ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَأَنَّ هَـذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ وَلاَ تَتَّبِعُواْ السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَن سَبِيلِهِ ذَلِكُمْ وَصَّاكُم بِهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
“আর এ পথই আমার সরল পথ। কাজেই তোমরা এর অনুসরণ কর এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করবে না, করলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করবে। এভাবে আল্লাহ্ তোমাদেরকে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা তাকওয়ার অধিকারী হও।”[সূরা আনআম, আয়াত: ১৫৩]
ইসলাম হচ্ছে সর্বশেষ আসমানী ধর্ম। কুরআন হচ্ছে- সর্বশেষ আসমানী কিতাব। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন- সর্বশেষ নবী ও রাসূল। আল্লাহ তাঁকে এ ধর্ম সকল মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন:
وَأُوحِيَ إِلَيَّ هَذَا الْقُرْآنُ لأُنذِرَكُم بِهِ وَمَن بَلَغَ
“এ কুরআন আমার নিকট ওহী করা হয়েছে যেন তোমাদেরকে এবং যার নিকট তা পৌঁছবে তাদেরকে এর দ্বারা সতর্ক করতে পারি।”[সূরা আনআম, আয়াত: ১৯]
আল্লাহ তাঁর রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইসলাম দিয়ে সকল মানুষের কাছে প্রেরণ করেছেন। তিনি বলেন:
قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي رَسُولُ اللّهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا
“আপনি বলুন, হে মানুষ! নিশ্চয় আমি তোমাদের সকলের প্রতি আল্লাহ্র রাসূল”[সূরা আরাফ আয়াত: ১৫৮]
ইসলামের দিকে দাওয়াত দেয়া একটি উত্তম আমল। যেহেতু এই দাওয়াত দানের মাধ্যমে মানুষ সরল পথের দিশা পায়। এর মাধ্যমে মানুষকে তার দুনিয়া ও আখেরাতে শান্তির পথ দেখানো হয়।
“ঐ ব্যক্তির চেয়ে আর কার কথা উত্তম হতে পারে যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নেক আমল করে। আর বলে অবশ্যই আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।”[সূরা ফুস্সিলাত, আয়াত: ৩৩]
ইসলামের দিকে আহ্বান করা একটি মর্যাদাপূর্ণ মিশন। এটি নবী-রাসূলদের কাজ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেছেন যে, তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর মিশন এবং তাঁর অনুসারীদের মিশন হচ্ছে- আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন:
“বলুন, এটাই আমার পথ, আমি জেনে-বুঝে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকি, আমি এবং যারা আমার অনুসরণ করেছে তারা। আর আল্লাহ্ কতই না পবিত্র এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।”[সূরা ইউসূফ, আয়াত: ১০৮]
“আর তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল যেন থাকে যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎকাজে নিষেধ করবে; আর তারাই সফলকাম।”[সূরা আলে-ইমরান, আয়াত: ১০৪]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমার কাছ থেকে একটি আয়াত হলেও পৌঁছিয়ে দাও”[সহিহ বুখারী (৩৪৬১)]
সু্প্রিয় পাঠকবর্গ!ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বেপর্দা ও ফাসিকাহ মহিলাদের সামনে নেককার মহিলার সতর সম্পর্কে বলা হয় যে,
এক মহিলার সামনে আরেক মহিলার সতর কতটুকু এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে,
