আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
320 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম,

https://ifatwa.info/60380/ নং ফতোয়ার ২, ৩, ৪ ও ৬ নং প্রশ্নোত্তর প্রসঙ্গেঃ

1.))
২ নং প্রশ্নটি ছিলঃ
একটি ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন ধরনের রিসোর্স সংগ্রহ করে ওয়েবসাইট তৈরি করার প্রয়োজন হয়, যেমনঃ Image, Font, Programming code ইত্যাদি বিভিন্ন রিসোর্সের সমন্বয়ে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়। আমি যে এগুলোর সমন্বয়ে নিজে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করলাম। তাহলে কি ওয়েবসাইটটি আমার তৈরিকৃত হিসেবে উল্লেখ করা যাবে কি না?

উত্তরের শেষে বলা হয়েছে "ওয়েবসাইটটিকে আপনার নিজের তৈরিকৃত হিসেবে উল্লেখ করতে পারবেন না", এক্ষেত্রে আমার প্রশ্ন হলোঃ
প্রথমে কয়েকটি উদাহরণ দিই,
ক) একজন লেখক যখন একটি বই লেখে তখন সেই বই সে লেখকের নামেই পরিচিতি পায়। একটি বই লেখার ক্ষেত্রে বইটির কভার কিন্তু সাধারণত অন্য ব্যক্তির থেকে ডিজাইন করে নেয়া হয়, বই তৈরির বিভিন্ন কাঁচামাল যেমনঃ পৃষ্ঠা, কালি সহ যাবতীয় জিনিস অন্যত্র থেকে সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু বইটি কিন্তু লেখকের নামেই প্রকাশ করা হয়।
খ) একটি বাড়ি তৈরির জন্য প্রয়োজন হয় ইট, বালি, লোহা, কাঠ ইত্যাদি জিনিসপত্র। যেগুলো অন্যত্র থেকে সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু বাড়ি যারা তৈরি করে তারাই কিন্তু সেই বাড়ির প্রস্তুতকারক হিসেবে পরিচিত হয়।
গ) একটি মোবাইল তৈরির ক্ষেত্রে প্রস্তুতকারক কোম্পানি মোবাইল তৈরির কাঁচামাল কিন্তু অন্যত্র কোনো জায়গা থেকে সংগ্রহ করে থাকে। কিন্তু মোবাইল তৈরির পর মোবাইলটি সেই কোম্পানির নামেই প্রকাশিত হয়।
এরকম ভাবে পৃথিবীতে যায় কিছু মানুষ তৈরি করতে যাবে তাকে কিন্তু কোনো না কোনো জায়গা থেকে কিছু জিনিস সংগ্রহ করে তারপর নিজে একটি জিনিস তৈরি করতে পারবে।

এখন প্রশ্ন হলোঃ তাহলে ওয়েবসাইট তৈরি করতে অন্যত্র থেকে যেসব জিনিস সংগ্রহ করা হয় সেগুলোর সমন্বয়ে নিজে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করলে, তা কেন নিজের নামে প্রকাশ করা যাবে না?

কেননা প্রত্যেক ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলেই এভাবে কোনো না কোনো রিসোর্স এর প্রয়োজন হয় এবং ডেভেলপার বা ডিজাইনার কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম সাইটটিতে উল্লেখ থাকে।

একজন ওয়েব ডিজাইনার বা ডেভেলপারের কাজ কিন্তু font, image ইত্যাদি তৈরি করা না। তাকে কোথাও থেকে এগুলো সংগ্রহ করেই ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয়। ঠিক যেমন লেখকের কাজ কিন্তু কাগজ তৈরি করা নয়, সাধারণত লেখক কিন্তু শুধু তার বইটি লিখে। কিন্তু বই প্রকাশের জন্য পৃষ্ঠা, কালির প্রয়োজন হয় যা লেখক তৈরি করে না। তেমনি ভাবে একজন ডিজাইনার বা ডেভেলপার বিভিন্ন রিসোর্স, প্রোগ্রামিং কোড এবং বিভিন্ন সফটওয়্যার টুলস এর সাহায্যে ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকে। ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত বাহ্যিক ওই সকল রিসোর্স কিন্তু নিজের নামে প্রকাশ করা হয় না। বরং সম্পূর্ণ যে ওয়েবসাইটটি তৈরি করা হয় সেটাকে নিজের নামে প্রকাশ করা হয়। ঠিক যেমন বাড়ি করার জন্য ইট, সিমেন্ট, লোহা ইত্যাদিকে আলাদা আলাদা ভাবে নিজের নামে প্রকাশ করা হয় না। বরং বাড়িটিকে নিজের নামে প্রকাশ করা হয়।

