আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
5,926 views
in দাফন ও জানাজা (Burial & Janazah) by (122 points)
আমাদের কোন আত্মীয় মারা গেলে তাদের জন্য  জন্য আমরা ১ বার সূরা ইয়াসীন পড়ে দোওয়া করি অথবা  ১ বার সূরা ফাতিহা আর 3 বার সূরা ইখলাস পড়ে দোয়া করি। এটা আমরা কবরের সামনে বসে করি না বরং দূর থেকে করি । তার রুহের মাগফিরাতের জন্য।
এই আমলটি কি সহি কিনা  দলিলসহ উল্লেখ করলে ভালো হয়।

1 Answer

+1 vote
by (589,140 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-
কুরআনে কারীম মানব জাতির জন্য শে'ফা স্বরূপ নাযিল হয়েছে।বাহ্যিক ও অন্তর্গত সকল বিষয়ে কুরআনে কারীম মানব জাতির জন্য কল্যাণকর। 
কুরআনে কারীম যেভাবে একজন মানুষকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোর পথে নিয়ে আসতে পারে। ঠিকতেমনি বাহ্যিক অসুস্থতাকে সুস্থতায় পরিণত করে দিতেও পারে।
কুরআনে কারীম মূত্যুর পরও কাজ দিবে।অর্থাৎ আল্লাহর হুকুমে তেলাওয়াতকারীকে করব জগতের আ'যাব থেকে রক্ষা করবে।এবং যাকে তেলাওয়াতের সওয়াব পৌছানো হবে,তাকেও পরকালের আযাব থেকে আল্লাহর হুকুমে মুক্তি দেয়া হবে।

মোটকথাঃ
ঈসালে সওয়াব(কাউকে সওয়াব পৌছিয়ে দেয়া) হিসেবে কুরআনে কারীম তেলাওয়াত করা যাবে।তবে এক্ষেত্রে বিনিময় গ্রহণ করা যাবে না।তবে হ্যা দুনিয়াবি প্রয়োজন হিসেবে চিকিৎসা স্বরূপ বিনিময়ের সাথে কুরআন তেলাওয়াত করা যাবে।আরো জানতে ভিজিট করুন-১০১৪

যেমন হাদীসে এসেছে,
قال صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( إِذَا مَاتَ الْإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلا مِنْ ثَلاثَةٍ : إِلا مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ ، أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ ، أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ )
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যখন মানুষ মারা যায়,তখন তার সমস্ত আ'মল বন্ধ হয়ে যায়,তবে তিনটি আ'মলের সওয়াব তার নিকট পৌছে।(১)সদকায়ে জারিয়া।(২)ফায়দা দায়ক ইলম(৩)নেককার সন্তান যে ঐ ব্যক্তির জন্য দু'আ করবে।(সহীহ মুসলিম-১৬৩১)

হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত,
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺇﺳﻤﺎﻋﻴﻞ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﻲ ﻣﺎﻟﻚ ﻋﻦ ﻫﺸﺎﻡ ﺑﻦ ﻋﺮﻭﺓ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﺃﻥ ﺭﺟﻼ ﻗﺎﻝ ﻟﻠﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺇﻥ ﺃﻣﻲ ﺍﻓﺘﻠﺘﺖ ﻧﻔﺴﻬﺎ ﻭﺃﺭﺍﻫﺎ ﻟﻮ ﺗﻜﻠﻤﺖ ﺗﺼﺪﻗﺖ ﺃﻓﺄﺗﺼﺪﻕ ﻋﻨﻬﺎ ﻗﺎﻝ ﻧﻌﻢ ﺗﺼﺪﻕ ﻋﻨﻬﺎ-
তরজমাঃএকব্যক্তি নবীজী সাঃ কে এসে বললঃআমার মা হঠাৎ মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছেন,আমি মনে করি যদি তিনি কথা বলতেন,তাহলে তিনি সদকা করতেন,আমি তার পক্ষ্য থেকে কি সদকা করতে পারব?নবীজী সাঃ তদুত্তরে বললেনঃহ্যা পারবে।তুমি তার পক্ষ্য থেকে সদকা কর।(সহীহ বুখারী-২৬০৯) বিস্তারিত জানুন-৫২২৭

নফল ইবাদত তথা নফল হজ্ব ও উমরা সহ ঋণ পরিশোধ সবকিছুই মৃত ব্যক্তির নিকট পৌছে।
ঈসালে সওয়াব সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-১০৪৪


