আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
120 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (72 points)
আসসালামু আ'লাইকুম আগের ফাতওয়ার লিংক

https://ifatwa.info/61357/

কিছু উত্তরের আলোকে আবার প্রশ্ন

স্পষ্ট বাক্যে কখনো স্বামী স্ত্রীকে অধিকার দিয়েছে কিনা স্ত্রীর মনে নাই। আর স্বামী অধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে কি নিয়ত থাকতে হবে?

১।স্ত্রীর কি উচিত হবে স্বামীকে কে জিজ্ঞেস করা সে কখনো অধিকার দিয়েছে কিনা?কয়েকেদিন আগে স্ত্রী ভয়ে কান্নাকাটি করলে স্বামী বলে তুমি যেটা নিয়ে চিন্তা করছো ওটা তোমাকে দেয়া হয়নি(অধিকারের কথা বুঝিয়েছে)

২। ২নং প্রশ্নে হুজুর আগের ফাতওয়াতে অধিকার সংংক্রান্ত কোন প্রশ্ন ছিল না একটু বুঝে উত্তর দিবেন(সরাসরি বলা যাবে না ওয়াসওয়াসার কারণে)

 ৩।স্ত্রীর যতদূর মনে পড়ে স্বামী কখনো স্পষ্টবাক্যে * বলে নাই( ধারণা থেকে বলা)স্ত্রীর বিভিন্ন ঝগড়া বা কেনায়া বাক্য খুবই অল্প পরিমাণে মনে আছে বিভিন্ন মাসয়ালা পড়ার কারণে কিন্তু স্পষ্টরূপে কোন সময় কেমন বাক্য একে অপরকে বলেছিল মনে নাই সেক্ষেত্রে কি স্বামীকে জিজ্ঞেস করা উচিত হবে?

স্বামীকে জিজ্ঞেস করলে স্বামী যদি মিথ্যা /সত্য বলে সেক্ষেত্রে তাদের বৈবাহিক জীবনে অসুবিধা হবে?

৪।ধরবো না কি কেনায়া বাক্য বা অন্য কিছু?

৫।স্বামীকে কি জিজ্ঞেস করা উচিত হবে স্পষ্ট বাক্যে কখনো * দিয়েছে কিনা?

জিজ্ঞেস করার পর উত্তরের হেরফের হলে অসুবিধা হবে?বলবে দেয়নি যদি কখনো দিয়েও থাকে তাহলে কি মিথ্যা বলার কারণে অসুবিধা হবে?

৬।একদিন এসএমএসে স্বামী স্ত্রীকে বলেছিল "কাল সকালে গাড়ি ঠিক করছি তোমাকে তোমাদের বাড়িতে(গ্রামের কথা বলেছে) দিয়ে আসব।"স্ত্রী বলেছিল তাকে গ্রাম থেকে আনা হয়েছে নাকি যে গ্রামে দিয়ে আসবে বলছে
স্বামীর এমন কথায় অসুবিধা হবে?

 ৭। পুরনো মেসেজে কেনায়া বাক্য থাকতে পারে(প্রবল ধারণা আছে কেনায়া শব্দ বা বাক্য আছে) সন্দেহে পুরনো মেসেজ চেক করা উচিত হবে কি?

৮।স্বামী যদি স্ত্রীকে বলে আমাকে ভালো না লাগলে যাকে ভালো লাগে তাকে বিয়ে করো বা তোমার আব্বু আম্মুর পছন্দমত কাউকে বিয়ে করো এগুলো কেনায়া বাক্য নাকি * এর অধিকার? (স্বামী বলেছিল এমন ধারণা করা হচ্ছে)

৯।স্ত্রী প্রায়শ বলত স্বামীকে বিয়ে করে কি পেয়েছে, জীবন তছনছ, বাবার মার পছন্দসই কাউকে বিয়ে করা উচিত ছিল, এও বলত স্বামীকে তোমার মা বাবার পছন্দ মত তোমাকে কাউকে বিয়ে করা উচিত ছিল এখনো সময় আছে ভেবে দেখো।বাচ্চা হচ্ছে না তাই তোমার অন্য কাউকে বিয়ে করা উচিত,স্ত্রীর আপত্তি নেই,কাবিনের টাকা লাগবে না, কাবিনের টাকার ভয়ে কি কিছু করতে পারতেছো না? ইত্যাদি ইত্যাদি
আরো অনেক কথা এগুলোর মধ্যে কয়েকটি বরাবর লেখা হয়েছে কয়েকটা ধারণা থেকে লেখা এই কথাগুলোর দরূন কোন অসুবিধা হবে?( স্ত্রী অভিমান করে বলত সম্ভবত কারণ স্বামী সময় দিত না বা কোন দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন না করলে)

১০। স্ত্রী ফোন না ধরলে স্বামী বলত এবার ফোন না ধরলে আর কোনদিন ফোন দেয়ার দরকার নাই কিন্তু স্ত্রী ফোন ধরেছিল কিনা মনে নাই(স্বামী স্ত্রী একে অপরকে এইসব প্রায়ই বলত অভিমান করে) এরপরে আবার স্বাভাবিক হয়ে যেত

এতে তাদের বৈবাহিক জীবনে অসুবিধা হবে?

