আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
96 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (18 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম

প্রশ্ন১ )২/৩ মাস আগের ঘটনা। তা*** বিষয়ক মাসায়ালা বেশি পড়তাম বা ইউটিউব ,গুগলে সার্চ দিতাম। সারাক্ষন এগুলো মাথায় ঘুরঘুর করতো।একবার অথবা দুইবার সিউর না ঠিক কতবার তবে একা ছিলাম সাথে কেউ ছিলোনা, মাসায়েল পড়তে পড়তে বা চিন্তা করতে করতে আমার মুখ ফসকে মাসায়েল আমি উচ্চারন করে  ফেলেছিলাম বোধহয়।আর মুখ ফসকে কি উচ্চারন করে বলেছিলাম নাকি ঠোট নাড়িয়ে শব্দ না করে পড়েছিলাম সেটাও নিশ্চিত না।  ঠিক কিভাবে বলেছিলাম মনে নেই যথাসম্ভব এই ভাবে হতে পারে,এখানে আইডিয়া করে কথা উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি।কিন্তু তখন কিভাবে বলেছি সেটা সিউর না।তবে মাসায়েল এর আকারেই বলেছিলাম এবং স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলিনি এটা  ১০০পারসেন্ট সিউর।

*" আমি তোমাকে তা*** দিলাম ,(তারপর একটু থেমে ১ সেকেন্ড বা ২ সেকেন্ড হতে পারে মনে নেই ) মানে এটা বললে হয়ে যাবে আর যদি দিবো বলে তাহলে হবে না"

অথবা ,
*"আমি তোমাকে তা*** দিলাম এটা কখনো স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলা যাবে না ,আর দিবো বললে সমস্যা নেই।"

অথবা"

"যদি কেউ ----- দিলাম বলে হয়ে যাবে , দিবো বললে হবেনা"

অথবা শুধু

*"আমি তোমাকে ****** দিলাম "  ( এটার ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ আছে ,এটা বলেছি কিনা।আমার মনে হয়না এটা বলেছি কখনো )

তবে ১০০ ভাগ সিউর যে স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলিনি ।তখন স্ত্রীর কথা মনেও ছিলোনা।এতদিন সিউর ছিলাম যে কোন সমস্যা হবে না কারন এটার মাসয়ালা আমি জানতাম যে মাসায়ালা বাড়বাড় পড়লে স্ত্রীকে উদ্দেশ্য না করে বললে কোন সমস্যা হবেনা। আমি জানি শয়তান এই ব্যাপারে আমাকে ওয়াসওয়াসা দিবেই দিবে। তাই শয়তানের ওয়াসওয়াসার কারনে প্রশ্ন করে রাখলাম যাতে ভবিষ্যতে শয়তান ধোকা দিলে উত্তর টা দেখে নিতে পারি কারন এখন প্রচন্ড ওয়াসওয়াসার রোগ । ঘটনার সময় ওয়াসওয়াসা তেমন প্রচন্ড আকারে ছিলোনা তাই উদ্দেশ্যের ব্যাপারে শতভাগ সিউর।

*আমার প্রচন্ড রকমের ওয়াসওয়াসার সমস্যা আছে।*

রিসেন্টলি অনেকবার কয়েকটি ফতোয়ায় আমাকে ওয়াসওয়াসা রোগী হিসেবে ফতোয়া দেয়া হয়েছিলো https://ifatwa.info/55711/
আজকের ঘটনা

প্রশ্ন ২)** সূরা ফালাক পড়ার সময় " মিন শাররি মা খলাক " পড়ার সময় ওয়াসওয়াসা আসে আমার। আর ওয়াসওয়াসা আসলেই আমি ভয়ে মনে মনে বা উচ্চারন করে বলতাম আমার কোন নিয়ত নেই। আজকে যতবার "খলাক " পড়ার সময় ওয়াসওয়াসা আসছে ততবার আমি মনে মনে  কোন নিয়ত করিনি । আমি সিউর আমি "খলাক" ই বলছি অন্য কিছু বলিনি আর এটার বলার দারা আমার কিচ্ছু হবেনা।পাত্তা না দিয়ে অনেকবার পড়েছি।আমি কি ঠিক করেছি ?

প্রশ্ন ৩)কাগজের মধ্যে 54 লিখেছিলাম ,মানে 54 ইঞ্চি জানালার লম্বার মাপ। তারপর আমার মনের মধ্যে নিজের সাথে আর মনের কথা শুরু হয়। মনের মধ্যে প্রশ্ন আসে 54 কি ? আমি মনে মনে উত্তর দেই 54 ইঞ্চি। আবার মনে একই প্রশ্ন আসে 54 কি? আমি মনে মনে আবারো 54 ইঞ্চি বলতে গিয়ে ভূলে মনে মনেই বলি  54 ওইটা ( বুঝে নিবেন দয়া করে)বলি। তারপর মনে মনে ধোকা দেওয়া শুরু হয়।তখন আমি নিজে নিজেই শয়তানকে মনে মনে বলি

 "মনে মনের কিছুই ধরা হবে না।  তাছাড়া আমি ভূল করে বলেছি তাও আবার মনে মনে তাই কোন সমস্যা হবে। তারমধ্যে আমি ওয়াসওয়াসা রোগী  আমার জন্য শরীয়তে ছাড় রয়েছে ।এগুলোর দারা আমার কিছুই হবেনা। আমার আল্লাহ জানে আমি 54 দারা কি লিখেছি"

 তারপর এসব ওয়াসওয়াসা পাত্তা দেইনি অন্য কাজে মনোযোগ দেই। কাগজে 54 লিখার পর বাকি সমস্ত কথাগুলো কল্পনাতে বা মনে মনে হয়। এর দারা কোন সমস্যা হবে নাতো?

