আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
137 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (91 points)
edited by

১.জেনে শুনে হারাম কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা কুফরি এমনটা শুনেছি, জানতে চাই যে।  কি ধরনের হারাম কাজে কিভাবে বিসমিল্লাহ/ইনশাআল্লাহ ইত্যাদি বললে কুফর হবে?

২.হারাম আয় করে এমন আত্নীয়ের বাসায় খাওয়ার আগে বিসমিল্লাহ বলা, পরিপূর্ণ পর্দা না করে বাইরে বের হওয়ার সময় বিসমিল্লাহ বলা,মেলায় জামাই এর সাথে যাওয়ার সম্ভাব্য বুঝাতে ইনশাআল্লাহ বলা এসব ক্ষেত্রেও কি কুফর হবে?

৩. সন্দেহপূর্ণ জিনিস খাবার আগে কি বিসমিল্লাহ বলবো?
(ভয়ে অনেক কাজে বিসমিল্লাহ বলা বাদ পরে যাচ্ছে আমার, একটু দিক নির্দেশনা দিবেন দয়া করে)

৪. কেও যদি ভাবে যে এইরকম পরিস্থিতি আসলে বিদেশে সহজে যাওয়ার জন্য কুফরী করে ফেলবে ও পরে তওবা করে নিবে, কিন্তু পরক্ষণেই তার এই ভাবনার জন্য অনুতপ্ত হলো। এভাবে কুফরি করার নিয়ত করলে কি সে কাফের হয়ে যাবে?

৫. আমার আম্মু, সেদিক কাকে যেনো ফোনে বলছেন তুমিতো অনেক দিন বেড়াতে আসো না, তখন সে বললে আল্লাহর হুকুম হলে, আসবো। তখন তিনি বললেন যে" আল্লাহর হুকুম তো তোমার হাতে" এটা বলে কি বলেছেন পুরোপুরি মনে নাই, সম্ভবত বলেছিলেন তুমি আসার ইচ্ছে করো না এরকম কিছু। ফোন রাখার পর তাকে বলি এই কথা কেনো বলেছেন, বেখেয়ালি বলেছেন কি না। এভাবে বলা ঠিক হয় নি, তিনি কিছুাি বললেন না,খাওয়া খাচ্ছিলেন, আর বললেন যে"এইতো ভাত খাচ্ছি আমি এটাও আল্লাহর হুকুম"। সম্ভবত উনি বুঝাতে চেয়েছেন যে আমরা ইচ্ছা করলে যা করি তাই আল্লাহর হুকুমের বহিঃপ্রকাশ।  বা এরকম কিছু, উনার আল্লাহকে ছোট করার ইচ্ছে থাকার কথা না,উনি এসব ভয় করেন, হয়তো কথায় কথায় বলেদিয়েছেন, বুঝেন নি কথাটা গুরুতর, উনি কি কাফের হয়েগেছেন? উনাদের বিবাহে সমস্যা হবে?

৬.আল্লাহ মানুষকে দুঃখ-কষ্ট দেন এভাবে বলা কি আল্লাহকে নেগেটিভ কাজে দায়ী করা হয়?এভাবে কি বলা যায় সরাসরি? 

৭. কেও একজন ভেবেছিলো যে আল্লাহ মানুষকে দুঃখ কষ্ট দিয়ে পরীক্ষা করেন এটা কোরআনে আছে, ওরে সরাসরি এভাবে হুবুহু পেলো না, তার এই ভাবনার ফলে কি
 কুফর হবে?

৮. জামাই/বউ একে অপরকে রেখে দূরে কোথায় যাওয়র সময় বা একটা জাগায় রেখে অতিক্রম করার সময় যদি বলে তোমাকে ছেড়ে যাচ্ছি/রেখে যাচ্ছি/ফেলে যাচ্ছি। অপরজন যদি জবাব দেয়,  হ্যা ঠিকইতো। তবে কি তাদের তালা* হবে?

৯.কেও যদি অপর মুসলিমকে মজা করে বলে " তোমার ভগবান যা বলে তা করো" এটা কি কুফরি হবে? আমার আম্মা এই কথা মজা করে অনেককে বলে, উনি হয়তো জানেন না এই কথা ভালো না খারাপ উনিকি কুফর হবেন এজন্য?

১০. একজন একটা পোস্টে লেখলো হাস-মুরগির ডিম আর সাপের ডিম খাওয়ার মধ্যে তফাত নাই(হয়তো স্বাদ বা পুষ্টি উদ্দেশ্য)।  এই লেখা শেয়ার করে আমার বউ লিখেছে " ডিমের যে দাম!  এবার সাপের ডিম খুঁজতে হবে".... তার এই কাজ কি কুফরী হয়েছে? তাকে এই বিষয়ে জিগ্যেসাবাদ করা কি জরুরী? (সাপের ডিম হালাল /হারাম নিশ্চিত তা জানা নাই আমারো,তাই তাকে কিছু বলিনি,তবে আদতে নাজায়েজ ই মনে হচ্ছে ,)

১১. বাইবেলের কোনো ঘটনা বর্ননায় কেও যাদি ইসা(আাঃ) কে যীশু বলে তবে কি কুফর হবে?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

 قُلْ أَبِاللهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُوْلِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُوْنَ، لاَ تَعْتَذِرُوْا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيْمَانِكُمْ 

‘আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে তাঁর হুকুম-আহকামের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? ছলনা কর না, ঈমান আনার পর তোমরা যে কাফির হয়ে গেছ’ (তওবা ৬৫-৬৬)। 

 فَنَذَرُ الَّذِيْنَ لاَ يَرْجُوْنَ لِقَاءَنَا فِيْ طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُوْنَ 

‘সুতরাং যারা আমার সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে না, আমি তাদেরকে তাদের দুষ্টামীতে ব্যতিব্যস্ত করে রাখি’ (ইউনুস ১১)।

https://ifatwa.info/9609/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
যেই খাবারটি হারাম।সেটা খাওয়া যাবে না, খেলে গোনাহ হবে।এরকম খাবারে বিসমিল্লাহ বললে আল্লাহর সাথে ঠাট্টা বিদ্রুপ হবে,এমনটা জানার পরও যদি কেউ হারাম খাবারকে বিসমিল্লাহ বলে ভক্ষণ করে নেয়,তাহলে এটার দ্বারা অবশ্যই সে কাফির হয়ে যাবে।নতুবা গোনাহ হলেও সে কাফির হবে না।
,
হারাম বা মাকরূহ কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা হারাম বরং তা আল্লাহর সাথে ধৃষ্টতা প্রদর্শনের শামিল।
বিসমিল্লাহ বলার অর্থ উক্ত কাজে আল্লাহর সাহায্য ও বরকত কামনা করা। সুতরাং কেউ যদি আল্লাহর নিষিদ্ধ বা ঘৃণিত কাজে তার নিকট সাহায্য চায় বা বরকত কামনা করে তাহলে তা মহামহিম আল্লাহর সাথে বেয়াদবী করা হবে।

যেখানে হারাম কাজ করার আগে আল্লাহ তাআলার কথা স্বরণ করে সেখান থেকে দূরে সরে আসা আবশ্যক।
.
,
★হারাম কাজ করা,হারাম খাওয়ার ক্ষেত্রে বিধান হলোঃ
(০১) যদি উপহাস,ঠাট্রা করে বিসমিল্লাহ বলে,তাহলে এটি স্পষ্ট কুফরী।
(০২) যদি উপহাস বা ঠাট্রার নিয়ত না থাকে,তাহলে কাফের হবেনা,তবে গুনাহগার হবে।


قال الطحطاوي في حاشيته على "مراقي الفلاح"، ص5: "والإتيان بالبسملة عمل يصدر من المكلف، فلا بد أن يتصف بحكم, فتارة يكون فرضا كما عند الذبح... وتارة يكون واجبا، على القول بأنها آية من الفاتحة, وإن كان خلاف المذهب؛ لأن الأخبار الواردة فيها مع المواظبة تفيد الوجوب، وتارة يكون سنة كما في الوضوء, وأول كل أمر ذي بال، ومنه الأكل والجماع ونحوهما, وتارة يكون مباحا كما هي بين الفاتحة والسورة على الراجح, وفي ابتداء المشي والقعود مثلا؛ لأنها إنما تطلب لما فيه شرف، صونا عن اقتران اسمه تعالى بالمحقرات وتيسيرا على العبادة, فإن أتي بها في محقرات الأمور كلبس النعال على وجه التعظيم والتبرك فهو حسن. 
وتارة يكون الإتيان بها حراما، كما عند الزنا ووطء الحائض وشرب الخمر وأكل مغصوب أو مسروق قبل الاستحلال أو أداء الضمان.
والصحيح: أنه إن استحل ذلك عند فعل المعصية، كفر، وإلا؛ لا. وتلزمه التوبة، إلا إذا كان على وجه الاستخفاف، فيكفر أيضا...
واعلم أن المستحل لا يكفر إلا إذا كان المحرم حراما لعينه، وثبتت حرمته بدليل قطعي، وإلا، فلا. صرح به في الدرر عن الفتاوي في آخر كتاب الحظر" انتهى.
সারমর্মঃ যদি হারাম কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা হালাল মনে করে,তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।
অন্যথায় কাফের হবেনা,তবে তওবা করা জরুরি হবে।
ঠাট্রা বিদ্রুপের নিয়তে বিসমিল্লাহ বললে কাফের হবে।    
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
অকাট্য ভাবে প্রমানিত কোনো হারাম কাজ করার শুরুতে উপহাসের নিয়তে বিসমিল্লাহ বললে ব্যাক্তি কাফের হয়ে যাবে।

(০২)
এসব ক্ষেত্রে তো আল্লাহর নামের সাথে উপহাসের নিয়ত করা হয়না,তাই এক্ষেত্রে কুফরি হবেনা।

(০৩)
সন্দেহপূর্ণ জিনিস খাবার আগে  বিসমিল্লাহ বলতে পারবেন।

(০৪)
এভাবে শুধুমাত্র কুফরি করার নিয়ত করলে সে কাফের হয়ে যাবেনা।

(০৫)
উনি  কাফের হয়ে যাননি  উনাদের বিবাহে সমস্যা হবেনা।

(০৬)
এভাবে বলা যাবে।

(০৭)
এই ভাবনার ফলে কুফর হবেনা।

(০৮)
তবে তাদের তালাক হবেনা।

(০৯)
ভগবান দ্বারা এখানে এক আল্লাহকে উদ্দেশ্য নিলে এতে কুফরি হবেনা।
তবে অমুসলিমদের এসব বাক্য বলার দরুন তওবা হবে।

(১০)
তিনি যেহেতু সাপের ডিম হালাল হওয়া দাবী করেননি,তাই তিনি কাফের হয়ে যাবেননা।

(১১)
এভাবে বলা ঠিক নয়।
তবে এর দরুন উক্ত ব্যাক্তি কাফের হয়ে যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...