আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
220 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (84 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম,

১- ওয়াকিদ নামের  ইসলামিক অর্থ কি?

২- সিনান নামের ইসলামিক অর্থ কি?

৩- হিশাম নামের ইসলামিক অর্থ কি?

৪- ওয়াকিদ সিনান অথবা ওয়াকিদ হিশাম নাম কি রাখা যাবে? এই নামগুলো কেমন হবে?

৫- নাম রাখার ক্ষেত্রে কি কি বিষয় লক্ষ্য রাখা উচিত?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


ভালো নাম রাখা পিতা-মাতার সর্বপ্রথম দায়িত্ব। আমরা এভাবেও বলতে পারি যে, পিতা-মাতার উপর সন্তানের সর্বপ্রথম হক হচ্ছে, তার জন্য সুন্দর নাম নির্বাচন করা।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ও  আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

من حق الولد على الوالد أن يحسن اسمه ويحسن أدبه.

অর্থ : সন্তানের সুন্দর নাম রাখা ও তার উত্তম তারবিয়াতের ব্যবস্থা করা বাবার উপর সন্তানের হক। -মুসনাদে বাযযার (আলবাহরুয যাখখার), হাদীস ৮৫৪০

হযরত আবুদ দারদা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إِنّكُمْ تُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَسْمَائِكُمْ، وَأَسْمَاءِ آبَائِكُمْ، فَأَحْسِنُوا أَسْمَاءَكُمْ.

কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে ডাকা হবে তোমাদের ও তোমাদের বাবার নাম নিয়ে (অর্থাৎ এভাবে ডাকা হবে- অমুকের ছেলে অমুক)। তাই তোমরা নিজেদের জন্য সুন্দর নাম রাখ। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯৪৮
,
আরো জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
(০১)
ওয়াকিদ নামের অর্থ “উজ্জ্বল”, “প্রজ্বলিত” 
"ওয়াকিদ ইবনে আব্দুল্লাহ" একজন ছাহাবার নাম।

(০২)
سِنَان ج أَسِنَّة [سنن]
[সিনান] শব্দের অর্থঃ-
বল্লমের অগ্রভাগ,বর্শার ফলা।

(০৩)
هِشَام
[হিশাম] শব্দের অর্থঃ-
বদান্যতা.উদারতা.দানশীলতা।

(০৪)
ওয়াকিদ সিনান অথবা ওয়াকিদ হিশাম নাম রাখা যাবে।

এর মধ্যে ওয়াকিদ হিশাম নামটি বেশি ভালো হবে।

(০৫)
ইসলাম আমাদেরকে যেমন সুন্দর নাম রাখার নির্দেশ দিয়েছে, সুন্দর নামের মাপকাঠিও এখানে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিম্নোক্ত হাদীসটি উল্লেখযোগ্য

تَسَمّوْا بِأَسْمَاءِ الْأَنْبِيَاءِ، وَأَحَبّ الْأَسْمَاءِ إِلَى اللهِ عَبْدُ اللهِ، وَعَبْدُ الرّحْمَنِ، وَأَصْدَقُهَا حَارِثٌ، وَهَمّامٌ، وَأَقْبَحُهَا حَرْبٌ وَمُرّةُ.

তোমরা নবীদের নামে নাম রেখো। আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় নাম আবদুল্লাহ ও আবদুর রহমান। সবচেয়ে সত্য নাম হারেস ও হাম্মাম আর সবচেয়ে খারাপ নাম হারব ও মুররাহ। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯৫২

সুতরাং নবীদের নাম,ছাহাবায়ে কেরামদের নাম,ছালফে সালেহীন,বুযুর্গ ব্যাক্তিদের নামে নাম করন করা উত্তম।
উত্তম অর্থ বিশিষ্ট নাম রাখা উচিত।

★যে ধরনের নাম রাখা হারাম : আল্লাহর নাম নয় এমন কোনো শব্দের সঙ্গে গোলাম বা আব্দ (বান্দা, দাস) শব্দ যুক্ত করে নাম রাখা হারাম। (হাশিয়াতু ইবনে আবেদীন : ৫/২৬৮)

যেমন—আব্দুশ শামস (সূর্যের দাস), আব্দুল কামার (চন্দ্রের দাস), আব্দুল মোত্তালিব (মোত্তালিবের দাস), আব্দুল কালাম (কথার দাস), আব্দুন নবী (নবীর দাস), গোলাম রাসুল (রাসুলের দাস), গোলাম নবী (নবীর দাস), আব্দুল আলী (আলীর দাস), আব্দুল হোসাইন (হোসাইনের দাস), গোলাম মুহাম্মদ (মুহাম্মদের দাস), গোলাম আব্দুল কাদের (আব্দুল কাদেরের দাস) ইত্যাদি।

★মানুষ যে উপাধির উপযুক্ত নয় অথবা যে নামের মধ্যে মিথ্যাচার রয়েছে কিংবা অসার দাবি রয়েছে এমন নাম রাখাও হারাম। শাহেনশাহ (জগতের বাদশাহ), মালিকুল মুলক (রাজাধিরাজ) এসব শব্দ নাম বা উপনাম হিসেবে নির্বাচন করা অবৈধ। অনুরূপভাবে যে নামগুলো আল্লাহর জন্য খাস, সেসব কোনো নাম মানুষের জন্য রাখা হারাম।

★যে ধরনের নাম রাখা মাকরুহ : যেসব নামের মধ্যে আত্মস্তুতি পরিলক্ষিত হয় সেসব নাম রাখা মাকরুহ। যেমন,মুবারক (বরকতময়) যেন এ ব্যক্তি নিজেই দাবি করছেন যে তিনি বরকতময়, অথচ প্রকৃত অবস্থা সম্পূর্ণ উল্টোও তো হতে পারে। দাম্ভিক ও অহংকারী শাসকদের নামে নাম রাখা মাকরুহ। যেসব নামের অর্থ মন্দ,মানুষের স্বাভাবিক রুচিবোধ যেসব শব্দকে নাম হিসেবে ঘৃণা করে, ভদ্রতা ও শালীনতার পরিপন্থী কোনো শব্দ নাম হিসেবে নির্বাচন করা মাকরুহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...