আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
132 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)

আসসালামু আলাইকুম। 

ধর্মীয় জ্ঞান স্বল্পতা ও আবেগের বশে বিবাহের পূর্বেই একজনকে ভালবেসে যখন গুনাহের বিষয়টা বুঝতে পারি তখন তার সাথেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই। আমার হাজবেন্ড আল্লাহর দয়ায় আমার সমস্ত দায়িত্ব তিনি পালন করছেন বিয়ের পর থেকেই। তিনি প্রবাসী বর্তমানে, ২৪বছর ৮মাস বয়স উনার। 

বিয়ের এখন সাড়ে ৩ বছর বয়স। বিয়ের বিষয়ে ২পরিবার ছাড়া সমাজের আর কেউ জানেনা। আমার পরিবার বিয়েতে রাজি ছিলো। কিন্তু আমার শ্বশুর -শ্বাশুড়ি আর ননাশ আমাকে মেনে নিচ্ছেনা বহুবার বোঝাবার পরও৷  

এখন আমি আমার হাজবেন্ডকে চাপ দিচ্ছি বিয়ের কথা প্রকাশ করার জন্য  কারণ আত্মীয়রা আমার বিয়ে কেন হয়না এসব নিয়ে নানান কথা বলে।

কিন্তু তিনি ৩.৫ বছর হওয়ার পরও আরো সময় চাচ্ছেন ওনার বাবা-মাকে বোঝাতে। কিন্তু তারাও নাছোরবান্দা মানবেনই না।  

আমাদের বিবাহপূর্ব কথাবার্তার জন্য  ইস্তেগফার করি প্রতিদিন।  আমাদের মাঝে যথেষ্ট ভালবাসা আছে আলহামদুলিল্লাহ। আমরা চাই সম্পর্কটা টিকুক আল্লাহর রহমতে। ২জনই যথাসম্ভব ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলি। কিন্তু আমার শ্বশুরবাড়ির তারা চাচ্ছে বিয়েটা না মানতে,এক্ষেত্রে স্বামীও আরো সময় দিতে চায় তাদের । বিষয়গুলো প্রতিনিয়ত ভয় আশংকা মানসিক অস্থিরতায় রাখে আমাকে।  আমি চাই সে প্রকাশ করুক,কিন্তু সে মানতে নারাজ এইসময়,সমাজ নাকি খারাপ ভাববে তার পরিবারকে,নিজে বিয়ে করে ফেলায়।

এখন আমি তাকে কি বলবো,কিভাবে বলবো? বা একমুহূর্তে আমার কি করা উচিৎ?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَعْلِنُوا هَذَا النِّكَاحَ وَاجْعَلُوهُ فِي الْمَسَاجِدِ وَاضْرِبُوا عَلَيْهِ بِالدُّفُوفِ ".

আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বিবাহের ঘোষণা দিবে এবং তা মসজিদে সম্পন্ন করবে। আর এ উপলক্ষ্যে দফ বাজাবে।  সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং- ১০৮৯

 

মাতাপিতার বৈধ আদেশ মানা, তাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক ঘোষনা করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

 

সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল, ২৩) আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/54308/

 

অভিভাবক ছাড়া বিবাহ সংক্রান্ত জানুনঃ https://ifatwa.info/4801/

নিজে নিজে বিয়ে সম্পর্কে আরো জানুন- https://ifatwa.info/2730/

 

মাতাপিতার পরামর্শেই বিয়েতে কল্যাণ নিহিত রয়েছে। সকলের জন্য উচিত হলো  মাতাপিতা এবং পারিবারিক ভাবে প্রশ্নে উল্লেখিত  বিয়ে করা। যেকোনো মেয়েকে/ছেলেকে বিবাহের ক্ষেত্রে পরিবারকে বুঝিয়ে রাজি করানো জরুরি। পারিবারিক ভাবে বিয়ে করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টাকে অব্যাহত রাখা উচিত। আমরা কাউকে পালিয়ে বা গোপন বিয়ের পরামর্শ কখনো দিতে পারিনা।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি আপনার স্বামীকে বিষয়টার ব্যাপারে আরো বুঝান। আপনার সমস্যার কথাটা তাকে আরো ভালো ভাবে বলেন। প্রয়োজনে আপনি আপনার পরিবারের কারোর মাধ্যমেও বুঝাতে পারেন এবং বেশী বেশী আল্লাহ তায়ালার কাছে দুআ করতে থাকুন। বিশেষ করে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়েও দুআ করতে থাকুন। আশা করি আল্লাহ তায়ালা সহজ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...