আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
390 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (36 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
শায়েখ,
এর আগে অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। জাঝাকাল্লাহু খাইরান।
শায়েখ আমার অরো কিছু প্রশ্নঃ
১।স্ত্রী যদি প্রশাব করার পর পবিত্রতা অর্জন না করে মানে পানি বা টিস্যু /ঢিলা কুলুপ ব্যাবহার না করে  আর ওই অবস্থাতেই স্বামী যদি স্ত্রীর সাথে সহবাস করে তাহলে কি গুনাহ হবে? উল্লেখ্য নামাজের আগে যদি  পবিত্রতা অর্জন করে তাহলে?

২।।স্বামী যদি প্রশাব করার পর পবিত্রতা অর্জন না করে মানে পানি বা টিস্যু /ঢিলা কুলুপ ব্যাবহার না করে  আর ওই অবস্থাতেই স্বামী যদি স্ত্রীর সাথে সহবাস করে তাহলে কি গুনাহ হবে? উল্লেখ্য নামাজের আগে যদি  পবিত্রতা অর্জন করে তাহলে?

৩।স্বামী স্ত্রী সহবাস শুরুর আগে যদি তারা ওযু না করে এবং তারা তাদের লজ্জাস্থানও যদি না ধয় তাহলে কি গুনাহ হবে?

৪।স্বামী স্ত্রী যদি একই সময়ে একাধিকবার সহবাস করার জন্য যদি স্বামী এবং স্ত্রী একবার সহবাস করার পর পর ঠিক তখনি আরেকবার সহবাস করার জন্য যদি স্বামী স্ত্রী উভয়ই ওযু না করে এবং উভয়ই  তাদের লজ্জাস্থান না ধুয়ে আবার সহবাস শুরু করে তাহলে কি গুনাহ হবে?

৫।স্বামী স্ত্রী যেকোন একজনের বা দুইজনেরই যদি একসাথেই স্বপ্নদোষ হয় এবং এর মাধ্যমে যদি তাদের বীর্যপাত হয় আর তখনি যদি তারা জাগ্রত হয় এবং ওযু না করে লজ্জাস্থান না ধুয়ে ফরজ গোসল না করে ওই অবস্থাতেই তারা যদি সহবাস করে তাহলে কি গুনাহ হবে?

৬।স্বামী এবং স্ত্রী তারা যদি একে অপরের লজ্জাস্থান মুখের ভিতরে নেই এবং মুখের ভিতরেই বীর্যপাত করে তারপর যদি তারা বীর্য না খেয়ে মুখ থেকে বীর্য বাইরে ফেলে দেয় তাহলে কি সেটা সরাসরি হারাম হবে? স্বামী স্ত্রীর কি গুনাহ হবে?

৭।স্বামী এবং স্ত্রী একসাথে একাধিক বার সহবাস করার সময় বা যখনি সহবাস করবে তখনি বা প্রতিদিন সহবাস করার পর স্বামী কি প্রত্যেকবার স্ত্রীর যৌনির ভিতরে বীর্যপাত করতে পারবে?

1 Answer

0 votes
by (60,240 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/27540/  নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের দেহ থেকে সব উপায়ে সুখ নেয়ার অনুমতি ইসলামে আছে।

 

তবে এ ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখা বাঞ্ছনীয়। যথাক্রমে-

১- যে উপায়ে সুখ নেয়া হারাম হওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট দলিল আছে, তা পরিহার করতে হবে। যেমন, মলদ্বারে সহবাস এবং ঋতুবতী ও প্রসব পরবর্তী সময়ে নির্গত রক্তস্রাব অবস্থায় সহবাস।

 

২- স্বামী-স্ত্রী পরস্পর থেকে সুখ ভোগ করার সময় ইসলামী শিষ্টাচার ও নীতি-নৈতিকতার প্রতি লক্ষ রাখতে হবে।

 

দুই. এবার আসা যাক, স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের লজ্জাস্থান মুখে দেয়া প্রসঙ্গে।  এ ক্ষেত্রে নিষিদ্ধতার ব্যাপারে কোরআন হাদিসে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় না বিধায় বিষয়টিকে অকাট্য হারাম বলার সুযোগ নেই। তবে এর মাঝে ইসলামী শিষ্টাচার-বহির্ভূত কিছু দিক রয়েছে। যেমন,

 

১. লজ্জাস্থান থেকে নির্গত নাপাক (বীর্য, মযি ইত্যাদি) জিহ্বা, মুখ ইত্যাদিতে লাগবে। আর জরুরত ছাড়া নাপাক স্পর্শ করাকে ফকিহগণ বৈধ মনে করেন না।

 