2.))
৩ নং প্রশ্নটি ছিলঃ
একটি বাড়ি দেখে একজনের পছন্দ হলো। সেও তার বাড়িটি ঠিক সেভাবেই তৈরি করলো এবং বললো এটি আমার বাড়ি। এক্ষেত্রে কি ডিজাইন কপি করা হলো না? সে ডিজাইন হুবুহু কপি করেছে এবং নিজে (অর্থাৎ নিজের টাকাই) বাড়িটি তৈরি করেছে। ও বলছে এটি আমার বাড়ি, এক্ষেত্রে এ বিষয়টি জায়েজ কি না?
যদি জায়েজ হয় তাহলে, একটি ওয়েবসাইটের ডিজাইন দেখে যদি কেউ নিজে সে ওয়েবসাইটটি তৈরি করে এবং বলে এটি আমার তৈরি ওয়েবসাইট তাহলে এটি জায়েজ হবে কি না?

এবং উত্তরের শেষে বলা হয়েছে, "ওয়েব সাইট দেখে হুবহু আরেকটি ওয়েবসাইট নিজের জন্য বানাতে পারবেন। তবে ব্যবসায়িক ভাবে বানাতে পারবেন না।"

৪ নং প্রশ্নটি ছিলঃ
কারোর করা কোনো ডিজাইন থেকে আইডিয়া নিয়ে নিজের মত তৈরি করা (হুবুহু না বরং কিছু কিছু জায়গায় অমিল থাকা) জায়েজ কি না? এবং সেই নিজের করা ডিজাইন নিজের নামে চালানো জায়েজ কি না?

উত্তরে বলা হয়েছেঃ "কারোর করা কোনো ডিজাইন থেকে আইডিয়া নিয়ে নিজের মত তৈরি করা (হুবুহু না বরং কিছু কিছু জায়গায় অমিল থাকা) এটাও  জায়েয হবে না।এবং সেই নিজের করা ডিজাইন নিজের নামে চালানোও যাবে না।"

৩ ও ৪ নং প্রশ্ন দুটি একই রকমের, এক্ষেত্রে মনে করুন একটি সাইকেল কোম্পানি কিন্তু অন্য সাইকেলের অনুরূপ সাইকেল বানিয়ে শুধু রং, স্টিকার ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে কমিয়ে অন্য একটি সাইকেল বাজারে বিক্রয় করে। এছাড়া একটি জামা বানাতে গেলে কিন্তু আরও একটি জামা দেখার প্রয়োজন হতে পারে। পরে জামাটি বানাতে গেলে কিন্তু কিছু জায়গায় মিল অমিল থেকেই যায়। এভাবে প্রায় সকল ধরনের জিনিসের ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। মানুষ কোনো না কোনো জায়গা থেকে আইডিয়া অর্থাৎ ধারণা নিয়ে তারপর একটি জিনিস তৈরি করে থাকে। যেমন কেউ কারোর থেকে কোনো ব্যবসার আইডিয়া নিল। এক্ষেত্রে কি সে তার নিজের ব্যবসার ক্ষেত্রে এমনটা বলবে যে, "এটা আমার ব্যবসা না, এটা যার থেকে আইডিয়া নিয়েছি তার ব্যবসা"। তাহলে একটি ওয়েবসাইটের ডিজাইন দেখে তার থেকে আইডিয়া নিয়ে কেন নিজের মত বানিয়ে নিজের নাম দেয়া যাবে না?

3.))
৬ নং প্রশ্নটিতে যে ইমেজের লিংক দেওয়া হয়েছিল (shorturl.at/eUVW5) তার 1 ও 2 নাম্বার ইমেজের প্রায় অনুরূপ ইমেজ আমি বিশিষ্ট ইসলামিক ইউটিউব চ্যানেল As-Sunnah Foundation এর কয়েকটি থাম্বনাইলে দেখতে পেয়েছি। সেগুলো দেখতে এমন (shorturl.at/ahmt7) এই লিংকে রয়েছে। তাহলে কি এই ধরণের ইমেজ ব্যবহার করা হারাম হচ্ছে?

