بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/27553/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ
করা হয়েছে যে, শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পরিপূর্ণ পর্দা করা ফরজ।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
قُلْ
لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ
أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]
وَقُلْ
لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا
يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ
عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ
آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ
بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي
أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ
التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ
الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ
بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى
اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]
মুমিনদেরকে বলুন,
তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের
জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের
যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া
তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে
এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর,
পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা,
ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ,
ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ,
তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ,
তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা
সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}
আল্লাহ তায়ালা
আরো বলেন-
يَا نِسَاءَ
النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا
تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا
مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ
الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
হে নবীর স্ত্রীগণ!
তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী
ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের
মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং
তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত
নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}
وَإِذَا
سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ
أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ
অর্থ : আর তোমরা
তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে
পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর
পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}
বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায়
বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার
আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও
উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ
হলেন সকল মুমিনের মা। অথচ তাঁদের সাথেই লেনদেন বা কথা-বার্তা বলতে হলে পর্দার আড়াল
থেকে করতে বলা হয়েছে। তাহলে অন্যান্য সাধারণ বেগানা নারীদের ক্ষেত্রে হুকুমটি কত গুরুত্বপূর্ণ
হওয়া উচিত তা তো সহজেই অনুমেয়।
সালামের বিষয়ে ‘আল মাউসুআ’তুল ফিকহিয়্যা’-তে এসেছে,
سَلاَمُ
الْمَرْأَةِ عَلَى الْمَرْأَةِ يُسَنُّ كَسَلاَمِ الرَّجُلِ عَلَى الرَّجُلِ
وَرَدِّ السَّلاَمِ مِنَ الْمَرْأَةِ عَلَى مِثْلِهَا كَالرَّدِّ مِنَ الرَّجُلِ
عَلَى سَلاَمِ الرَّجُلِ وَأَمَّا سَلاَمُ الرَّجُلِ عَلَى الْمَرْأَةِ فَإِنْ
كَانَتْ تِلْكَ الْمَرْأَةُ زَوْجَةً أَوْ أَمَةً أَوْ مِنَ الْمَحَارِمِ