প্রশ্ন৪) খাতায় লিখেছি ২ ইঞ্চি+১ ইঞ্চি= ৩  । এভাবে লেখার পর শয়তান মনে করায় আমি ৩  দারা অন্য কিছু লিখছি। আমি মনে মনে উত্তর দেই ,আমার আল্লাহ জানে আমি কি লিখছি। আর কোন পাত্তা দেইনি।

এরকম আরো অনেক চিন্তা আসে মনের মধ্যে। আজকের দিনে এগুলোকে একদম পাত্তা দেইনি।  এতদিন এগুলো খুব পাত্তা দিতাম তখনি আমার অবস্থা খুব খারাপ বানিয়ে ফেলতো।সারাদিন এগুলো নিয়ে টেনশন করতাম ,কাজ করতে অসুবিধে ,ইবাদতে অসুবিধে হতো। আজকের দিন আলহামদুলিল্লাহ অন্যদিনের তুলনায় অনেক ভালো কেটেছে। আমি কি এখন থেকে এভাবেই পাত্তা না দিয়ে চলবো? একটু প্রত্যেকটা প্রশ্নে পয়েন্ট আকারে উত্তর দিলে উপকার হত

প্রশ্ন৫) প্রশ্ন লিখার সময় মনের মধ্যে অনেক ভয় কাজ করে ।আমি শুধু মাসায়ালা জানার জন্যই প্রশ্ম করেছি ।আমার মনের মধ্যে নানা চিন্তা এসে পড়ে ওয়াসওয়াসার কারনে ,কারন আমি ওয়াসওয়াসার রোগি। প্রশ্ন লিখতে গিয়ে মনে মনে এবং মুখে মুখে ও বলতে থাকি যে আমার কোন নিয়ত বা উদ্দেশ্য নেই যাতে একটু টেনশন মুক্ত থাকতে পারি। তারপরেও বিভিন্ন ওয়াসওয়াসা এসে পড়ে মনে।এর দারা কোন সমস্যা হবে কিনা?

একটু পয়েন্ট আকারে বুঝিয়ে বললে উপকার হত

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/55711/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

আলহামদুলিল্লাহ! আপনাকে বলবো দয়াকরে আপনি এই তালাকের ওয়াসওয়াসাকে পরিহার করুন। কিভাবে পরিহার করবেন,সেটা হল, যখনই মনে এরকম ওয়াসওয়াসা আসবে, সাথে সাথেই মনকে বলবেন, আমি যেহেতু ওয়াসওয়াসার রোগী, তাই আমার ব্যাপারে শরীয়তের হুকুমে শীতিলতা রয়েছে। আমি অন্য দশজনের মত নই। কেননা ওয়াসওয়াসা রোগি কাউকে হত্যা করলেও শরীয়তের দৃষ্টিতে কেসাস আসেনা।ওয়াসওয়াসার রোগী সারাদিন কুফরি বাক্য উচ্চারণ করলেও সে কাফির হয়না।বরং তার ঈমান বহাল থাকে।

যদি ওয়াসওয়াসা থেকে আপনি বের না হন,তাহলে আপনার ভবিষ্যত আপনি নিজেই নষ্ট করবেন।ওয়াসওয়াসা থেকে বের হওয়ার একমাত্র মাধ্যম হল, এই চিন্তাকে পরিহার করে ভিন্ন চিন্তা গ্রহণ করা,লোকদের সাথে হাশিখুশিতে থাকা।

ইবনে হাজার হাইতামি রাহ এ সম্পর্কে বলেন,

وسئل نفع الله به عن داء الوسوسة هل له دواء ؟

فأجاب بقوله : له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان - فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون) (الفتاوى الفقهية الكبرى 1/149

মর্মার্থ - পরিপূর্ণ ভাবে এই চিন্তাকে পরিহার করার চেষ্টা করাই এর সর্বোত্তম চিকিৎসা।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/835   

 

ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ

ইবনে হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে (১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে এর প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها وعمل بقضيتها فإنها لا تزال تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم

অর্থাৎ, এর ঔষধ একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু সময় পর চলে যাবে; যেমনটি তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছাবে।

 

এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্ পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।

 

রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ عَلَى الْوَسْوَسَة

সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি শয়তানের বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ)

 

ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان

ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

 

১. না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কোনো তালাক পতিত হবে না।

২. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু আপনি নিশ্চিত যে, আপনি “খলাক” ই পড়েছেন। অন্য কিছু বলেননি। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।

৩. না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কাগজে  54 লেখার দ্বারা তেমন কোনো সমস্যা হবে না।

৪. না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে খাতায়  ২ ইঞ্চি+১ ইঞ্চি= ৩  লেখার দ্বারা কোনো সমস্যা হবে না।

৫. না, এর দ্বারা কোনো সমস্যা হবে না।

উল্লেখ্য যে, আপনার অনেক অনেক ওয়াসওয়াসা রয়েছে। তাই এগুলো পাত্তা না দিয়ে সম্পূর্ণ ভাবে এড়িয়ে চলবেন। কারণ, ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...