আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
216 views
in সালাত(Prayer) by (32 points)
১। আমার বাবা করনা পজিটিভ, আম্মুর শরির খারাপ। আমরা এখনও কোন লক্ষ্মণ দেখা দেয় নি। আমি কি চাইকে মসজিদে জামাত আদায় করতে পারব? আমার জামাত ছাড়া নামাজের খুশুতে সমস্যা হয়। জামাতে নামাজ আদায় করলে কি আমার দারা মানুষের ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা থাকার জন্য গুনাহ হবে?

২। যদি ইকামত হয়ে যায় আর আমি নফল নামাজের মধ্যে থাকি, আমার তাশাহুদ পড়া প্রায় শেষ যখন তখন ইকামত শুরু হল। আমি কি চাইলে দুরুদ আর দুয়ায় মাসুরা পড়ে তারপর নামাজ শেষ করতে পারব? ( ইন শা আল্লাহ, আমি তাকবির তাহরিমা পাব )
৩। যদি জামাতে নামাজ শুরু হয়ে যায় তাহলে কি আমার সুন্নাত বা নফল নামাজ সংক্ষিপ্ত করে পড়া জরুরি ( যদি ইকামতের আগে থেকেই আমি নামাজে থাকি)?  সংক্ষিপ্ত বলতে কি বুঝায়? আমার সিজদা ও তাকবির কি একটা পড়া লাগবে? তাশাহুদ পড়ে দুরুদ না পড়েই সালাম ফিরাব? যদি সাভাবিক ভাবে নামাজ আদায় করি তাহলে কি গুনাহ হবে?

৪। মসজিদের জামাত বাদে, বাসায় অন্তত কয়জন নিয়ে পড়লে জামাতের ওয়াজিব আদায় হবে?
৫। যদি কেও নামাজে 'আইন, 'হা।।ইত্যাদি বর্ণের উচ্চারন গুলো একেবারে মাখরাজে লাগিয়ে না করে,কিন্তু একটু চাপ দিয়ে করে যাতে নরমাল হা,আলিফ থেকে আলাদা করা যায়,সেটা কি নামাজের সমস্যা করবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
আপনার এখনও যদি কোন লক্ষ্মণ দেখা না দেয়,তাহলে আপনি মসজিদে এসে জামাআতের নামাজ আদায় করবেন।
এতে কোনো গুনাহ নেই,বরং মসজিদে নামাজ পড়াই জরুরি। 
,
ইসলামে জামাআতের সহিত নামাহ পড়ার অনেক অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন-

لَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا يَتَخَلَّفُ عَنِ الصَّلَاةِ إِلَّا مُنَافِقٌ قَدْ عُلِمَ نِفَاقُهُ، أَوْ مَرِيضٌ، إِنْ كَانَ الْمَرِيضُ لَيَمْشِي بَيْنَ رَجُلَيْنِ حَتَّى يَأْتِيَ الصَّلَاةِ.

আমাদের অবস্থা এমন ছিল যে, নামায (-এর জামাত) থেকে পিছিয়ে থাকত কেবল এমন মুনাফিক, যার নিফাক স্পষ্ট ছিল অথবা অসুস্থ ব্যক্তি। তবে আমরা অসুস্থদেরকেও দেখতাম, দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর করে তারা নামাযের জন্য চলে আসত। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৮৫

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

صَلاَةُ الجَمَاعَةِ تَفْضُلُ صَلاَةَ الفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً.

অর্থাৎ একাকী নামায পড়া অপেক্ষা জামাতে নামায আদায় করা সাতাশ গুণ বেশি ফযীলতপূর্ণ। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৭৫

আরো জানুনঃ
,
(০২)
যদিও এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান  হলো তাশাহুদ পড়ার পরেই নামাজ শেষ  করে দিয়ে জামাআতে শরিক হতে হবে।
তবে প্রশ্নে উল্লেখিত  ছুরতে আপনি চাইলে দুরুদ আর দুয়ায় মাসুরা পড়ে তারপর নামাজ শেষ করতে পারবেন,এটিও জায়েজ আছে  
,
(০৩)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، ح وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ وَرْقَاءَ، ح وَحَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، ح وَحَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُتَوَكِّلِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّا بْنُ إِسْحَاقَ، كُلُّهُمْ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ فَلَا صَلَاةَ إِلَا الْمَكْتُوبَةُ". - صحيح 
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সলাতের ইক্বামাত দেয়া হলে উক্ত ফারয সলাত ছাড়া অন্য কোন সলাত আদায় করা যাবে না।

মুসলিম (অধ্যায় : মুসাফিরের সলাত ও ক্বাসর করা, অনুঃ মুযাজ্জিন যখন ইক্বামাত বলেন তখন কোন নফল সলাতের নিয়্যাত করা মাকরূহ), তিরমিযী (অধ্যায় : সলাত, অনুঃ ইক্বামাত হয়ে গেলে ফারয সলাত ব্যাতীত কোন সলাত নেই, হাঃ ৪২১), নাসায়ী (অধ্যায় : ইমামাত, অনুঃ ইক্বামাতের পর ফারয সলাত ব্যতীত অন্য সলাত আদায় মাকরূহ, হাঃ ৮৬৪), দারিমী (হাঃ ১৪৪৮), ইবনু মাজাহ (অধ্যায় : সলাত ক্বায়িম, অনুঃ ইক্বামাত হয়ে গেলে ফারয সলাত ব্যাতীত কোন সলাত নেই, হাঃ ১১৫১),আবু দাউদ ১২৬৬, আহমাদ (২/৩৩১), ইবনু খুযাইমাহ (হাঃ ১১২৩) 
,
সুতরাং আপনাকে নফল নামাজ সংক্ষিপ্ত করতে হবে,যদি চার রাকাত পড়ার নিয়ত করে থাকেন,আর এখন দুই রাকাতে অবস্থান করেন,তাহলে আর নামাজ বাড়াবেননা।
এই ২য় রাকাতেই সালাম ফিরিয়ে দিবেন।
যদি ৩য় রাকাতে বা শেষ  রাকাতে হোন,তাহলে পুরো নামাজ আদায় করবেন।
বৈঠকে শুধুমাত্র তাশাহুদ পড়িবেন। 
قال الحصکفی : (والشارع فی نفل لا یقطع مطلقا) ویتمہ رکعتین (وکذا سنة الظہر) ( الدر المختار مع رد المحتار : ۵۳/۲، باب ادراک الفریضة ، ط: دار الفکر، بیروت ) 
যার সারমর্ম হলো এমতাবস্থায় নফলরত ব্যাক্তি নামাজ ছেড়ে দিবেনা,বরংং কম আয কম দুই রাকাত পূর্ণ করিবে।
,
★যদি স্বাভাবিক ভাবে নামাজ আদায় করেন,আর জামাআত শেষ হয়ে যায়, তাহলে গুনাহ হবে।
,
(০৪)
ইমাম ব্যাতিত একজন হলেই জামাত হয়ে যাবে।
তবে মসজিদে জামাতের ছওয়াব অনেক বেশি।
,
(০৫)
শরীয়তের বিধান হলো যদি লাহনে জলি (অর্থ পরিবর্তন) হয়, এমন ভুল পড়ার দ্বারা নামাজ নষ্ট হয়ে যায়।
লাহনে জলি সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ

,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি নরমাল হা,আলিফ থেকে আলাদা করা যায়,আর সে ভালোভাবেই তা আদায়ের  চেষ্টা করে,তাহলে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 139 views
...