ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
শরীয়তে এরকম রোযার কোনো ভিত্তি নেই।
এগুলো সবই বানোয়াট, ভিত্তিহীন।
জানা মতে উক্ত রোযা অন্য কোন ধর্মেরও রীতি নয়।
এগুলো পুরোপুরি বানোয়াট।
(০২)
আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন যে, যখন তোমার নিকট তোমার স্ত্রী বাসর রাতে আসবে তখন তুমি তাকে নিয়ে দুরাকআত নামায পড় এবং নামাযের পর এই দুআ পড়ঃ
اللهم بارك لى فى أهلي وبارك لهم فى اللهم اجمع بيننا ما جمعت بخير وفرق بيننا إذا فرقت الى الخير
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমার জন্যে আমার স্ত্রী ও ভবিষ্যত প্রজন্ম বরকতময় কর এবং আমাকে আমার স্ত্রীর জন্যে বরকতময় করে দাও। হে আল্লাহ যতক্ষণ আমরা উভয়েই একত্রে থাকি ভালভাবেই যেন থাকি আর যদি আমাদের মাঝে কল্যাণ না থাকে তবে আমাদেরকে বিচ্ছেদ করে দিও। (ইমাম তাবরানী এই হাদীস বর্ণনা করেছেন)
নামাজের ক্ষেত্রে স্ত্রী দাঁড়াবে স্বামীর পশ্চাতে।
মুসলিম দম্পতির নবজীবনের শুভারম্ভ হবে আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যের মাধ্যমে।
নামাজ শেষ হলে অতঃপর স্বামী দুআ করবে,
اَللّهُمَّ بَارِكْ لِيْ فِيْ أَهْلِيْ وَبَارِكْ لَهُمْ فِيَّ، اَللّهُمَّ اجْمَعْ بَيْنَنَا مَاجَمَعْتَ بِخَيْرٍ،
وَفَرِّقْ بَيْنَناَ إِذَا فَرَّقْتَ إِلى خَيْرٍ.
উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা বা-রিকলী ফী আহ্লী, অবা-রিক লাহুম ফিইয়্যা, আল্লা-হুম্মাজমা’ বাইনানা মা জামা’তা বিখাইর, অফার্রিকব বাইনানা ইযা ফাররাকব্তা ইলা খাইর।
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমাকে আমার পরিবারে বরকত ও প্রাচুর্য দান কর এবং ওদের জন্যও আমার মাঝে বর্কত ও মঙ্গল দান কর। হে আল্লাহ! যতদিন আমাদেরকে একত্রিত রাখবে ততদিন মঙ্গলের উপর আমাদেরকে অবিছিন্ন রেখো এবং বিছিন্ন করলে মঙ্গলের জন্যই আমাদেরকে বিছিন্ন করো।
(ইবনে আবী শাইবাহ, মুসান্নাফ, আব্দুর রাযাযাক, মুসান্নাফ, তাবঃ, প্রভৃতি ,আদাবুয যিফাফ ৯৪-৯৬পৃঃ)
আরো জানুনঃ-
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
বাসর ঘরে বউয়ের আঁচলে নামায পড়ার কোনো রীতি ইসলামে নেই।
তবে স্বামী স্ত্রী জামায়াত করে দুই রাকাত নামাজ পড়তে পারবে।
(০৩)
এটি সহীহ নয়।
(০৪)
এমনিতে নফল নামাযের নিয়ত করলে হবে।
ওয়াক্তের নাম বলতে হবেনা।
(০৫)
রমাদানের রোযার ক্ষেত্রেও এভাবে কিছু না খেয়ে রোজা পূর্ণ করা যাবে।
তবে সাহরী খাওয়া যেহেতু সুন্নাত,সেই সুন্নাত আদায় হবেনা।
(০৬)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، بْنِ سَعْدٍ عَنِ ابْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْكُلُ بِثَلاَثِ أَصَابِعَ وَيَلْعَقُ يَدَهُ قَبْلَ أَنْ يَمْسَحَهَا .
ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ..... কা'ব ইবনু মালিক (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন আঙ্গুলে খাবার খেতেন এবং হাত মুছার আগে তা চেটে খেতেন। (সহীহ মুসলিম ৫১৯২.ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫১২৫, ইসলামিক সেন্টার ৫১৩৬,সহীহুল জামি‘ ৪৮৮২, আবূ দাঊদ ৩৮৪৮, ইরওয়াউল গালীল ১৯৬৯, আবূ দাঊদ ৩৮৪৮, সহীহুল জামি‘ ৪৮৮২, মুসনাদে আহমাদ ২৭২১৩।)
উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যাঃ
(كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْكُلُ بِثَلَاثَةِ أَصَابِعَ)
‘‘রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন আঙ্গুল দ্বারা খেতেন’’ অর্থাৎ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খাবার খেতে বৃদ্ধা, তর্জনী ও মধ্যমা- এ তিনটি আঙ্গুল ব্যবহার করতেন।
‘আল্লামা নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ তিন আঙ্গুল দ্বারা খাবার খাওয়া সুন্নাত। প্রয়োজন ব্যতীত তিন আঙ্গুলের অধিক ব্যবহার করবে না।
(সুতরাং প্রয়োজনে তিন আঙ্গুলের বেশি ব্যবহার করলেও সুন্নাতের খেলাফ হবেনা। সুতরাং ভাত খেতে গিয়ে যেহেতু তিন আঙ্গুলে খাওয়া কষ্টকর,তাই এক্ষেত্রে তিন আঙ্গুলের বেশি ব্যবহার করলে এটি জরুরত ধরা হবে। তাই এক্ষেত্রে তিন আঙ্গুলের বেশি ব্যবহার করলে সুন্নাতের খেলাফ হবেনা। )
(وَيَلْعَقُ يَدَهٗ قَبْلَ أَنْ يَمْسَحَهَا)
‘‘(খাওয়ার পর) তিনি তাঁর হাত রুমাল দ্বারা মুছে ফেলার আগে চেটে নিতেন।’’ ‘আল্লামা নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ খাবার গ্রহণের একটি সুন্নাত হলো খাওয়ার পর হাত মুছে ফেলার আগে তা চেটে খাওয়া। আর তা খাদ্যের বারাকাত অর্জন এবং হাত পরিষ্কার করার লক্ষ্যে।
(মিরক্বাতুল মাফাতীহ; শারহুন নাবাবী ১৩শ খন্ড, হাঃ ২০৩১)