বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ-
রোগী দেখা অনেক সওয়াবের কাজ।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
وعن أبي هريرة - رضي الله عنه - قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم -: " «حق المسلم على المسلم خمس: " رد السلام، وعيادة المريض، واتباع الجنائز، وإجابة الدعوة، وتشميت العاطس» ". متفق عليه.
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, এক মুসলিমের প্রতি অপর মুসলিমের পাঁচটি রয়েছেঃ ১. সালামের জওয়াব দেয়া, ২. অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজ-খবর নেয়া, ৩. জানাযার পশ্চাদানুসরণ করা, ৪. দা’ওয়াত কবূল করা এবং ৫. হাঁচিদাতাকে খুশী করা (অর্থাৎ আল-হামদু লিল্লাহর জবাবে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা)।
সহীহ বুখারী-১২৪০
সহীহ মুসলিম-২১৬২
সুনানু আবি দাউদ-৫০৩০
মিশকাত-১৫২৪
হযরত সাওবান রাযি থেকে বর্ণিত।
وعن ثوبان - رضي الله عنه - قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم -: " «إن المسلم إذا عاد أخاه المسلم في خرفة الجنة حتى يرجع» "
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যখন কোনো মুসলমান তার অপর অসুস্থ মুসলমান ভাইকে দেখতে যায়,তখন সে নিজ ঘরে ফিরে আসা পর্যন্ত জান্নাতের একটি টুকরায় অবস্থান করে।
সহীহ মুসলিম-২৫৬৮
সুনানু তিরমিযি-৯৬৭
হযরত আলী রাযি থেকে বর্ণিত।
عن علي - رضي الله عنه - قال: سمعت رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: " «ما من مسلم يعود مسلما غدوة إلا صلى عليه سبعون ألف ملك حتى يمسي، وإن عاده عشية إلا صلى عليه سبعون ألف ملك حتى يصبح، وكان له خريف في الجنة» ". رواه الترمذي، وأبو داود.
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি সকালবেলা কোনো মুসলমান তার অপর অসুস্থ মুসলমান ভাইকে দেখতে যায়,তাহলে বিকাল পর্যন্ত সত্তর হাজার ফেরেস্তা তার জন্য মাফফিরাতের দু'আ করতে থাকে।
ঠিকতেমনিভাবে যদি বিকালবেলা কোনো মুসলমান তার অপর অসুস্থ মুসলমান ভাইকে দেখতে যায়,তাহলে সকাল পর্যন্ত সত্তর হাজার ফেরেস্তা তার জন্য মাফফিরাতের দু'আ করতে থাকে।
তিরমিযি-৯৬৯
আবু-দাউদ-৩০৯৮
ইবনে মা'জা-১৪৪২
মিশকাত-১৫৫০
রোগিকে দেখতে যাওয়া সুন্নাত। পরিচিত অপরিচিত যে কাউকে দেখতে যাওয়া যায়।
হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,যে এক মুসলমানের উপর অপর মুসলমানের পাচঁটি হক রয়েছে ।তন্মধ্যে একটি হল,রোগীকে দেখতে যাওয়া।
পুরুষের জন্য পুরুষ রোগী এবং মমাহরাম মহিলা রোগী-কে দেখতে যাওয়া এবং মহিলাদের জন্য মহিলা রোগী এবং মাহরাম পুরুষ রোগীকে দেখতে যাওয়াতে কোনো বিধিনিষেধ নেই।শরীয়তের অন্যান্য বিধান পালন করে অনায়াসে রোগী দেখতে যাওয়া যাবে।
এখন আমাদের সামনো প্রশ্ন চলে আসে যে, পুরুষের জন্য গায়রে মাহরাম নারীকে দেখতে যাওয়া এবং নারীদের জন্য গায়রে মাহরাম পুরুষকে দেখতে যাওয়ার কি জায়েয?
উত্তরে বলা যায় যে,মূলত রোগী দেখতে যাওয়াতে নারী-পুরুষের কোনো বেদাবেদ নেই।বরং যে কেউ যে কাউকে দেখতে যেতে পারে।
কেননা প্রথমত হাদীসে নারী পুরুষের কোনো বেদাবেদ উল্লেখ হয়নি। দ্বিতীয়ত হযরত আয়েশা রাযি হযরত বেলাল রাযিকে দেখতে গিয়েছিলেন।ঠিকতেমনিভাবে হযরত উম্মে সালামা রাযি হযরত শাম্মাস ইবনে উসমানকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে গিয়েছিলেন।এভাবে আনসারি এক মহিলা উছমান ইবনে মাযউন রাযি কে ও অসুস্থ অবস্থায় দেখতে গিয়েছিলেন।
কিন্তু সে যুগ ছিলো ফিতনামুক্ত যুগ।যাকে খাইরুল কুরুন তথা সর্বোত্তম যুগ বলা হয়।
আর বর্তমান সময় হল ফিৎনার যুগ।তাই বর্তমানে মসজিদে নামায পড়ার বিধান এবং কবর যিয়ারতের বিধানের মত রোগী দেখার বিধানেও মহিলাদের জন্য গায়রে মাহরামকে দেখার ব্যাপারে মাহকরুহের বিধান বাস্তবায়ন করাই যুক্তিসংগত মনে হচ্ছে।
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, IOM.