আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
85 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
১.
"নবীজি (সা:) ঘরের কাজে সাহায্য করতেন" এই সম্পর্কিত হাদিসগুলো জানতে চাই।

২.
কেউ যদি সুন্নাহ পালনের উদ্দেশ্যে নেকির আশায় ঘরের কাজ করে, স্ত্রীকে হেল্প করে, তা নিয়ে যদি কেউ হাসে ঠাট্টা করে বউপাগল বউয়ের চাকর এসব বলে,
তার ঈমান থাকবে কিনা?

আমি জানি ইসলামের কোনো বিষয় নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করা ঈমান ভঙ্গের কারণ

৩.
ঈমান ভঙ্গের কারণগুলো উদাহরণসহ জানাবেন প্লিজ।

1 Answer

0 votes
by (679,400 points)
জবাবঃ- 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ أَىُّ شَيْءٍ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصْنَعُ إِذَا دَخَلَ بَيْتَهُ قَالَتْ كَانَ يَكُونُ فِي مِهْنَةِ أَهْلِهِ فَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلاَةُ قَامَ فَصَلَّى . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .

আসওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ (রাহঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়িশাহ্ (রাঃ) কে প্রশ্ন করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে থাকাবস্থায় কি করতেন? তিনি বললেন, তিনি সংসারের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করতেন, তারপর নামাযের সময় ঘনিয়ে এলে তিনি উঠে গিয়ে নামায আদায় করতেন।
(তিরমিজি ২৪৮৯)

وَعَنِ الأَسْوَدِ بنِ يَزيدَ، قَالَ: سُئِلَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللهُ عَنهَا مَا كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصْنَعُ فِي بَيْتِهِ ؟ قَالَت: كَانَ يَكُونُ في مِهْنَةِ أهْلِهِ ـ يَعنِي: خِدمَة أَهلِه ـ فَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلاَةُ، خَرَجَ إِلَى الصَّلاَةِ . رواه البخاري

আসওয়াদ ইবনে ইয়াযীদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে কী কাজ করতেন?’ তিনি বললেন, ‘গৃহস্থালি কাজ করতেন; অর্থাৎ স্ত্রীর কাজে সহযোগিতা করতেন। অতঃপর নামাযের (সময়) হলে তিনি নামাযের জন্য বেরিয়ে যেতেন।’
সহীহুল বুখারী ৬৭৬, ৫৩৬৩, ৬০৩৯, তিরমিযী ২৪৫৮৯, আহমাদ ২৩৭০৬, ২৪৪২৭, ২৫১৮২

وَعَنْ عُرْوَةَ قَالَ سَأَلَ رَجُلٌ عَائِشَةَ هَلْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَعْمَلُ فِي بَيْتِهِ؟ قَالَتْ نَعَمْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَخْصِفُ نَعْلَهُ، وَيَخِيطُ ثَوْبَهُ، وَيَعْمَلُ فِي بَيْتِهِ كَمَا يَعْمَلُ أَحَدُكُمْ فِي بَيْتِهِ رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ مُخْتَصَرًا مِنْ رِوَايَةِ الأَسْوَدِ قُلْت لِعَائِشَةَ مَا كَانَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَصْنَعُ إذَا دَخَلَ بَيْتَهُ؟ قَالَتْ: كَانَ يَكُونُ فِي مِهْنَةِ أَهْلِهِ وَلِلتِّرْمِذِيِّ فِي الشَّمَائِلِ كَانَ بَشَرًا مِنْ الْبَشَرِ يُفَلِّي ثَوْبَهُ وَيَحْلِبُ شَاتَهُ وَيَخْدُمُ نَفْسَهُ

উরওয়াহ বলেন, আয়েশা (রাঃ)-কে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি ঘরে কাজ করতেন?’ তিনি বললেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যান্য মানুষের মত একজন মানুষ ছিলেন; স্বহস্তে কাপড় পরিষ্কার করতেন, দুধ দোহাতেন এবং নিজের খেদমত নিজেই করতেন। অন্যনা্য পুরুষরা যেমন নিজেদের বাড়ীতে কাজ করে, অনুরূপ তিনিও তাঁর কাপড়ে তালি লাগাতেন এবং জুতো সিলাই করতেন।
(সহীহ আদাবুল মুফরাদ ১/২১৫, সহীহুল জামে’ ৯০৬৮)

আরো জানুনঃ- 

(০২)
এক্ষেত্রে তার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৩)
আল্লাহ,রাসুলুল্লাহ সাঃ ও শরীয়তের কোনো জরুরি বিধান নিয়ে হাসি ঠাট্রা করলে ঈমান চলে যায়।
  
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

 قُلْ أَبِاللهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُوْلِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُوْنَ، لاَ تَعْتَذِرُوْا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيْمَانِكُمْ 

‘আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে তাঁর হুকুম-আহকামের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? ছলনা কর না, ঈমান আনার পর তোমরা যে কাফির হয়ে গেছ’ (তওবা ৬৫-৬৬)। 

 فَنَذَرُ الَّذِيْنَ لاَ يَرْجُوْنَ لِقَاءَنَا فِيْ طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُوْنَ 

‘সুতরাং যারা আমার সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে না, আমি তাদেরকে তাদের দুষ্টামীতে ব্যতিব্যস্ত করে রাখি’ (ইউনুস ১১)। 

এ ধরনের লোকদের সাথে উঠাবসা, চলাফেরা ত্যাগ করতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা উক্ত আচরণ পরিত্যাগ না করে। 

وَقَدْ نَزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا سَمِعْتُمْ آيَاتِ اللهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَهْزَأُ بِهَا فَلاَ تَقْعُدُوْا مَعَهُمْ حَتَّى يَخُوْضُوْا فِيْ حَدِيْثٍ غَيْرِهِ إِنَّكُمْ إِذًا مِثْلُهُمْ إِنَّ اللهَ جَامِعُ الْمُنَافِقِيْنَ وَالْكَافِرِيْنَ فِيْ جَهَنَّمَ جَمِيْعًا-
‘আর কুরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারী করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহর আয়াত সমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রূপ করতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে। অন্যথা তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ মুনাফিক ও কাফিরদেরকে জাহান্নামে একই জায়গায় সমবেত করবেন’ (নিসা ১৪০)। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★ঈমান ভঙ্গের অন্যতম মৌলিক কারণগুলোঃ-

★আল্লাহর ইবাদতের ক্ষেত্রে কাউকে শরিক করা।
শিরক দুই প্রকার: এক. শিরকে জলী, দুই. শিরকে খফী। শিরকে জলী সবচেয়ে মারাত্মক। শিরকে জলীর অনেক প্রকার রয়েছে। 
যেমন ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি। 

আরো জানুনঃ- 

★দ্বীনের কোনো বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা।

★জাদু করা বা কুফরি কালাম করা। 

★নবি (সা.)’র ফয়সালার তুলনায় অন্য কারও ফয়সালাকে উত্তম মনে করা।

★মুহাম্মাদ (সা.) আনীত কোনো বিধানকে অপছন্দ করা।

★কুরআন, হাদীস,আল্লাহ,রাসুলুল্লাহ সাঃ কে নিয়ে হাসি ঠাট্রা করা।

★কুরআনের কোনো আয়াত অস্বীকার করা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...