আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
190 views
in সালাত(Prayer) by (31 points)

১. কোন কারণে নামাজের ওয়াক্তের শেষের দিকে নামাজ পড়া হলে যদি ৪ রাকাআত নামাজের ১/২ রাকাআত ওয়াক্তের মধ্যে পাই তাহলে কি নামাজ হবে?


২. আসরের নামাজ যদি আউয়াল ওয়াক্তে না পড়া হয়ে থাকে তাহলে কি তা নিষিদ্ধ সময়ে আদায় করা যাবে?


৩. শেষ বৈঠকে বসা অবস্থায় বায়ু বের হওয়ার আশঙ্কা হলে শুধু তাশাহুদ পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করলে কি গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/27151/?show=27151#q27151 নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

তিন সময়ে নামাজ পড়তে হাদীস শরীফে নিষেধ করা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ الصُّنَابِحِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الشَّمْسُ تَطْلُعُ وَمَعَهَا قَرْنُ الشَّيْطَانِ فَإِذَا ارْتَفَعَتْ فَارَقَهَا فَإِذَا اسْتَوَتْ قَارَنَهَا فَإِذَا زَالَتْ فَارَقَهَا فَإِذَا دَنَتْ لِلْغُرُوبِ قَارَنَهَا فَإِذَا غَرَبَتْ فَارَقَهَا " . وَنَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الصَّلاَةِ فِي تِلْكَ السَّاعَاتِ .

আবদুল্লাহ সুনাবিহী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সুর্য শয়তানের দুই শিঙের মধ্য দিয়ে উদিত হয়। যখন সুর্য উপরে উঠে, তখন শয়তান তা থেকে দুরে সরে যায়। আবার যখন সুর্য মাথার উপর আসে, তখন শয়তান এসে মিলিত হয়। আবার ঢলে পড়লে পৃথক হয়ে যায়। আবার যখন সুর্য অস্তগমনের নিকটবর্তী হয়, তখন শয়তান মিলিত হয় এবং যখন সুর্য অস্তমিত হয়, তখন শয়তান সরে যায়। এ জন্যই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ তিন সময় সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন ( সুনান আন-নাসায়ী ,৫৬০)

অন্য হাদীসে এসেছে-

عَنْ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ الْجُهَنِيَّ، يَقُولُ ثَلاَثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِنَّ أَوْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ حَتَّى تَمِيلَ وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى تَغْرُبَ .

উকবা ইবনু আমির জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনটি সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সালাত আদায় করতে ও মৃত ব্যাক্তিকে কবরস্থ করতে নিষেধ করেছেন (১) যখন সুর্য আলোকিত হয়ে উদয় হয়, যাবৎ না ঊর্ধাকাশে উঠে; (২) যখন দ্বিপ্রহর হয়, যাবৎ না সুর্য হেলে পড়ে আর (৩) যখন সুর্য অস্ত যাওয়ার উপক্রম হয়, যাবৎ না সম্পূর্ণ অস্ত যায়।( সুনান আন-নাসায়ী ,৫৬১)

*তাশাহুদ পরিমান বৈঠক করার পর হুদুস অথবা নামাজ ভাঙ্গার কোনো কারণ সংঘটিত হলে উক্ত নামাজ সহীহ হয়ে যাবে।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عن عليِّ بن أبي طالب - رضي الله عنه - إذا جلسَ قدرَ التشهدِ ثم أحدثَ تمَّتْ صلاتُه.

যদি তাশাহহুদ পরিমাণ বৈঠক করে অতঃপর কোন হুদুস সংঘটিত হয় তাহলে তার নামায পূর্ণ হয়ে যাবে। (আল-খুলাসা, ১/৪৫০)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. ফজরের নামাজের ক্ষেত্রে তাশাহুদ পরিমান বৈঠক করার পর নিষিদ্ধ সময় (সূর্যাদয় হলে)  শুরু হলে তাহলে আপনার নামাজ সহীহ হয়ে যাবে। পুনরায় আর কাযা করা লাগবে না। আর যদি তাশাহুদ পরিমান বৈঠক করার আগেই নিষিদ্ধ সময় (সূর্যাদয় হলে) শুরু হলে তাহলে আপনার নামাজ হবে না। পুনরায় আপনাকে উক্ত নামাজ কাযা করতে হবে। কেননা, সুনানে বায়হাক্বীর বর্ণনা থেকে বুঝা যায় যে, এই পাওয়ার অর্থ হল,পরবর্তীতে কা'যা করতে হবে। সূর্যোদয়ের পূর্বে এক রা'কাত পাওয়া গেলে এবং  সূর্যোদয়ের পর এক রা'কাত পাওয়া গেলে উভয় রাকাত তথা নামাযকে কাযা বা ইআদাহ করতে হবে।

জোহরের নামায জোহরের ওয়াক্তে শুরু করার পর শেষ করতে করতে আসরের নামাযের ওয়াক্ত শুরু হয়ে গেলে নামায হয়ে যাবে। কেননা আসরের ওয়াক্ত হারাম ওয়াক্ত নয়। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/471

মাগরীব ও ঈশার নামাজেরও একই হুকুম।

২. আসরের নামাজ মুস্তাহাব ওয়াক্ত আদায় করার চেষ্টা করবে। তবে যদি কোন কারণে ঐ দিনের আসরের নামাজ সূর্য হলুদ হওয়া থেকে সূর্যাস্তের পূর্বেই পড়ে নেই তাহলে তা জায়েয আছে এবং তা মাকরুহও হবে না। তবে সেদিনের আসর ছাড়া অন্য কোন নামাজ উক্ত সময়ে পড়লে তা মাকরুহে তাহরীমী হবে।

যদি নামাজ পড়ার মধ্যেই আসরের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়, তাহলে তার ফরজ নামাজ আদায় হবেনা। পুনরায় উক্ত নামাজ আদায় করতে হবে। তবে ঐ দিনের আছরের নামাজ পড়তে পড়তে যদি সূর্য ডুবে যায়, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। নামাজ আদায় হয়ে যাবে। (কিতাবুন নাওয়াজেল ৪/১৮৭)

৩. জ্বী নামাজ হয়ে যাবে। কারণ, দরুদ ও দুআ মাছুরা পড়া সুন্নাত, ফরজা বা ওয়াজিব নয়। বিধায়, সুন্নাত ছেড়ে দিলে নামাজ ফাসেদ হবে না। তবে ইচ্ছাকৃত ভাবে এরকম করলে সুন্নাতের খেলাফ হবে। কেউ সুন্নাত ছেড়ে দিলে সুন্নাতের সওয়াব থেকে মাহরুম হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...