আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
124 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমার দুটি প্রশ্ন,
১, আমরা অনেক সময় কোনো  ইসলামিক বই / অন্য কোথাও হাদিস উল্লেখ করার পর তার নাম্বার দেখতে পাই, যেমন আমি একটি হাদিস দেখেছি মুস্ললির সামনে দিয়ে অতিক্রম করা প্রশংগে,  যেই বইয়ে তা দেখেছি সেখানে লিখা ছিল সহীহ বুখারি ৫১০, কিন্তু সোলেমানিয়া পাব্লিকেশিনের বুখারি শরীফে ৫১০ নাম্বার হাদিসে সেই হাদিসটি নেই, অন্য একটি হাদিস উল্লেখ করা, শুধু এক্ষত্রেই নয় আমি আগে পরে অন্য ইনেক হাদিসের ক্ষেত্রেই এমিন পেয়েছি, বলা যায় আমি মিল ই পাইনি বুখারি / মুসলিম শরীফের হাদিস নাম্বারের সাথে,,

আমি জানতে চাচ্ছি এই না মেলার কি কোনো কারণ আছে? আমাদের যেকোনো হাদিস যাচাই করার উপায় কি তাহলে?

২, আমার স্বামী ঘুরাঘুরি করার জন্য আমাকে নিয়ে স্থল পথে ইন্ডিয়া যেতে চান, সেক্ষেত্রে ইমিগ্রেশন এর সময় চেহারা দেখার একটা বিষয় আসে, অনেক সময় মহিলা চেক করেন আবার অনেক সময় পুরুষ, আবার নাও করতে পারেন, এ ক্ষেত্রে আমার জন্য এই রিস্ক নিয়ে কি যাওয়া জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (566,160 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
আসলে সিহাহ সিত্তাহ সহ অন্যান্য হাদীসের গ্রন্থে একটি বিষয় আছে,সেটি হলো হাদীসের তাকরার।
তথা একই হাদীস একাধিক বার নিয়ে আসা।
 বিভিন্ন মাসয়ালার অধিনে মাসয়ালার সাথে মিলে যাওয়াতে একই হাদীস যাহা পূর্বেও উল্লেখ করা হয়েছিলো,সেটাই পূনরায় নিয়ে আসা হয়।

আবার অনেক ক্ষেত্রে শুধু সনদের একটু পার্থক্যের দরুন আরেক সনদে সেই একই হাদীস আবারো নিয়ে আসা।

এগুলোর দ্বারা হাদিসের সংখ্যা বেড়ে যায়।

এগুলো হাদীস উল্লেখের ক্ষেত্রে কোনো প্রকাশনী আলাদা আলাদা হাদীসের নাম্বার দেয়না,আবারো কোনো সময় কেহ কেহ স্বয়ংসম্পূর্ণ হাদীস হিসেবেই নাম্বার দেয়।
আবার কেহ উল্লেখই করেনা,তাই হাদীসের কিতাব গুলোতে হাদীসের নাম্বার সংক্রান্ত এসব জটিলতা তৈরি হয়েছে।

★এক্ষেত্রে যেকোনো হাদীস যাচাইয়ের জন্য হাদীসের নাম্বারের পাশাপাশি প্রকাশনীর নামও জেনে নিতে হবে।

(০২)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পরিপূর্ণ পর্দা করা ফরজ।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ   

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]
وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন-

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}
,
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
ইমিগ্রেশন এর ক্ষেত্রে চেহারা দেখানো বাধ্যতামূলক নিয়ম হয়, তাহলে প্রয়োজন বশত সফর হলে আপনি চেহারা দেখাতে পারেন। তবে তওবা ইস্তেগফার চালিয়ে যেতে হবে। 

(সর্বপরি আপনি পুরুষ এর সামনে চেহারা খোলা থেকে বিরত থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। সম্ভব হলে মহিলা দায়ীত্বরতকে উপস্থিত করার চেষ্টা করবেন।)

উল্লেখ্য,যদি সফরটি এমনিইতেই শুধু ঘুরাঘুরির জন্যই হয়,কোনো বিশেষ প্রয়োজন না থাকে,তাহলে শুধুমাত্র এ ধরনের সফরের জন্য জরুরত বিদ্যমান না থাকায় পুরুষদের সামনে চেহারা খোলার অনুমতি নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...