ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
মাওলানা আব্দুল মালেক দাঃবা: লিখেন,
আহলে কুরআনদের বিভ্রান্তি ও গোমরাহির অনেক বড় একটা প্রকাশক্ষেত্র হল সালাত। তাই এ বিষয়ে কিছু বলার ইচ্ছা করছি। সূরা বনী ইসরাঈলের এই আয়াতটি দেখুন-
اَقِمِ الصَّلٰوةَ لِدُلُوْكِ الشَّمْسِ اِلٰی غَسَقِ الَّیْلِ وَ قُرْاٰنَ الْفَجْرِ اِنَّ قُرْاٰنَ الْفَجْرِ كَانَ مَشْهُوْدًا.
(হে নবী!) সূর্য হেলার সময় সালাত কায়েম করুন রাত অন্ধকার হওয়া পর্যন্ত এবং কায়েম করুন ফজরের সালাত। নিশ্চয়ই ফজরের সালাতে ঘটে থাকে সমাবেশ। -সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ৭৮
এখানে দুটি বিষয় লক্ষণীয়-
এক. আল্লাহ তাআলা সালাত কায়েমের আদেশ করেছেন। তবে সালাত কায়েম কীভাবে করবে- তার বর্ণনা দেননি এবং কুরআন মাজীদের কোথাও দেননি। অথচ সূরা বাকারায় বলেন-
حٰفِظُوْا عَلَی الصَّلَوٰتِ وَ الصَّلٰوةِ الْوُسْطٰی وَ قُوْمُوْا لِلهِ قٰنِتِیْنَ، فَاِنْ خِفْتُمْ فَرِجَالًا اَوْ رُكْبَانًا فَاِذَاۤ اَمِنْتُمْ فَاذْكُرُوا اللهَ كَمَا عَلَّمَكُمْ مَّا لَمْ تَكُوْنُوْا تَعْلَمُوْنَ.
তোমরা পুরোপুরি যত্নবান থেকো সালাতসমূহের প্রতি এবং (বিশেষভাবে) মধ্যবর্তী সালাতের প্রতি২। তোমরা আল্লাহর সামনে আদবের সঙ্গে অনুগত হয়ে দাঁড়িয়ো। তোমরা যদি (শত্রুর) ভয় কর, তবে দাঁড়িয়ে বা আরোহী অবস্থায় (সালাত আদায় করে নিয়ো)। অতঃপর যখন তোমরা নিরাপদ অবস্থা লাভ কর তখন আল্লাহর যিকির সেইভাবে করবে, যেভাবে তিনি তোমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, যে সম্পর্কে তোমরা অনবগত ছিলে। -সূরা বাকারা (২) : ২৩৮-২৩৯
এখানে-
فَاِذَاۤ اَمِنْتُمْ فَاذْكُرُوا اللهَ كَمَا عَلَّمَكُمْ مَّا لَمْ تَكُوْنُوْا تَعْلَمُوْنَ .
(অতঃপর যখন তোমরা নিরাপদ অবস্থা লাভ কর তখন আল্লাহর যিকির সেইভাবে করবে, যেভাবে তিনি তোমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, যে সম্পর্কে তোমরা অনবগত ছিলে।)-অংশটি খেয়াল করুন। আগ-পর থেকে স্পষ্ট, এখানে যিকির বলতে যেকোনো যিকির উদ্দেশ্য নয়; বরং সালাত উদ্দেশ্য। অর্থাৎ ভীতিকর পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে তোমরা দাঁড়িয়ে বা আরোহী অবস্থায় সালাত আদায় করবে। এরপর পরিস্থিতি নিরাপদ হয়ে এলে তোমরা সেই নিয়মে সালাত আদায় করবে, যে নিয়ম তিনি তোমাদের শিক্ষা দিয়েছেন। প্রশ্ন হল, সে নিয়ম তো কুরআনে নেই; আমরা কোত্থেকে শিখলাম? আল্লাহ আমাদের কীভাবে শেখালেন? উত্তর স্পষ্ট, আমরা তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শিখেছি। তিনি তাঁর সুন্নাহ ও হাদীসের মাধ্যমে আমাদেরকে শিখিয়েছেন। রাসূলের এ শেখানোকেই আল্লাহ তাআলা বলেছেন- ‘আল্লাহর শেখানো’। ইরশাদ হয়েছে- كَمَا عَلَّمَكُمْ অর্থাৎ যেভাবে আল্লাহ তোমাদের শিক্ষা দিয়েছেন। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শেখানো সালাতের পদ্ধতি থেকে বিমুখ হওয়া মানে আল্লাহর শেখানো পদ্ধতি থেকে বিমুখ হওয়া। (শেষ)
সুতরাং হাদীস ব্যতিত কুরআন শিখা অসম্ভব। হ্যা , হাদীসের মধ্যে কিছু হাদীস অবশ্যই মাওযু এবং কিছু হাদীসের সনদ দুর্বল বা মতভেদপূর্ণ। তকে সমষ্টিগত ভাবে হাদীসকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই।