بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/55375/?show=55375#q55375 নং ফাতওয়াতে
উল্লেখ রয়েছে যে, নবী সা.
সারা জীবন জামাআতের পাবন্দী করেছেন। তদ্রূপ সাহাবা কিরামের যামানা থেকে বর্তমান যুগ
পর্যন্ত উম্মত জামাআতের পাবন্দী করে এসেছে। সাহাবা কিরামের যুগে জামাআতের এতো গুরুত্ব
ছিলো যে, মাযূর (একান্ত অপারগ) ও প্রকাশ্য
মুনাফিক ছাড়া কেউ জামাআত ত্যাগ করতেন না। জামাআত ত্যাগে অভ্যস্ত ব্যক্তি ফাসিক এবং
ইসলামী বিচার ব্যবস্থায় তার সাক্ষী গ্রহণযোগ্য নয়। হাদীস শরীফে নামাযের বহু ফযীলত বর্ণিত
হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম
বলেন,
صَلَاةُ الْجَمَاعَةِ أَفْضَلُ مِنْ صَلَاةِ
الْفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً۔
জামাআতের নামায একা নামাযের চেয়ে সাতাশ গুণ উত্তম। (সহীহ্
মুসলিম, ৬৫০)
জামাআতে নামায পড়ার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে আবদুল্লাহ ইবন
মাসউদ রা. বলেন, আমাদের
যুগে গুরুতর অসুস্থ অথবা একমাত্র প্রকাশ্য মুনাফিক ছাড়া কেউ জামাআত ত্যাগ করতো না।
আর যদি অসুস্থ ব্যক্তি দুই ব্যক্তির কাঁধে
ভর দিয়ে হাঁটতে সক্ষম হলে সেও জামাআতে এসে শরীক হতো। এবং বলেন, রাসূল সা. আমাদেরকে হেদায়াতের সুন্নাতগুলি
শিক্ষা দিয়েছেন । আর আযান হয় এমন মসজিদে নামায পড়া (অর্থাৎ, জামাআতে নামায পড়া) হেদায়াতের সুন্নাতগুলির
অন্তর্ভুক্ত। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ্ শর্হে মিশকাতুল
মাসাবীহ্, ১০৭২)
জামাআত কাদের উপর ওয়াজিব?
যদি শরী’আত সম্মত কোন ওযর না থাকে তাহলে ১.প্রাপ্ত বয়স্ক
ও ২.স্বাধীন ৩.ও ৪. মুসলমান পুরুষের জন্য জামাআতের সাথে নামায পড়া ওয়াজিব।
যে কোন নামায জামাআত ছাড়াও আদায় হয়ে যায়।
তবে জুমুআ ও দুই ঈদের জন্য জামাআত শর্ত। জামাআত ছাড়া জুমুআ ও ঈদের নামায সহীহ্ নয়।
নাবালক, অসুস্থমস্তিস্ক, গোলাম ও ওযরগ্রস্ত ব্যক্তির উপর জামাআত ওয়াজিব নয়। তবে তারা জামাআতে
নামায পড়লে সওয়াবের অধিকারী হবে। অবশ্য স্ত্রীলোকদের ঘরে নামায পড়াই উত্তম। (এই ফিতনার
যুগে)
জামাআত ওয়াজিব না হওয়ার ওযর
১.প্রচণ্ড বৃষ্টি বা ২.ঠাণ্ডা বা ৩.অন্ধকার হলে,
৪.পথে ভীষণ কাদা হলে,
৫.রাতে প্রচণ্ড ঝড় হলে,
৬.হেঁটে মসজিদে যেতে না পারার মতো অসুস্থ বা ৭.বৃদ্ধ হলে
৮.অন্ধের সাহায্যকারী না থাকলে
৯.কেউ যদি এমন রোগীর সেবায় ব্যস্ত থাকে যে, তার অনুপস্থিতিতে রোগীর ক্ষতি বা কষ্ট
হবে,(তাহলে তার জামাআতে উপস্থিত
হওয়া ওয়াজিব নয়)
১০.সফরে কাফেলার যাত্রার সময় হয়ে গেলে, গাড়ী ও জাহাজ ছেড়ে দেয়ার সময় হয়ে গেলে
এবং সামান হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকলে (জামাআতে উপস্থিত হওয়া ওয়াজিব নয়)
১১.ইস্তিঞ্জার হাজত হলে,
১২.ক্ষুধার সময় খাবার উপস্থিত হলে এবং খাবার চাহিদা থাকলে
(জামাআতে উপস্থিত হওয়া ওয়াজিব নয়)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই!
১. প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়া
সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ তথা অনেকটা ওয়াজিবের কাছাকাছি। বিনাকারণে জামাত ছেড়ে দিলে ব্যক্তি
গুনাহগার হবে।
নবীজি (সা.) কখনও জামাত তরক করতেন না। এমনকি অসুস্থ অবস্থায়
যখন তিনি হাঁটতে পারতেন না, তখনও দুই
সাহাবির কাঁধে ভর করে পা টেনে টেনে নামাজের জামাতে হাজির হয়েছেন। জামাতবিহীন একা একা
নামাজ পড়েননি।
সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে জামাত ছেড়ে দেওয়া আপনার জন্য উচিত হবে না। বরং আপনি জামাতেই নামাজ পড়বেন। এবং পরবর্তিতে ক্লাসের ভিডিও বা
রেকর্ড দেখে নিবেন।
২. আপনারা কয়েকজন মিলে কোর্স টিচারের কাছে বা কর্তৃপক্ষের
নিকট আবেদন করবেন যেন আপনাদেরকে জামাতে নামাজ পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়। যদি মসজিদে
যাওয়া সম্ভব নাও হয় তারপরও আপনারা সেখানেই নিজেরা জামাত করে নামাজ পড়ার চেষ্টা
করবেন। আল্লাহ তায়ালা আপনাদের জন্য দ্বীন মেনে চলা সহজ করে দিন। উপযুক্ত পরিবেশ
তৈরী করে দিন।