আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
237 views
in সাওম (Fasting) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ্।
উস্তাদ!

গ্রাম অঞ্চলে এরকম একটা রোজার প্রচলন আছে, সেটা হচ্ছে -কোনো একটা উদ্দেশ্য কে কেন্দ্র করে (নিয়ত করে) মাঝরাতে উঠে নাকি সেই রোজার সাহরি খেতে হয়।এবং এমন কারো ঘরে ইফতার করতে হয়,যার ঘরে উক্ত ব্যক্তি কোনোদিন কখনোই কিছু খাইনি বা পান করেনি,এবং যার ঘরে ইফতার করবে সেই ব্যক্তির ঘরে নাকি রাতের খাবারও খেতে হবে।আর সেই রাতে যে রোজা রেখেছে,সে নিজের ঘরে কোনো কিছু খেতে পারবে না।

উস্তাদ,আমার স্বল্প জ্ঞান বলে এরকম কোনো রোজা আসলেই নেই।

আমার প্রশ্ন, আসলেই কি এরকম কোনো রোজা আছে?না থাকলে এটা কোন ধর্মের রীতি অনুসরণ করে মুসলিম রা?

২)বাসর ঘরে বউয়ের আঁচলে নামায পড়ার কোনো রীতি কি ইসলামে আছে?
৩)প্রতি বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার নিয়ম করে ৪১ দিন রোজা রাখলে নাকি কবরের আজাব মাফ করা হয়, এটা কতটুকু সত্যি?
৪)প্রতি ওয়াক্তের নফল নামাযের (যোহর,মাগরিব, এশা)নিয়ত করার সময় কি ওই ওয়াক্তের নাম ধরা আবশ্যক? এমনিতে নফল নামাযের নিয়ত করলে হবে না?

৫)কোনো রোজার নিয়ত করে দুর্ভাগ্য বশত কেউ সাহরি খেতে না পারলেও সকাল পর্যন্ত কোনো কিছু না খেয়ে থাকলে উক্ত রোজা পূর্ণ করা যায়, যেহেতু সাহরি খাওয়া ফরয না।কিন্তু রমাদানের রোজার ক্ষেত্রে যদি কেউ এমন সময় জেগে উঠলো যে খুব অল্প সময় বাকি আছে সুবহে সাদিক হওয়ার। এটুকু সময়ে তো ভাত খাওয়া সম্ভব না।এক্ষেত্রেও কি কিছু না খেয়ে রোজা পূর্ণ করা যাবে না?

৬)তিন অঙ্গুলে খাবার খাওয়া সুন্নত।তবে রুটি,গোস্ত,খেজুর ইত্যাদির ক্ষেত্রে। কিন্তু এই হাদিসের ওপর আমল করতে গিয়ে অনেকে ভাত ও তিন আঙ্গুুলে খেয়ে থাকে।যার কারণে ভাত খেতে কষ্ট হয় এবং সময়ও অনেক বেশি লাগে।এই সম্পর্কিত হাদিস টা একটু বুঝিয়ে দিন,উস্তাদ।

জাঝাকাল্লাহ খাইরান

1 Answer

0 votes
by (566,460 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 

(০১)
শরীয়তে এরকম রোযার কোনো ভিত্তি নেই।
এগুলো সবই বানোয়াট, ভিত্তিহীন।

জানা মতে উক্ত রোযা অন্য কোন ধর্মেরও রীতি নয়। 
এগুলো পুরোপুরি বানোয়াট।

(০২)
আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন যে, যখন তোমার নিকট তোমার স্ত্রী বাসর রাতে আসবে তখন তুমি তাকে নিয়ে দুরাকআত নামায পড় এবং নামাযের পর এই দুআ পড়ঃ

اللهم بارك لى فى أهلي وبارك لهم فى اللهم اجمع بيننا ما جمعت بخير وفرق بيننا إذا فرقت الى الخير

 অর্থঃ হে আল্লাহ! আমার জন্যে আমার স্ত্রী ও ভবিষ্যত প্রজন্ম বরকতময় কর এবং আমাকে আমার স্ত্রীর জন্যে বরকতময় করে দাও। হে আল্লাহ যতক্ষণ আমরা উভয়েই একত্রে থাকি ভালভাবেই যেন থাকি আর যদি আমাদের মাঝে কল্যাণ না থাকে তবে আমাদেরকে বিচ্ছেদ করে দিও। (ইমাম তাবরানী এই হাদীস বর্ণনা করেছেন)

নামাজের ক্ষেত্রে স্ত্রী দাঁড়াবে  স্বামীর পশ্চাতে। 
মুসলিম দম্পতির নবজীবনের শুভারম্ভ হবে আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যের মাধ্যমে।  

নামাজ শেষ হলে  অতঃপর  স্বামী দুআ করবে,

اَللّهُمَّ بَارِكْ لِيْ فِيْ أَهْلِيْ وَبَارِكْ لَهُمْ فِيَّ، اَللّهُمَّ اجْمَعْ بَيْنَنَا مَاجَمَعْتَ بِخَيْرٍ،
وَفَرِّقْ بَيْنَناَ إِذَا فَرَّقْتَ إِلى خَيْرٍ.

উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা বা-রিকলী ফী আহ্লী, অবা-রিক লাহুম ফিইয়্যা, আল্লা-হুম্মাজমা’ বাইনানা মা জামা’তা বিখাইর, অফার্রিকব বাইনানা ইযা ফাররাকব্তা ইলা খাইর।

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমাকে আমার পরিবারে বরকত ও প্রাচুর্য দান কর এবং ওদের জন্যও আমার মাঝে বর্কত ও মঙ্গল দান কর। হে আল্লাহ! যতদিন আমাদেরকে একত্রিত রাখবে ততদিন মঙ্গলের উপর আমাদেরকে অবিছিন্ন রেখো এবং বিছিন্ন করলে মঙ্গলের জন্যই আমাদেরকে বিছিন্ন করো।
(ইবনে আবী শাইবাহ, মুসান্নাফ, আব্দুর রাযাযাক, মুসান্নাফ, তাবঃ, প্রভৃতি ,আদাবুয যিফাফ ৯৪-৯৬পৃঃ)

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
বাসর ঘরে বউয়ের আঁচলে নামায পড়ার কোনো রীতি ইসলামে নেই।
তবে স্বামী স্ত্রী জামায়াত করে দুই রাকাত নামাজ পড়তে পারবে।

(০৩)
এটি সহীহ নয়।

(০৪)
এমনিতে নফল নামাযের নিয়ত করলে হবে।
ওয়াক্তের নাম বলতে হবেনা।

(০৫)
রমাদানের রোযার ক্ষেত্রেও এভাবে কিছু না খেয়ে রোজা পূর্ণ করা যাবে। 

তবে সাহরী খাওয়া যেহেতু সুন্নাত,সেই সুন্নাত আদায় হবেনা।

(০৬)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، بْنِ سَعْدٍ عَنِ ابْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْكُلُ بِثَلاَثِ أَصَابِعَ وَيَلْعَقُ يَدَهُ قَبْلَ أَنْ يَمْسَحَهَا .
ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ..... কা'ব ইবনু মালিক (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন আঙ্গুলে খাবার খেতেন এবং হাত মুছার আগে তা চেটে খেতেন। (সহীহ মুসলিম ৫১৯২.ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫১২৫, ইসলামিক  সেন্টার ৫১৩৬,সহীহুল জামি‘ ৪৮৮২, আবূ দাঊদ ৩৮৪৮, ইরওয়াউল গালীল ১৯৬৯, আবূ দাঊদ ৩৮৪৮, সহীহুল জামি‘ ৪৮৮২, মুসনাদে আহমাদ ২৭২১৩।)

উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যাঃ

 (كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْكُلُ بِثَلَاثَةِ أَصَابِعَ)

‘‘রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন আঙ্গুল দ্বারা খেতেন’’ অর্থাৎ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খাবার খেতে বৃদ্ধা, তর্জনী ও মধ্যমা- এ তিনটি আঙ্গুল ব্যবহার করতেন।

‘আল্লামা নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ তিন আঙ্গুল দ্বারা খাবার খাওয়া সুন্নাত। প্রয়োজন ব্যতীত তিন আঙ্গুলের অধিক ব্যবহার করবে না।

(সুতরাং প্রয়োজনে তিন আঙ্গুলের বেশি ব্যবহার করলেও সুন্নাতের খেলাফ হবেনা। সুতরাং ভাত খেতে গিয়ে যেহেতু তিন আঙ্গুলে খাওয়া কষ্টকর,তাই এক্ষেত্রে তিন আঙ্গুলের বেশি ব্যবহার করলে এটি জরুরত ধরা হবে। তাই এক্ষেত্রে তিন আঙ্গুলের বেশি ব্যবহার করলে সুন্নাতের খেলাফ হবেনা। )

(وَيَلْعَقُ يَدَهٗ قَبْلَ أَنْ يَمْسَحَهَا) 

‘‘(খাওয়ার পর) তিনি তাঁর হাত রুমাল দ্বারা মুছে ফেলার আগে চেটে নিতেন।’’ ‘আল্লামা নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ খাবার গ্রহণের একটি সুন্নাত হলো খাওয়ার পর হাত মুছে ফেলার আগে তা চেটে খাওয়া। আর তা খাদ্যের বারাকাত অর্জন এবং হাত পরিষ্কার করার লক্ষ্যে।
(মিরক্বাতুল মাফাতীহ; শারহুন নাবাবী ১৩শ খন্ড, হাঃ ২০৩১)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 213 views
...