আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
569 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ শায়েখ!
আমি ইংলিশ ভার্সন থেকে এবার বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষার্থী, ইন শা আল্লাহ।কলেজে হাত-পা মোজা,নিকাব,বোরকা সব পরিধান করা হয় পর্দার সাথে(চোখ ব্যতীত)।পরিবারের একমাত্র মেয়ে আমি,বাসায় যার রোজগারে চলা হয় (আম্মু)তিনি সামনের বছর থেকে অবসরপ্রাপ্ত হয়ে যাবেন এরপর পুরো ফ্যামিলির ভার, উনাদের ট্রিটমেন্ট আরো যাবতীয় খরচ সব আমাকে একা সামাল দিতে হবে।আব্বু আম্মুর চিকিৎসার বেশিরভাগ টাকা দিয়ে আমাকে পড়াচ্ছেন।আমার ব্যক্তিগত ভাবে সহশিক্ষায় স্টাডি কন্টিনিউ করার ইচ্ছেই নেই কিন্ত আব্বু আম্মুর দিকে তাকিয়ে আমাকে একরকম বাধ্য হয়েই পড়তে হচ্ছে।কিন্ত বোর্ড এক্সামে হলে ম্যাজিস্ট্রেট ক্লাসে আসলে বা ক্লাসে গার্ড দেয়া টিচাররা প্রব্লেম করে, কান খুলে বা ফেইস খুলে এক্সাম দেয়ার জন্য নয়ত এক্সাম দিতে দেয়না(ভুক্তভোগী এরকম কয়েকজনের থেকে শুনেছি)।এখন আমার নিজের ভয় হচ্ছে আমার তখন কি করা উচিৎ শায়েখ?মেয়ে গার্ড দিয়ে চ্যাক করালেও চলে যদি আল্লাহ না করুক পুরুষ টিচার খুব সমস্যা তৈরি করে কান খুলে দেখাতে বা মুখ-কান খুলে এক্সাম দিতে নয়ত খাতা নিয়ে নিবে বা অন্য ঝামেলা করলে----তখন একজন মুসলিম হিসেবে আমার কি করা উচিৎ শরীয়াহ দৃষ্টিতে (ইন শা আল্লাহ) ?? আমি এটা নিয়ে খুব ই দুশ্চিন্তায় আছি শায়েখ।
জাযাকাল্লাহু খইরান।

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পরিপূর্ণ পর্দা করা ফরজ।

 মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]

 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

মুমিনদেরকে বলুনতারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুনতারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমানতা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামীপিতাশ্বশুরপুত্রস্বামীর পুত্রভ্রাতাভ্রাতুস্পুত্রভগ্নিপুত্রস্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদীযৌনকামনামুক্ত পুরুষও বালকযারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞতাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করেতারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণতোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা করযাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

 

 আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন-

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান) তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনাযাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহেজাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

 

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

 

বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেনউক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)

 

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ হলেন সকল মুমিনের মা। অথচ তাঁদের সাথেই লেনদেন বা কথা-বার্তা বলতে হলে পর্দার আড়াল থেকে করতে বলা হয়েছে। তাহলে অন্যান্য সাধারণ বেগানা নারীদের ক্ষেত্রে হুকুমটি কত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত তা তো সহজেই অনুমেয়।

আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/10690/  


 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

আপনি যদি ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার্থে জেনারেল শিক্ষা অর্জন করে থাকেন,তাহলে যদি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বিসিএস পরীক্ষায় হাত মুখ কান খোলা বাধ্যতামূলক নিয়ম হয়,তাহলে আপনি  বিসিএস পরীক্ষায় হাত মুখ কান খুলতে পারবেন।

তবে তওবা ইস্তেগফার চালিয়ে যেতে হবে।

(সর্বপরি আপনি মুখ কান হাত খোলা থেকে বিরত থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।)

 

ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থে জাগতিক শিক্ষায় যোগদানকারী বোনদের জন্য এ রুখসত সাময়িকভাবে দেয়া যেতে পারে। হ্যা এ রুখসত জরুরত পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকবে।তবে যদি তা নিশ্চিত কোনো ফিতনার কারণ হয়ে দাড়ানোর আশংকা হয়ে দাড়ায়তাহলে এমতাবস্থায় এ শিক্ষা বিসর্জনই কাম্য।

বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/10690/

ছেলে-মেয়ে একই বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দেওয়া প্রসঙ্গে জানুন- https://ifatwa.info/38708/?show=38708#q38708


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...