কুরআন কারীমের বিভিন্ন সূরা দ্বারা ঈসালে সওয়াবের কথা হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।
(১)
সূরা ইয়াসিন সম্পর্কে একটি হাদীসে বর্ণিত রয়েছে যে,
মা'ক্বাল ইবনে ইয়াসার রাযি থেকে বর্ণিত,
وَعَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ الْمُزَنِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - قَالَ: " «مَنْ قَرَأَ يس ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللَّهِ - تَعَالَى - غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ، فَاقْرَءُوهَا عِنْدَ مَوْتَاكُمْ» " رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ.
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে,তার অতীতের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে।সুতরাং তোমরা মৃত/মুমূর্ষু ব্যক্তির সম্মুখে সূরা ইয়াসিন পাঠ করো।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২১৭৮,সুনানু আবি-দাউদ-২/৪৪৫)

মোল্লা আলী ক্বারী রাহ, উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় লিখেন,
فاقرءوها عند موتاكم "، أي مشرفي الموت أو عند قبور أمواتكم، فإنهم أحوج إلى المغفرة، وقال الطيبي: الفاء جواب شرط محذوف، أي إذا كانت قراءة يس بالإخلاص تمحو الذنوب، فاقرءوها عند من شارف الموت حتى يسمعها ويجريها على قلبه فيغفر له ما قد سلف اهـ ويمكن أن يراد بالموتى الجهلة أو أهل الغفلة
হাদীসের অর্থ হল,মুমূর্ষু ব্যক্তি বা কবরের সম্মুখে সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করো।কেননা এরাই সবচেঁয়ে বেশী মাগফিরাতের মুহতাজ।ইমাম তিবী রাহ বলেন,যেহেতু সূরা ইয়াসিন গোনাহ সমূহকে মিটিয়ে দেয়,তাই মুমূর্ষু ব্যক্তির সামনে তোমরা সূরা ইয়াসিনকে তেলাওয়াত করো।যাতে করে ঐ মুমূর্ষু ব্যক্তি শ্রবণ করে জবান দ্বারা উচ্ছারণ করতে পারে।অতঃপর আল্লাহ চাহে তো তার সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। অথবা হাদীসে মৃত ব্যক্তি দ্বারা উদ্দেশ্য হলো,গাফেল বা জাহিল ব্যক্তি।তখন অর্থ হবে,তোমরা গাফেল বা জাহিল ব্যক্তির সম্মুখে কোরআনে কারীমকে তেলাওয়াত করো।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-১৬৫৫ 

(২)
হযরত আলী রাযি থেকে বর্ণিত
عن علي رضي اللّٰه عنه مرفوعا: من مر على مقابر ،وقرأ قل هو اللّٰه احد إحدى عشرة مرة ثم وهب أجره للاموات أعطى من الاجر بعدد الأموات 
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম কালে ১১বার সূরা ইখলাছ পাঠ করে তার সওয়াব সমস্ত মাইয়্যিতকে প্রদান করবে,তাকে উক্ত গোরস্থানের মৃতদের সংখ্যা অনুযায়ী সওয়াব দেয়া হবে।(এ'লাউস সুনান-হাদীস নং২৩২,৮/৩৩০)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
 عن أبي هُرَيْرَة قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم:  من دخل الْمَقَابِر ثمَّ قَرَأَ فَاتِحَة الْكتاب، و ( قل هُوَ الله أحد )، و ( أَلْهَاكُم التكاثر )،  ثمَّ: اللَّهُمَّ إِنِّي جعلت ثَوَاب مَا قَرَأت من كلامك لأهل الْمَقَابِر من الْمُؤمنِينَ وَالْمُؤْمِنَات ؛ كَانُوا شُفَعَاء لَهُ إِلَى الله تَعَالَى .
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি কবরস্থানে প্রবেশ করে,সূরায়ে ফাতেহা,সূরায়ে ইখলাছ,সূরায়ে তাকাছুর পড়ে অতঃপর বলবেন,হে আল্লাহ!
আমি আমার তিলাওয়াতের সওয়াব উক্ত কবরস্থানের সকল মু'মিন বান্দা বান্দীদের জন্য দিয়ে দিলাম।তাহলে তারা তার জন্য আল্লাহর নিকট সুপারিশ করবে।(এ'লাউস সুনান-২৩২১)

সনদ বিবেচনায় কিছু সংখ্যক মুহাদ্দিস উক্ত হাদীসদ্বয়কে যঈফ বলেছেন।যঈফ হাদীস আ'মলের বেলায় গ্রহণযোগ্য। বিস্তারিত জানুন-984

যিনি কুরআন তিলাওয়াত করে সওয়াব পাঠিয়ে দিবেন।তিনি কি সওয়াব পাবেন?
উপরের আবু হুরায়রা রাযি এর হাদীস থেকে জানতে পারলাম যে,এর সওয়াব তিলাওয়াতকারীও পাবে, যেভাবে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির নিকট সওয়াব পৌছে থাকে।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সমস্ত কুরআনই জীবিতদের জন্য শি'ফা ও সমাধান স্বরূপ এবং মৃতদের জন্য মাগফিরাত ও নাজাতের উসিলা স্বরূপ।