এক মহিলার সামনে অন্য মহিলার সতরঃ
نظر المرأة إلى المرأة كنظر الرجل إلى الرجل، كذا في الذخيرة. وهو الأصح، هكذا في الكافي. ولا يجوز للمرأة أن تنظر إلى بطن امرأة عن شهوة، كذا في السراجية. ولا ينبغي للمرأة الصالحة أن تنظر إليها المرأة الفاجرة؛ لأنها تصفها عند الرجال فلا تضع جلبابها، ولا خمارها عندها، ولا يحل أيضا لامرأة مؤمنة أن تكشف عورتها عند أمة مشركة أو كتابية إلا أن تكون أمة لها، كذا في السراج الوهاج
এক মহিলা অন্য মহিলার ঐ সমস্ত অঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারবে,যা এক পুরুষ অন্য পুরুষের দিকে পারে।যখিরা নামক কিতাবে বর্ণিত আছে।এবং এটাই বিশুদ্ধ মত।(পুরুষের সামনে পুরুষের সতর কতটুকু সেটা পরে আসছে)কোনো মহিলার জন্য জায়েয নয় যে,সে আরেক মহিলার পেঠের দিকে কামভাব নিয়ে তাকাবে।নেককার মহিলার জন্য উচিৎ নয় যে,তার দিকে কোনো বদকার মহিলা দৃষ্টি দিবে।কেননা ঐ বদকার মহিলা তার স্বামীর কাছে গিয়ে ঐ নেককার মহিলার শরীরের বর্ণনা দিবে।সুতরাং নেককার মহিলা, বদকার মহিলার সামনে নেকাব এবং উড়না খুলবে না।
ঠিকতেমনি কোনো কিতাবি বা মুশরিক মহিলার সামনে নেককার মহিলার জন্য সতর খুলা জায়েয হবে না।তবে নিজের বাদীর সামনে জায়েয রয়েছে।
বিস্তারিত জানুন-২৬৬১
পুরপুরুষের সামনে যেভাবে হেজাব পরিধান ফরয।ঠিক তেমনি কিন্তু বদকার মহিলার সামনে হেজাব ফরয হওয়ার কথা বলা হচ্ছে না।বরং বলা হচ্ছে,একজন নেককার মহিলার সামনে আরেকজন নেককার মহিলা যতটুকু সতর খুলতে পারবে,ততটুকু সতর একজন বদকার মহিলার সামনে খুলা উচিৎ নয়।
এক মহিলার সামনে আরেক মহিলার সতর কতটুকু এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে,
(وَأَمَّا بَيَانُ الْقِسْمِ الثَّانِي) فَنَقُولُ: نَظَرُ الْمَرْأَةِ إلَى الْمَرْأَةِ كَنَظَرِ الرَّجُلِ إلَى الرَّجُلِ، كَذَا فِي الذَّخِيرَةِ. وَهُوَ الْأَصَحُّ
এক মহিলার সামনে অন্য মহিলার সতরঃ
এক মহিলা অন্য মহিলার ঐ সমস্ত অঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারবে,যা এক পুরুষ অন্য পুরুষের দিকে পারে।যখিরা নামক কিতাবে বর্ণিত আছে।এবং এটাই বিশুদ্ধ মত।
এক পুরুষ অন্য পুরুষের কোন কোন অঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারবে,
এসম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে,
وَيَجُوزُ أَنْ يَنْظُرَ الرَّجُلُ إلَى الرَّجُلِ إلَّا إلَى عَوْرَتِهِ كَذَا فِي الْمُحِيطِ وَعَلَيْهِ الْإِجْمَاعُ، كَذَا فِي الِاخْتِيَارِ شَرْحِ الْمُخْتَارِ. وَعَوْرَتُهُ مَا بَيْنَ سُرَّتِهِ حَتَّى تُجَاوِزَ رُكْبَتَهُ، كَذَا فِي الذَّخِيرَةِ
একজন পুরুষ অন্য পুরুষের দিকে সতর ব্যতীত অন্যান্যস্থানের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারবে,এর উপর ইজমা বা উলামায়ে কেরামদের ঐক্যমত রয়েছে।মুহিত ইত্যাদি গ্রন্থাবলীতে এভাবেই বর্ণিত আছে।পুরুষ-পুরুষের সামনে সতর হচ্ছে,নাভীর নিচ থেকে হাটু পর্যন্ত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩২৭)
বিস্তারিত জানুন-২৮৩৩
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই বোন!
দ্বীনের দাওয়াত বা দুনিয়াবী বিশেষ কোনো প্রয়োজনে নককার মহিলা নিজ শরীরকে পূর্ণ ঢেকে কোনো বদকার মহিলাকে দাওয়াত দিতে পারবে।বদকার মহিলার সামনে হেজাব ফরয নয়।যদিও বিনা জরুরতে বদকার মহিলার সাথে উঠাবসা করা নেককার মহিলার জন্য উচিৎ নয়।