জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীস শরীফে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেহমানদারীর প্রতি তাকিদ করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَاليَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ.
আল্লাহ ও পরকালের প্রতি যে ঈমান রাখে সে যেন মেহমানের সমাদর করে।
(সহীহ বুখারী, হাদীস ৬১৩৬)
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
لَا خَيْرَ فِيمَنْ لَا يُضِيفُ
যে মেহমানদারি করে না তার মাঝে কোনো কল্যাণ নেই।
(মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭৪১৯)
আরেক হাদীসে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা.-কে লক্ষ করে বলেন, ...নিশ্চয়ই তোমার উপর তোমার মেহমানের হক রয়েছে।
(সহীহ বুখারী, হাদীস ৬১৩৪)
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে কোনো মেহমান আসলে তিনি আগে নিজে তার মেহমানদারির চেষ্টা করতেন অন্যথায় সাহাবীদের তার মেহমানদারির জন্য উৎসাহিত করতেন। হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, একবার নবীজীর কাছে এক মেহমান এল। নবীজী তাঁর স্ত্রীগণের ঘরে খোঁজ নিলেন- মেহমানদারির মত কিছু আছে কি না। কিন্তু জবাব এল- ঘরে পানি ছাড়া আর কোনো খাবার নেই। তখন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণের উদ্দেশে বললেন, তোমাদের মধ্যে কে আছ তার মেহমানদারি করতে পারো? এক আনসারী সাহাবী বললেন, আমি আছি ইয়া রাসূলাল্লাহ! তখন তিনি মেহমানকে নিজের বাসায় নিয়ে গেলেন। স্ত্রীকে বললেন, নবীজীর মেহমানের কদর কর। স্ত্রী বললেন, আমাদের কাছে বাচ্চাদের খাওয়ার পরিমাণ খাবার ছাড়া আর কিছুই নেই। সাহাবী বললেন, খাবার প্রস্তুত কর এবং বাচ্চাদের ঘুম পাড়িয়ে দাও। আর আমরা খাবার শুরু করার সময় তুমি বাতি ঠিক করার বাহানা করে বাতি নিভিয়ে দিবে। স্ত্রী তাই করলেন। খাবারের সময় অন্ধকারে তারা এমন ভাব করলেন যেন মেহমানের সাথে তারাও খাচ্ছেন। মেহমান তৃপ্তিভরে খেলেন আর তারা উপোস রাত কাটিয়ে দিলেন। তাদের এ কাজে আল্লাহ খুশি হলেন। সকালে যখন সাহাবী নবীজীর কাছে আসলেন, তিনি বললেন, গত রাতে আল্লাহ তোমাদের প্রতি হেসেছেন এবং তোমাদের উক্ত কাজে খুব খুশি হয়েছেন। আয়াত নাযীল হল-
وَيُؤْثِرُونَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ ...
এবং তারা অন্যদেরকে নিজেদের উপর অগ্রাধিকার দেয় নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও। যাদেরকে অন্তরের কার্পণ্য থেকে মুক্ত রাখা হয়েছে তারাই সফলকাম। [সূরা হাশর (৫৯) : ৯]
(সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৭৯৮)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
তাদের এহেন আচরণের কারনে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে মনে কষ্ট আসাতে গুনাহ হবেনা।
(০২)
এতে আল্লাহ তায়ালা নারাজ হবেননা।
তবে আপনারা মুখ ফুটিয়ে আপনাদের মনোভাব তাদের সামনে প্রকাশ করবেননা।
(০৩)
তাদের এহেন আচরণের কারনে মনে কষ্ট আসলেও আপনারা মুখ ফুটিয়ে আপনাদের মনোভাব তাদের সামনে প্রকাশ করবেননা।
যতটা সম্ভব হয়,তাদেরকে মেনে নেয়ার চেষ্টা করবেন।
তারা যেনো কষ্ট না পায়,সেটির জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন।