পড়ো,রোজা না রাখো এই কথাগুলো হুবহু মনে করতে পারছিনা।তবে অনেক আগে ৮ মাস আগে যখন এটা নিয়ে আপনাদের কাছে জিজ্ঞেস করেছিলাম তখন যদি তুমি বেদ্বীন হয়ে যাও এটা নিয়ে কোনো সন্দেহই ছিলো না। এখন আজ হঠাৎ মনে হচ্ছে এগুলো ভালো ভাবে মনে পড়ছে না। সন্দেহ হচ্ছে তুমি বেদ্বীন হয়ে যাও,নামাজ না পড়ো, রোজা না রাখো বলেছে কিনা নকি অন্যকিছু বলছে। তবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা একথাটার ব্যাপারে সন্দেহ আসছে না। শুধু এটার আগে বলা কথাগুলো(যদি বেদ্বীন হয়ে যাও ইত্যাদি ইত্যাদি) নিয়ে সন্দেহ আসতেছে ।আর "শরীয়তের কোনো বিধান লঙ্ঘন করো তাহলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা" শুধু এ কথাটা মনের ভিতর আসতেছে।এখন এ সন্দেহের ব্যাপারে করনীয় কি??এখন কি করবো স্বামীকেও এ ব্যাপারে আগে অনেক পেরেশানি দিয়েছি।সে এসব ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতেও নিষেধ করছে।মে/জুন মাসে কসমও কাটাইছে যেন জিজ্ঞেস না করি।তাই এটা নিয়ে স্বামীকে জিজ্ঞেস করারও উপায় নেই তারও তো হুবহু তখন মনে ছিলো না যখন তাকে জিজ্ঞেস করি।

২.শায়খ তাকে জিজ্ঞেস (আপনার পক্ষ থেকে তালাক হয়ে যাবে এমন কোনো কথা বলেননি তো)করায় উত্তরে সে যে বলছে বলে না না এরকম কিছু বলিনি আমি আবার জিজ্ঞেস করি এরকম কোনো নিয়ত ছিলো নাতো সে উত্তর দেয় না ছিলো না। সে বলে তার নিয়ত ছিলো ইসলামী শর্ত পূরণ করলে/ইসলামী শর্তানুযায়ী(সন্দেহ হচ্ছে কোনটা বলছে তবে ১ম টা বলার সম্ভাবনা বেশি) সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হবো। তার এই নিয়তের (ইসলামী শর্ত পূরণ করলে/ইসলামী শর্তানুযায়ী(সন্দেহ হচ্ছে কোনটা বলছে তবে ১ম টা বলার সম্ভাবনা বেশি) সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হবো) কারনে কি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা এ কথার অর্থ তালাক ধরা হবে?

৩.১ম দিন বলা শর্তগুলোর কথাতো হুবহু এখন মনে নেই তাহলে কি শরীয়তে কোন বিধান লঙ্ঘন করলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা এ কথার আলোকে আর ঐ নিয়তের কারনে তালাক হবে??কারন শরীয়তে কোন বিধান লঙ্ঘন করলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা এটাই মনের মধ্যে আসতেছে শুধু।

৪.শায়খ তাকে জিজ্ঞেস (আপনার পক্ষ থেকে তালাক হয়ে যাবে এমন কোনো কথা বলেননি তো)করায় উত্তরে সে যে বলছে বলে না না এরকম কিছু বলিনি আমি আবার জিজ্ঞেস করি এরকম কোনো নিয়ত ছিলো নাতো সে উত্তর দেয় না ছিলো না। সে বলে তার নিয়ত ছিলো ইসলামী শর্ত পূরণ করলে/ইসলামী শর্তানুযায়ী(সন্দেহ হচ্ছে কোনটা বলছে তবে ১ম টা বলার সম্ভাবনা বেশি) সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হবো। তার এই নিয়তের (ইসলামী শর্ত পূরণ করলে/ইসলামী শর্তানুযায়ী(সন্দেহ হচ্ছে কোনটা বলছে তবে ১ম টা বলার সম্ভাবনা বেশি) সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হবো) কারনে কি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা এ কথার অর্থ তালাক ধরা হবে?যদি শুধু একথাটা বলে থাকে যদি শরীয়তের কোন বিধান লঙ্ঘন করো তাহলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা আর এ কথাটার নিয়ত যদি "ইসলামী শর্ত পূরণ করলে/ইসলামী শর্তানুযায়ী ছিন্ন করতে বাধ্য হবো" এটা হয়?

