আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
315 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)

আমি একজন মেডিক্যাল স্টুডেন্ট।  এখানে আমার এটা প্রথম প্রশ্ন ছিলো  এবং হয়তো এখানে এইধরনের প্রশ্ন কেউ করে নাই। যাইহোক প্রশ্ন টা লম্বা হওয়ার জন্য ক্ষমা করবেন এবং আশা করি সঠিক একটা সমাধান দিবেন।  

★★ মেডিক্যাল সায়েন্স এর কথা অনুযায়ী। একজন  পুরুষের লিঙ্গের দৈর্ঘ্য ৩-৪/৫ ইঞ্চি ( স্বাভাবিক অবস্থায়)  হয়।  এবং  উত্তেজিত অবস্থায় কিছুটা বৃদ্ধি  হবে৷ একজন পুরুষ এর লিঙ্গের গড় দৈর্ঘ্য ৫-৫.৫/৬ ( উত্তেজিত অবস্থায়)  ইঞ্চি  এবং  সায়েন্স অনুযায়ী একজন পুরুষ এর লিঙ্গ  উত্তেজিত অবস্থায় সর্বনিম্ন ৩- ৩.৫ ইঞ্চি  হলেও সে একজন মহিলার সাথে পূর্ণ ভাবে মিলামেশা করতে পারবে  এবং বাচ্চা ধারণের জন্য লিঙ্গ দৈর্ঘ্য বিষয় না,  যদি কোনোভাবে বীর্জ মহিলার জরায়ুমুখে দেওয়া যায় তাহলে বাচ্চা ধারণা সম্ভব।  মেডিক্যাল সায়েন্স এর ভাষায়  উত্তেজিত অবস্থায় সর্বনিম্ন ৩ ইঞ্চি লিঙ্গ  হলে সেটা মাইক্রোপেনিস নামে বলা হয়। স্বাভাবিক ভাবে বাংলাতে হয়তো এটা পুরুষ হিজড়া অথবা হিজড়া এর ভিতর ধরা হয়। কিন্তু ইসলামে এটাকে "গায়রে মুশকিল "বলে  ইসলামে হিজড়া বলে তাদেরকে ঘৃনা করে না এবং ইসলামে এই ধরনের অপ্রকৃত পুরুষ হিজড়ার বিয়ে ( অপ্রকৃত মহিলা হিজড়া / স্বাভাবিক মেয়ের সাথে)  বৈধ্য বলা হয় ।  

★★ মূল কথা ★★ ...  আমার ইউনিভার্সিটির এক ভাই  মেডিক্যাল সায়েন্স এর ভাষায় তিনি মাইক্রোপেনিস এর ভিতর অন্তর্ভুক্ত । এবং সেই ভাইয়ের সব কিছু  জানার পরেও একজন স্বাভাবিক মেয়ে তার সাথে সম্পর্কে আবদ্ধ । এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে  যেহেতু ঐ ভাই এর মধ্যে মেয়েলি কোনো চরিত্র ফুটে ওঠে না এবং তার মনোভাব এবং সব কিছু একজন পুরুষের মতো এবং নিজেকে একজন পুরুষ হিসাবেই মনে করেন যদিও মেডিক্যাল সায়েন্স এর ভাষায় তিনি মাইক্রোপেনিস এর ভিতর অন্তর্ভুক্ত।  আমি হুজুরের কাছে জানতে চাই  যে,  সব কিছু জানার পরেও যদি ঐ স্বাভাবিক মেয়ে তাকে বিয়ে করতে ইচ্ছুক হয় এবং ঐ ভাই যদি তাকে বিয়ে করে তাহলে এটা কি হারাম বিয়ে হবে নাকি জায়েজ হবে?
  
উল্লেখ : একজন পুরুষ এর যা যা হয় ঐ ভাই এর ও সেসব  হয় শুধু মাত্র হরমোনের প্রভাবে  লিঙ্গের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়নি ।

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


খুনছায়ে মুশকিলা বলা হয়ঃ

যার কাছে পুরুষ বা মহিলার কোনো আলামত প্রকাশ হয়নি।এবং এটাও জানা যায়নি যে,সে আসলে পুরুষ নাকি মহিলা?