মৃতদের জন্য কুরআনের কোন অংশ বা কোন সূরা পড়তে হবে?
এ সম্পর্কে বলা যায় যে,
মৃত ব্যক্তির জন্য কুরআনে কারীমের যে কোনো অংশ পড়ে দু'আ করা যেতে পারে।কোরআনের কোনো অংশ নির্দিষ্ট নয়।তবে যেহেতু সওয়াব প্রেরণের জন্য তিলাওয়াত করা হয়ে থাকে,তাই আমাদের উচিৎ সম্ভব হলে সমস্ত কুরআন পড়ে সওয়াব বখশিয়ে দেয়া।সম্ভব না হলে বেশী সওয়াব প্রেরণ করা যায়,এমন কোনো ব্যবস্থা করা।
যদি আমরা হাদীসের দিকে তাকাই,তাহলে কুরআনের কিছু সূরা দেখব,যেগুলোর ফযিলত ও সওয়াব অনেক বেশী।

যেমন,
এবং সূরা ইখলাছ সহ আরো কিছু সূরার ফযিলত বর্ণিত রয়েছে, হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «إِذَا زُلْزِلَتْ تَعْدِلُ نِصْفَ الْقُرْآنِ، وَقُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ تَعْدِلُ ثُلُثَ الْقُرْآنِ، وَقُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ تَعْدِلُ رُبْعَ الْقُرْآنِ» "
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,সূরা যিলযাল অর্ধেক কুরআনের সমতুল্য। সূরা ইখলাছ কুরআনের এক তৃতীয়াংশ। সূরা কাফিরুন কুরআনের এক চতুর্থাংশের সমতুল্য। (সুনানু তিরমিযি-২৮৯৪,মিশকাত-২১৫৬)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: «إِنَّ سُورَةً فِي الْقُرْآنِ ثَلَاثُونَ آيَةً شَفَعَتْ لِرَجُلٍ حَتَّى غُفِرَ لَهُ وَهِيَ تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ» " رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ.
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,কুরআনের একটি সূরা যেটাতে ত্রিশটি আয়াত রয়েছে।যা বান্দাকে সুপারিশ করে ক্ষমা করিয়ে নিবে।সেটা হল,সূরা মুলক।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২১৫৩)

হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «أَلَا يَسْتَطِيعُ أَحَدُكُمْ أَنْ يَقْرَأَ أَلْفَ آيَةٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ؟ " قَالُوا: وَمَنْ يَسْتَطِيعُ أَنْ يَقْرَأَ أَلْفَ آيَةٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ؟ قَالَ: " أَمَا يَسْتَطِعُ أَحَدُكُمْ أَنْ يَقْرَأَ أَلْهَكُمُ التَّكَاثُرُ؟» " رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ.
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,কে আছে এমন যে,প্রতিদিন এক হাজার আয়াত পড়তে পারবে?সাহাবারা আরজ করলেন,কার এমন তাওফিক হবে যে,সে প্রতিদিন এক হাজার আয়াত পড়তে পারবে?
রাসূলুল্লাহ সাঃ তখন বললেন,কেন পারবে না।সে কি সূরা তাকাছুর তিলাওয়াত করতে পারবে না।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২১৮৪)

তাবেয়ী আইফা উবনে আব্দুল কেলায়ী রাহ থেকে বর্ণিত
وَعَنْ أَيْفَعَ بْنِ عَبْدٍ الْكَلَاعِيِّ قَالَ:«قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيُّ سُورَةِ الْقُرْآنِ أَعْظَمُ؟ قَالَ: " قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ " قَالَ: فَأَيُّ آيَةٍ فِي الْقُرْآنِ أَعْظَمُ؟ قَالَ: " آيَةُ الْكُرْسِيِّ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ " قَالَ: فَأَيُّ آيَةٍ يَا نَبِيَّ اللَّهِ تُحِبُّ أَنْ تُصِيبَكَ وَأُمَّتَكَ؟ قَالَ: " خَاتِمَةُ سُورَةِ الْبَقَرَةِ فَإِنَّهَا مِنْ خَزَائِنِ رَحْمَةِ اللَّهِ - تَعَالَى - مِنْ تَحْتِ عَرْشِهِ أَعْطَاهَا هَذِهِ الْأُمَّةَ، لَمْ تَتْرُكْ خَيْرًا مِنْ خَيْرِ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ إِلَّا اشْتَمَلَتْ عَلَيْهِ» " رَوَاهُ الدَّارِمِيُّ.

এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে এসে বলল,ইয়া রাসূলাল্লাহ! কুরআনের কোন সূরা মর্যাদর দিক দিয়ে বড়? রাসূলুল্লাহ সাঃ জবাবে বললেন,সূরায়ে ইখলাছ।অতঃপর ঐ ব্যক্তি বলল,কুরআনের কোন আয়াত বড়? রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,আয়াতুল কুরসি।অতঃপর ঐ ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল,কোন আয়াত আপনি আপনার জন্য এবং আপনার উম্মতের জন্য পছন্দ করেন? রাসূলুল্লাহ সাঃ জবাবে বললেন,সূরা বাকারার শেষ আয়াত।কেননা এগুলো হল,আরশের খাযানাহ।আরশের খাযানা থেকে আল্লাহ এই উম্মতকে দান করেছেন।দুনিয়া আখেরাতের সকল প্রকার খায়ের ও বরকত এই আয়াতের মধ্যে শামিল রয়েছে।(মিশকাত-২১৬৯)

হযরত উছমান ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আউস আস-সাক্বাফী উনার দাদার সুত্রে বর্ণনা করেন,
وَعَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَوْسٍ الثَّقَفِيِّ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «قِرَاءَةُ الرَّجُلِ الْقُرْآنَ فِي غَيْرِ الْمُصْحَفِ أَلْفُ دَرَجَةٍ، وَقِرَاءَتُهُ فِي الْمُصْحَفِ تُضَعَّفُ عَلَى ذَلِكَ إِلَى أَلْفَيْ دَرَجَةٍ» ".
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,কুরআন তিলাওয়া মুসহাফ না দেখে পড়লে হাজার সওয়াব মিলবে।তবে মুসহাফ দেখে দেখে পড়লে দুই হাজার সওয়াব মিলবে।(মিশকাত-২১৬৭)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মৃত ব্যক্তি চায় নিকটাত্মীয় হোক বা অপরিচিত হোক,যে কারো জন্য ঈসালে সওয়াব করা যায়।ঈসালে সওয়াব কয়েকভাবে করা যায়।যথাঃ-
(১)দু'আর মাধ্যমে ঈসালে সওয়াব।
(২)মাল খরচের মাধ্যমে ঈসালে সওয়াব।যেমন,দান খায়রাত,নফল কুরবানি ইত্যাদি।
(৩)মাল খরচ ও শারিরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে ঈসালে সওয়াব।যেমন,নফল হজ্ব,উমরাহ ইত্যাদি দ্বারা ঈসালে সওয়াব।
(৪)শারিরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে ঈসালে সওয়াব।যেমন,কুরআন তিলাওয়াত,নফল নামায ইত্যাদি।

সবগুলো দ্বারাই মৃত ব্যক্তির নিকট সওয়াব পৌছে থাকে।কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই ফুকাহাদের মতবিরোধ রয়েছে।

কুরআন তিলাওয়াত করে সওয়াব পৌছানো যায়,এক্ষেত্রে সম্ভব হলে সমস্ত কুরআন বা যা সহজ হয়,সেই পরিমাণ তিলাওয়াত করে সওয়াব পৌছানো যায়।তবে বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ সূরা তিলাওয়াত করাই কাম্য।

সুতরাং আপনারা যে সূরা সমূহ তিলাওয়াত করছেন।সেটা অবশ্যই ঠিক আছে। তবে এক্ষেত্রে কোনো বাধ্যবাধকতাকে জায়গা দেয়া যাবে না।

আপনারা এভাবে নিয়ম রাখতে পারেন।
আপনারা ঘোষণা করে দিবেন,
আমরা অমুকের ঈসালে সওয়াব করবো।
উপরোক্ত চারটি ত্বরিকার যে তরিকা আমাদের জন্য সহজ হয় সেটাই আমরা করবো।
যদি আমরা কুরআন তিলাওয়াত দ্বারা ঈসালে সওয়াব করার মনস্থ করি, তাহলে আমাদের জন্য করণীয় হল,
আমাদের মধ্য থেকে যার সম্ভব হবে,সে যেন সমস্ত কুরআন তিলাওয়াত করে।অথবা যার জন্য যতটুকু সহজ হয়,সে যেন ততটুকুই তিলাওয়াত করে।

যদি সমস্ত কুরআন পড়া কারো জন্য সম্ভব না হয়,তাহলে কমপক্ষে যেন আমরা নিম্নের ফযিলতপূর্ণ সূরা সমূহকে তিলাওয়াত করি।
(১)সূরা ফাতেহা ১ বার।
(২)সূরা ইয়াসিন ১ বার।
(৩)সূরা ইখলাছ ১১ বার।
(৪)সূরা তাকাছুর ১বার।
(৫)সূরা যিলযাল ১ বার।
(৬)সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত একবার।
(৭)সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত ১ বার।
(৮) সূরা মুলক ১ বার।
(৯)আয়াতুল কুরসি ১ বার।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...