আসলে পূর্বের উত্তর গুলো আমার সঠিক বোধগম্য হচ্ছে না উপরের বিষয় গুলো অনুযায়ী এজন্য পুনরায় বিস্তারিত ভাবে বললাম। এটা আমার চিন্তা থেকে বলছি জানার জন্য। আমি কিন্তু মোটেও আপনাদের উত্তরকে অসন্মান করে নিজের মতামত প্রকাশ করার চেষ্টা করছি না। এটা আমার চিন্তাতে আসলো এজন্য বললাম।
জাযাকাল্লাহ খায়রান
by (589,740 points)
কল দিবেন মুহতারাম।

1 Answer

0 votes
by (589,740 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ব্যক্তি সর্বপ্রথম কোনো জিনিষ আবিস্কার করেছে,তার আবিস্কৃত জিনিষ অস্তিত্বমান বস্তু হোক বা অস্তিত্বহীন, নিঃসন্দেহে সেইব্যক্তি অন্যের তুলনায় তা থেকে উপকৃত হওয়ার, প্রস্তুত করার এবং মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বাজারজাত করার বেশী অধিকারী।কেননা, আবু দাউদ শরীফে হযরত আসমুর ইবনে মুদরাস (রা.) থেকে একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, 'আমি নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে হাজির হয়ে তার হাতে বাইআত গ্রহণ করি।এ সময় নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,' যে ব্যক্তি ওই বস্তুর দিতে অগ্রসর হল, যে বস্তুর দিকে কোনো মুসলমান অগ্রসর হয় নাই,তাহলে ওই বস্তু ওই ব্যক্তির।(যে ওই দিকে প্রথম অগ্রসর হয়েছে।)আবু-দাউদ:৪/২৬৪ হাদীস নং২৯৪৭)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1197

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
একটি ওয়েবসাইটের ডিজাইন দেখে তার থেকে আইডিয়া নিয়ে নিজের মতকরে বানিয়ে নিজের নাম দিয়ে অন্য ওয়েবসাইট বানানো যাবে। তবে হবহু সেই ডিজাইনকে কপি করে ব্যবসা করা জায়েয হবে না।

(২)
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ : " ﺍﻟﺼُّﻮﺭَﺓُ ﺍﻟﺮَّﺃْﺱُ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻗُﻄِﻊَ ﺍﻟﺮَّﺃْﺱُ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﺑِﺼُﻮﺭَﺓٍ ."
প্রাণীর মাথা-ই হল মূলত ছবি তথা প্রাণীর মাথাটাই ছবির উল্লেখযোগ্য অংশ।যখন কোনো ছবির অাকৃতি থেকে মাথাকে কেটে ফেলা হবে,তখন সেটা যেন কোনো ছবিই না।(সুনানে বায়হাক্বী-১৪৫৮০)

যেহেতু মাথা ছাড়া কোনো প্রাণী জীবিত থাকতে পারেনা,তাই বলা হচ্ছে মাথা কাটা থাকলে সেটা ছবির হুকুমের আওতাধীন হবেনা।ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসএ্যাপ ইত্যাদিতে চ্যাটিং-এর সময় বিভিন্ন ধরণের emoji ব্যবহারের বিধান:যদি emoji এর পূর্ণ অবয়ব তথা emoji তে ব্যবহৃত প্রাণীর মাথা,মুখ,চোখ,নাক,কান ইত্যাদি স্পষ্টভাবে বুঝা যায়,তাহলে সেগুলোকে ব্যবহার করা যাবে না।কেননা এগুলো হাদীসে বর্ণিত নিষিদ্ধ ছবির অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু যদি চোখ, মুখ ইত্যাদি অঙ্গগুলো স্পষ্টত বুঝা না যায়, তাহলে সেগুলোকে ব্যবহার করা যাবে। কেননা, এগুলোকে ‘প্রাণীর ছবি’ বলা যাবে না বরং খুব বেশী এগুলোকে আঁকিবুকি, চিহ্ন বা কিছু রেখা ইত্যাদি ভাবা হবে। তবে যথাসম্ভব এ সব ব্যবহার না করাই শ্রেয়। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/974

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1955

মলাটের ভিতর ঢাকা থাকলে রহমতের ফিরিস্তার জন্য প্রতিবন্ধক হবে না।বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1334


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,740 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...