অথবা উভয় আলামত-ই তাতে বিদ্যমান রয়েছে। 

(ক)যার মধ্যে দুটি লিঙ্গই রয়েছে,তবে দুটিই বরাবর। 
(খ)যার মধ্যে কোনো লিঙ্গই নেই।বরং তাতে একটি ছিদ্র রয়েছে।
(গ) যার মধ্যে পুরুষ ও নারীর কোন আলামাতই প্রাধান্য না পায়।

হাদিস শরিফে এসেছেঃ-

عَنﺍﻟْﺤَﺴَﻦُ ﺑْﻦُ ﻛَﺜِﻴﺮٍ , ﺳَﻤِﻊَ ﺃَﺑَﺎﻩُ ، ﻗَﺎﻝَ : ﺷَﻬِﺪْﺕُ ﻋَﻠِﻴًّﺎ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ، ﻓِﻲ ﺧُﻨْﺜَﻰ ، ﻗَﺎﻝَ " : ﺍﻧْﻈُﺮُﻭﺍ ﻣَﺴِﻴﻞَ ﺍﻟْﺒَﻮْﻝِ ، ﻓَﻮَﺭِّﺛُﻮﻩُ ﻣِﻨْﻪُ " 

ভাবার্থঃ-হাসান ইবনে ক্বাসির তার বাবাকে বলতে শুনেছেন,তিনি বলেনঃআমি হযরত আলী রাঃ কে দেখেছি তিনি খুনছা(হিজরা)দের বিষয়ে বলেনঃ তোমরা প্রস্রাব প্রবাহিত হওয়ার স্থান দেখে তাদেরকে (পুরুষ-মহিলা রূপে সাব্যস্ত করো এবং)ওয়ারিছ বানাও।(সুনানে বায়হাক্বী-১১৫৯১)

অন্যত্র বর্ণিত রয়েছে

ﻓﻘﺎﻝ ﻋﻠﻲ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - : ﺇﻥ ﺑﺎﻝ ﻣﻦ ﻣﺠﺮﻯ ﺍﻟﺬﻛﺮ ﻓﻬﻮ ﻏﻼﻡ ، ﻭﺇﻥ ﺑﺎﻝ ﻣﻦ ﻣﺠﺮﻯ ﺍﻟﻔﺮﺝ ﻓﻬﻮ ﺟﺎﺭﻳﺔ .

হযরত আলী রাঃ বলেনঃযদি সে পুঃলিঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে তাহলে সে বালক,আর যদি সে স্ত্রীঃলিঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে তাহলে সে বালিকা।(আসসুনানুল কুবরা-১২১৮৬)

ফাতাওয়ার কিতাবে এসেছেঃ

 وَلَا يَخْلُو الْخُنْثَى مِنْ أَنْ يَكُونَ مُشْكِلًا، أَوْ غَيْرَ مُشْكِلٍ، فَإِنْ لَمْ يَكُنْ مُشْكِلًا بِأَنْ تَظْهَرَ فِيهِ عَلَامَاتُ الرِّجَالِ، فَهُوَ رَجُلٌ لَهُ أَحْكَامُ الرِّجَالِ، أَوْ تَظْهَرَ فِيهِ عَلَامَاتُ النِّسَاءِ، فَهُوَ امْرَأَةٌ لَهُ أَحْكَامُهُنَّ وَإِنْ كَانَ مُشْكِلًا، فَلَمْ تَظْهَرْ فِيهِ عَلَامَاتُ الرِّجَالِ وَلَا النِّسَاءِ (المغنى لابن قدامة-7\208)

সারমর্ম হিজড়া যদি গায়রে মুশকিলা হয়,তাহলে পুরুষের আলামত প্রকাশ পেলে তাকে পুরুষ ধরা।
নারীর আলামত প্রকাশ পেলে তাকে নারীর হুকুম দেওয়া হবে।
আর যদি পুরুষ ও নারীর কোন আলামাতই প্রাধান্য না পায়,তাহলে তাকে ফুক্বাহায়ে কেরাম ‘খুনছায়ে মুশকিল’ বলে উদ্ধৃত করেন। অর্থাৎ এমন হিজড়া যার লিঙ্গ নির্ধারণ সম্ভব নয়।