فَسَلاَمُهُ عَلَيْهَا سُنَّةٌ وَرَدُّ السَّلاَمِ مِنْهَا عَلَيْهِ وَاجِبٌ بَلْ
يُسَنُّ أَنْ يُسَلِّمَ الرَّجُلُ عَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ وَمَحَارِمِهِ وَإِنْ
كَانَتْ تِلْكَ الْمَرْأَةُ أَجْنَبِيَّةً فَإِنْ كَانَتْ عَجُوزًا أَوِ امْرَأَةً
لاَ تُشْتَهَى فَالسَّلاَمُ عَلَيْهَا سُنَّةٌ وَرَدُّ السَّلاَمِ مِنْهَا عَلَى
مَنْ سَلَّمَ عَلَيْهَا لَفْظًا وَاجِبٌ وَأَمَّا إِنْ كَانَتْ تِلْكَ الْمَرْأَةُ
شَابَّةً يُخْشَى اْلافْتِتَانُ بِهَا أَوْ يُخْشَى افْتِتَانُهَا هِيَ أَيْضًا
بِمَنْ سَلَّمَ عَلَيْهَا فَالسَّلاَمُ عَلَيْهَا وَجَوَابُ السَّلاَمِ مِنْهَا
حُكْمُهُ الْكَرَاهَةُ عِنْدَ الْمَالِكِيَّةِ وَالشَّافِعِيَّةِ وَالْحَنَابِلَةِ
وَذَكَرَ الْحَنَفِيَّةُ أَنَّ الرَّجُلَ يَرُدُّ عَلَى سَلاَمِ الْمَرْأَةِ فِيْ
نَفْسِهِ إِنْ سَلَّمَتْ هِيَ عَلَيْهِ وَتَرُدُّ هِيَ أَيْضًا فِيْ نَفْسِهَا إنْ
سَلَّمَ هُوَ عَلَيْهَا
অর্থাৎ যেমনিভাবে পুরুষ পুরুষকে সালাম দেয়া সুন্নাত, অনুরূপভাবে নারী নারীকে সালাম দেয়া সুন্নাত।
পুরুষ পুরুষের সালামের উত্তর দেয়া এবং নারী নারীর সালামের উত্তর দেয়ার বিধানও অভিন্ন।
তবে পুরুষ নারীকে সালাম দেয়ার ক্ষেত্রে কথা হল, যদি ওই নারী নিজ
স্ত্রী, বাঁদি অথবা মাহরাম হয় তাহলে তাকে সালাম দেয়া সুন্নাত
এবং তার সালামের উত্তর দেয়া ওয়াজিব। বরং সুন্নাত হল, পুরুষ তার
পরিবারকে ও মাহরামকে সালাম দিবে। আর যদি ওই নারী বেগানা হয় তাহলে যদি সে বৃদ্ধা হয়
কিংবা এমন হয় যে, তার প্রতি আকর্ষণ অনুভূত হয় না তাহলে তাকেও
সালাম দেয়া সুন্নাত এবং তার সালামের উত্তর সশব্দে দেয়া ওয়াজিব। পক্ষান্তরে সে যদি যুবতী/তরুণী
হয় যে, তার মাধ্যমে পুরুষ কিংবা পুরুষের মাধ্যমে সে ফেতনায় পড়ার
আশঙ্কা আছে তাহলে তাকে সালাম দেয়া এবং তার সালামের উত্তর দেয়া শাফিঈ মালেকি ও হাম্বলি
মাযহাব মতে মাকরুহ। আর হানাফি মাযহাব মতে বেগানা নারী যদি সালাম দেয় তাহলে পুরুষ মনে
মনে উত্তর দিবে। আর বেগানা পুরুষ যদি সালাম দেয় তাহলে নারী মনে মনে উত্তর দিবে। (আল
মাউসুআ’তুল ফিকহিয়্যা আল কুয়েতিয়া ৬/১৬৬)
ইমাম নববী রহ. বলেন,
وإن كانت
أجنبية يخاف الافتتان بها لم يسلم الرجل عليها ، ولو سلم لم يجز لها رد الجواب ،
ولم تسلم هي عليه ابتداء ، فإن سلمت لم تستحق جواباً
যদি পরনারী এমন হয় যে ,ফিতনার আশঙ্কা আছে তাহলে পুরুষ তাকে সালাম দিবে না। যদি সে সালাম
দিয়ে দেয় তাহলে মহিলা উত্তর দিবে না। আর নারী পরপুরুষকে আগে সালাম দিবে না। যদি সে
সালাম দিয়ে দেয় তাহলে সে উত্তর পাওয়ার উপযুক্ত হবে না। (আলাযকার ৪০৭)
আরো জানুন: https://ifatwa.info/6207/
পরপুরুষের সাথে কোনো বেগানা মহিলার কথা বলার বিশেষ প্রয়োজন
হলে তখন কথার শুরুতে সালাম আদান-প্রদান করতে পারবে। এক্ষেত্রে পর্দার বিষয়ে খুব সতর্ক
থাকতে হবে। এছাড়া পরপুরুষের সাথে কথা বলার যে আদব কুরআন মজীদে আছে তার প্রতি লক্ষ্য
রাখবে। অর্থাৎ কোমলতা পরিহার করে স্বাভাবিকভাবে শুধু প্রয়োজনীয় কথা বলবে। (ফাতাওয়া
তাতারখানিয়া ১৮; আলমুহীতুল
বুরহানী ৮/২৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৯; ফাতাওয়া
হিন্দিয়া ৫/৩২৬; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ৭২) (আংশিক সংগৃহিত)
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদিওবা সে বয়সে ছোট কিন্তু সে বালেগ হওয়ার কারণে তার সাথে বিশেষ জরুরত ছাড়া কথা বলা জায়েয নেই। তবে যদি একান্ত
কোন প্রয়োজনে কথা বলতে হয় তাহলে কন্ঠের কোমলতা পরিহার করে এমন ভাবে কথা বলবে যেন,
সেই বোনের প্রতি সে আকৃষ্ট না হয় এবং যতটুকু
প্রয়োজন ততটুকুই বলবে তার অতিরিক্ত বলবে না।
সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলার কারণে
তাদের গুনাহ হবে যা থেকে তওবা করা তদের উপর আবশ্যক। কিন্তু তা যেনা হবে না।