২. মানুষের শরীরের সবচে’ সম্মানিত অঙ্গ হলো চেহারা। আর লজ্জাস্থান হলো নাপাকির জায়গা। সুতরাং সম্মানিত জায়গাকে নাপাকির জায়গায় স্পর্শ করানো অবশ্যই নিন্দনীয়।

 

৩. মুখ দ্বারা আল্লাহর কালাম তিলাওয়াত করা হয়, যিকির করা হয়। এই মুখে নাপাক লাগানো এবং নাপাকির স্থান চুমো দেয়া বা Suck করা বড় গর্হিত কাজ।

 

৪. মুখের অনেক জীবাণু লজ্জাস্থানে রোগ সংক্রামণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া লজ্জাস্থানের জীবাণু মুখে এবং মুখের ভায়া হয়ে ভেতরে রোগ সংক্রামণ করার আশংকা থাকে। দুর্ঘটনাবশত ধারালো দাঁতও বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

 

এসব কারণে ফকিহগণ এটাকে মাকরুহ বলেছেন। তবে সহবাসের পূর্বে নাপাক না লাগার শর্তে কিছু ফকিহ লজ্জাস্থানে চুমু দেয়ার (লেহন নয়) অবকাশ দিলেও এটাকে পরিহার করাকে উত্তম বলেছেন। যেমন, প্রসিদ্ধ হানাফি ফকিহ বুরহানুদ্দীন মাহমুদ ইবন তাজুদ্দীন রহ. বলেন,

إذا أدخل الرجل ذكره في فم امرأته يكره لأنه موضع قراءۃ القرآن فلا یلیق به إدخال الذکر به

যদি পুরুষ নিজের লজ্জাস্থান স্ত্রীর মুখে প্রবেশ করায় তাহলে তা মাকরুহ হবে। কেননা, মুখ কোরআন তেলাওয়াতের স্থান। সুতরাং এখানে লজ্জাস্থান প্রবেশ করানো অনুচিত।’ (আল্মুহীতুল বুরহানী ৮/১৩৪)

 

আল মাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যা (৯/৩২)– এসেছে,

وصرح الحنابلة بجواز تقبیل الفرج قبل الجماع ، وکراہته بعدہ

হাম্বলি ফকিহগণ স্পষ্টভাবে বলেছেন, সহবাসের পূর্বে হলে স্ত্রীর লজ্জাস্থান চুমো দেয়া জায়েয এবং পরে মাকরুহ।’

*স্বামী তার স্ত্রীর কাছ থেকে ততটুকু মনোরঞ্জনেরই প্রত্যাশা করতে পারে, যতটুকু শরীয়ত বিরোধী নয়। এক্ষেত্রে কোন নির্দিষ্ট বিধান নেই যে, এই কাজ করতে পারবে, বা ঐ কাজ করতে পারবে না।

 

উল্লেখ্য যে, স্ত্রীর যৌনাঙ্গে মুখ দিলে গুনাহ হবে এমন কথা কুরআন-হাদিসে স্পষ্ট না আসলেও বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম একে অপছন্দ করেন।

আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/53864/

আরো জানুন- https://ifatwa.info/6080/

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১-২. জ্বী হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পবিত্রতা অর্জন না করে সহবাস করতে পারবে। এতে কোনো গোনাহ হবে না ইনশাল্লাহ। তবে পবিত্র অর্জন করার পরে সহবাস করা উত্তম।

৩. না, এতে কোনো গোনাহ হবে না।

৪. না এতে কোনো গোনাহ হবে না। তবে মাঝে অযু করে নেওয়া উত্তম।

৫. না, এতে কোনো গোনাহ হবে না।

৬. স্বামী- স্ত্রীর একে অপরের যৌনাঙ্গে মুখ দিলে গুনাহ হবে এমন কথা কুরআন-হাদিসে স্পষ্ট না আসলেও বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম একে অপছন্দ করেন।

৭. জ্বী পারবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (36 points)
আসসালামু আলাইকুম।
শায়েখ,৬. স্বামী- স্ত্রীর একে অপরের যৌনাঙ্গে মুখ দিলে গুনাহ হবে এমন কথা কুরআন-হাদিসে স্পষ্ট না আসলেও বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম একে অপছন্দ করেন।
আলহামদুলিল্লাহ আমি এতটুকু জানি।
কিন্তু শায়েখ,
আমার প্রশ্ন 
 ৬ নং এ আমি বলেছি
৬।স্বামী এবং স্ত্রী তারা যদি একে অপরের লজ্জাস্থান মুখের ভিতরে নেই এবং মুখের ভিতরেই বীর্যপাত করে তারপর যদি তারা বীর্য না খেয়ে মুখ থেকে বীর্য বাইরে ফেলে দেয় তাহলে কি সেটা সরাসরি হারাম হবে? স্বামী স্ত্রীর কি গুনাহ হবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 492 views
...