وَأَمَّا بَيَانُ مَا يُعْرَفُ بِهِ أَنَّهُ ذَكَرٌ، أَوْ أُنْثَى، فَإِنَّمَا يُعْرَفُ ذَلِكَ بِالْعَلَامَةِ، وَعَلَامَةُ الذُّكُورَةِ بَعْدَ الْبُلُوغِ نَبَاتُ اللِّحْيَةِ، وَإِمْكَانُ الْوُصُولِ إلَى النِّسَاءِ وَعَلَامَةُ الْأُنُوثَةِ فِي الْكِبَرِ نُهُودُ ثَدْيَيْنِ كَثَدْيَيْ الْمَرْأَةِ وَنُزُولُ اللَّبَنِ فِي ثَدْيَيْهِ وَالْحَيْضُ وَالْحَبَلُ، وَإِمْكَانُ الْوُصُولِ إلَيْهَا مِنْ فَرْجِهَا؛ لِأَنَّ كُلَّ وَاحِدٍ مِمَّا ذَكَرْنَا يَخْتَصُّ بِالذُّكُورَةِ وَالْأُنُوثَةِ فَكَانَتْ عَلَامَةً صَالِحَةً لِلْفَصْلِ بَيْنَ الذَّكَرِ وَالْأُنْثَى. (بدائع الصنائع، كتاب الخنثى، فصل فى بيان ما يعرف به الخنثى أنه ذكر او انثى-7\327)
সারমর্মঃ
হিজড়ার পুরুষ হবার আলামত হল, দাড়ী উঠা, নারীর সাথে সহবাস করার সক্ষমতা থাকা।
আর নারী হবার আলামত হল, স্তন উঠা, হায়েজ আসা, গর্ভধারণের ক্ষমতা থাকা, দুধ আসা, তার যৌনাঙ্গ দিয়ে সহবাস করা সম্ভম হওয়া ইত্যাদি।

উপরোক্ত আলামত প্রকাশ পায় বালেগ হবার পর। বালেগ হবার আগে পুরুষ নারী বুঝার আলামত হল, তার পেশাবের রাস্তা।
যদি পুরুষালী লিঙ্গ দিয়ে পেশাব করে তাহলে পুরুষ, আর যদি নারী লিঙ্গ দিয়ে পেশাব করে তাহলে নারী। আর যদি দু’টি দিয়েই পেশাব করে, তাহলে পেশাব আগে যে অঙ্গ দিয়ে বের হয়, সেই অঙ্গ হিসেবে নারী পুরুষ নির্ধারিত হবে। অর্থাৎ যদি পেশাব প্রথমে পুরুষাঙ্গ দিয়ে বের হয়, তাহলে পুরুষ আর যদি নারী অঙ্গ দিয়ে বের হয়, তাহলে তাকে নারী ধরা হবে।
আর যদি উভয়টা দিয়ে একই সময়ে বের হয়, তাহলে তাকে খুনছায়ে মুশকিল বলবে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনাদের ইউনিভার্সিটির সেই স্টুডেন্ট মেডিক্যাল সায়েন্স এর ভাষায় মাইক্রোপেনিস এর ভিতর অন্তর্ভুক্ত হলেও শরীয়তের পরিভাষায় তিনি খুনছায়ে মুশকিলাহ নন।
শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে তিনি পুরুষ। 

সুতরাং তিনি যেকোনো মেয়েকে বিবাহ করতে পারেন,এতে কোনো সমস্যা নেই।

★প্রশ্নে উল্লেখিত সেই স্বাভাবিক মেয়েকে বিবাহ করা তার জন্য জায়েজ।
শরীয়াহ দৃষ্টিকোন থেকে এতে কোনো সমস্যা নেই।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...