১১।স্ত্রী বাবার বাড়ি বেড়াতে যাবে কয়েকদিনের জন্য একথা স্বামীকে বলার সময় স্ত্রীর নিয়ত বা শর্ত আসলে অসুবিধা হবে?(স্ত্রীর অধিকার থাকলে)

১২। স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে স্বামী কাউকে কখনো * এর কিছু বলেছে কিনা একবার জিজ্ঞেস করার পরে বলে এইসব কথা কখনো কাউকে বলে নাই। এভাবে জিজ্ঞেস করা ঠিক হয়েছে?

* এর মাসয়ালা, কেনায়া এইসব জানার পর স্বামীকে বারবার জিগ্যেস করলে বলে কখনো নিয়ত করে কিছু বলে নাই

হুজুর প্রচন্ড রকম দুশ্চিন্তা আছে স্ত্রী,মাসয়ালা বা প্রশ্ন না পড়লে মনে হয় কিছু একটা মিস হচ্ছে তাই আবার পড়তে চলে আসে

এবং নতুন নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়

হুজুর একটু ভালোভাবে পড়ে উত্তর দিবেন

1 Answer

0 votes
by (684,920 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/59434/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।     

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মৌখিক ভাবে স্ত্রীকে কেনায়া বাক্যে তালাকের অধিকার দেওয়া বলতে বুঝায় হলোঃ-
যেমন স্বামী তালাকের নিয়তে স্ত্রীকে যদি বলে, তোমার বিষয় তোমার হাতে,বা তুমি তোমার জন্য যাহা চাও,গ্রহন করো,তুমি নিজেকে গ্রহন করো।

এইখানে স্বামীর স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দেওয়ার নিয়ত থাকতে হবে।

মৌখিক ভাবে স্ত্রীকে স্পস্ট বাক্যে তালাকের অধিকার দেওয়া বলতে বুঝায় হলোঃ-
যেমন স্বামী স্ত্রীকে যদি বলে,
তুমি তোমার নিজেকে তালাক দাও,তুমি নিজেকে তালাক দাও,যখন তুমি চাও,নিজেকে তালাক দাও।

এইখানে স্বামীর স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দেওয়ার নিয়ত থাকতে হবেনা।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
স্পষ্ট বাক্যে কখনো স্বামী স্ত্রীকে অধিকার দিয়েছে কিনা স্ত্রীর মনে নাই। 
এক্ষেত্রে স্বামীকে প্রশ্ন করতে হবে।
স্বামীরও যদি মনে না থাকে,আর কোনো সাক্ষীও যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পায়নি বলেই ধরা হবে।

★আর স্বামী অধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে অস্পষ্ট বাক্যে অধিকার দিলে নিয়ত থাকতে হবে।
স্পষ্ট বাক্যে অধিকার দিলে নিয়ত থাকতে হবেনা।

(০১)
প্রশ্নে বিবরণ মতে স্ত্রী স্বামীকে এই বিষয়ে আর কিছুই জিজ্ঞাসা করবেনা।

(০২)
জী।

(০৩)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীকে জিজ্ঞেস করা উচিত হবেনা।

স্বামীকে জিজ্ঞেস করলে স্বামী যদি মিথ্যা বলে,এভাবে বলে যে আমি তোমাকে তালাকের অধিকার দিয়ছি , তাহলে স্ত্রী তালাকের অধিকার পেয়ে যাবে।

আর সত্য বললে,যেটা বলবে,সেটাই হবে।
যদি অধিকার দেয়ার কথা বলে,তাহলে স্ত্রী অধিকার পাবে,আর যদি অধিকার দেয়নি,এমন কথা বলে,সেক্ষেত্রে স্ত্রী তালাকের অধিকার পাবেনা।

তবে এর দ্বারা তাদের বৈবাহিক জীবনে অসুবিধা হবেনা।

(০৪)
কিছুই ধরার দরকার নেই।

(০৫)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীকে জিজ্ঞেস করা উচিত হবেনা।

স্বামীকে জিজ্ঞেস করলে উত্তরে হেরফের হলে সমস্যা আছে।
বিস্তারিত ৩ নং প্রশ্নের জবাব দ্রষ্টব্য।

(০৬)
স্বামীর এমন কথায় অসুবিধা হবেনা।

(০৭)
প্রশ্নে উল্লেখিত ক্ষেত্রে এভাবে কেনায়া বাক্য চেক করা ঠিক হবেনা।

(০৮)
এগুলো কেনায়া বাক্য।
স্বামী তালাকের নিয়তে বললে তালাক হবে,নতুবা নয়।

এগুলোর দ্বারা স্ত্রী তালাকের অধিকার পাবেনা।

(০৯)
এই কথাগুলোর দরূন কোন অসুবিধা হবেনা।

(১০)
এতে তাদের বৈবাহিক জীবনে অসুবিধা হবেনা।

(১১)
একথা স্বামীকে বলার সময় স্ত্রীর নিয়ত বা শর্ত আসলে অসুবিধা হবেনা।

(১২)
একবার জিজ্ঞাসা ঠিক আছে,তবে বারবার জিজ্ঞাসা করা ঠিক নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...