৫.৩য় কলামে এ কথাটা [ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা এটাই তো স্বাভাবিক।শরীয়তের বিধান(কোন বিধান বুঝিয়েছে জানি না)অনুযায়ী সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।] বলায় কি কোনো তালাক হবে?তালাকের নিয়ত ধরা হবে ১ম দিনের ঐ কথাটার (শরীয়ের কোন বিধান লঙ্ঘন করো তাহলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা)।

৬.শায়খ আমি ১ নং প্রশ্নে যে সন্দেহের বর্ননা দিয়েছি ও এখানে উপরে পূর্বের আরো যে সব বিবরন উল্লেখ করেছি তার সব কথার ভিত্তিতে কি কোনো শর্তযুক্ত তালাক হবে??

শায়খ সবটা একটু আবারও পড়ে উত্তর দিবেন

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


তালাক খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★★শরিয়তের পরিভাষায় প্রশ্নে উল্লেখিত জাতীয় শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ 

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.
احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ  
২য় প্রকার,কেনায়া বাক্য।
এর দ্বারা তালাক হবেনা,কিন্তু তালাকের নিয়ত অথবা অবস্থার ভিত্তিতে তালাক হবে। কেনায়া বাক্য দুই প্রকার। এর মধ্যে তিনটি শব্দ এমন আছে, যার দ্বারা  তালাকে রজয়ী পতিত হয়। 
সেগুলো হলোঃ- তুমি ইদ্দত পালন করো,তুমি তোমার গর্ভাশয় মুক্ত করো,তুমি এক।

আর কেনায়া তালাকের অন্যান্য শব্দ (যেক্ষেত্রে তালাকের নিয়ত করলে বায়েন তালাক হয়।)
যেমনঃ- তুমি বিচ্ছিন্ন, তুমি সম্পর্ক মুক্ত,তুমি ভিন্ন,তুমি হারাম,তুমি শুণ্য,তুমি মুক্ত,তোমার রশি তোমার কাঁধে,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হও,আমি তোমাকে তোমার পরিবারের জন্য হেবা-দান করলাম,আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম,আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি আযাদ,তুমি ঘোমটা পড়,তুমি ওড়না দ্বারা নিজেকে আবৃত করো,তুমি আড়াল হও (পর্দা করো), তুমি বিদূরিত হও, তুমি বের হয়ে যাও,তুমি চলে যাও,তুমি দন্ডায়মান হও (দাঁড়িয়ে যাও), তুমি অন্য স্বামী খুজো।
স্বামীর যদি এখানে নিয়ত না থাকে,তাহলে এ সব বাক্য দ্বারা তালাক হবেনা। তবে মুযাকারায়ে তালাকের ক্ষেত্রে হলে তালাক হবে।
(কুদুরী ৩৬৩.৩৬৪. হেদায়া শরহুল বিদায়াহ ১/২৪১,শরহে বিকায়াহ ২/৭৭)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
আপনার স্বামীর বলা সব কথা পর্যালোচনা করার পর আপনার উপরে উক্ত কথাগুলো(নামাজ না পরো, রোজা  না রাখো ইত্যাদি এবং পরের দিন প্রশ্ন করায় সে যে যে কথাগুলো বলছে ঐগুলোও)করলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা বলার কারনে তালাকের শর্ত হিসেবে আরোপ হবেনা।

কেননা আপনার স্বামীর এখানে তালাক প্রদানের কোনো নিয়ত ছিলোনা।

আপনার স্বামীর এখানে তালাক প্রদানের কোনো নিয়ত না থাকায় শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।

★আর যদি তিনি বলে থাকেনঃ-
"তুমি দ্বীন থেকে দুরে সরে যাও তাহলে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলবো"

এটি যেহেতু ভবিষ্যতের দিকে ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে,তাই এর দ্বারা তালাক হবেনা,শর্তযুক্ত তালাকও হবেনা।
শুধু তালাকের হুমকি দেয়াই উদ্দেশ্য হবে।
সুতরাং এতে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো সমস্যা হবেনা। 

আরো জানুনঃ- 

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।

(০৪)
প্রশ্নের বিবরণ মতে শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।

(০৫)
না,তালাক ধরা হবেনা।

(০৬)
সব কথার ভিত্তিতে কোনো শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...