আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
94 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম।
নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর পেলে উপকৃত হই।
১/ বিবাহের কাবিননামার ১৭ নং কলামে যে বিশেষ শর্তাদি সমূহ উল্লেখ থাকে, বিবাহের পরে সেসমস্ত শর্তাদি স্বামী রক্ষা না করিলে বিয়ের কোন ক্ষতি হবে কি? বা বিবাহ ভঙ্গ হবে কি?

২/ কাবিননামার ১৮ নং কলাম কাজী নিজে নিজে লিখে দিলে, স্বামীকে জিজ্ঞেস না করে বা স্বামীর সম্মতি না নিয়ে যেখানে স্ত্রীকে তালাক প্রদানের অধিকার দেয়া হয়েছে লিখিত আছে, সেক্ষেত্রে স্ত্রী নিজের উপর তালাক নিলে সেটা কার্যকর হবে কি?
কাজী নিজে লিখেছে কাবিননামার সব বিষয়। সব স্বাক্ষরও কাজী নিজে দিয়েছে।  স্বামী থেকে কোনকিছু জেনে নেয় নি।

৩/ আল্লাহকে স্বাক্ষী রেখে আমি তোরে তালাক দিলাম" এই কথা বলার সময় স্বামী যদি একেবারে ছেড়ে দেবার নিয়ত করে বলে, তবে কি তিন তালাকই পতিত হবে?

৪/ এক তালাকের পর বাড়িতে চলে আসলে ইদ্দতের সমস্ত নিয়ম কি পালন করতে হবে?

৫/ এক তালাকে রজয়ী বায়েন হবার পর সংসার করার বিধান কী?

৬/ ১০০ বর্গহাত বা তার চেয়ে বেশি মাপের পুকুরে খালের পানি (খাল নোংরা ময়লা, নাপাকী, মানুষের টয়লেট পয়নিষ্কাশনের কাজে ব্যবহ্রত) দিয়ে ভরে গেলে ঐ পানি থেকে পবিত্রতা অর্জন করা যাবে যদি পানির স্বাদ, গন্ধ, রং ঠিক থাকে?
মাঝে মাঝে খালের কাদা ঘোলা পানিতে পুরো পুকুরের পানি ঘোলা হয়ে থাকে। পানি হাতে নিলে পরিষ্কার দেখা যায়।  পুকুরের বাউন্ডারির ফুটো দিয়ে খালের পানি প্রবেশ করে।

1 Answer

0 votes
by (679,480 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
বিবাহের কাবিননামার ১৭ নং কলামে যে বিশেষ শর্তাদি সমূহ উল্লেখ থাকে, বিবাহের পরে সেসমস্ত শর্তাদি স্বামী রক্ষা না করিলে বিয়ের কোন ক্ষতি হবেনা, বিবাহ ভঙ্গ হবেনা।
তবে শর্ত পূরন না করার গুনাহ হবে।
স্ত্রীর আবশ্যকীয় হক আদায় সংক্রান্ত শর্ত হলে স্ত্রীর পূর্ণ হক আদায় না করার গুনাহ হবে।

(০২)
তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।

আরো জানুনঃ- 

★শরীয়তের বিধান হলো স্বামী যদি জেনে শুনে নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা দেয়, অথবা সেখানে কাজী সাহেব বা অন্য কেহ হ্যাঁ লিখে দেয়,আর স্বামী তাহা জেনে শুনে নিচে স্বাক্ষর দেয়,আর এই নিকাহ নামা বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার পরে যদি লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবে। 

তবে যদি এমনটি না হয়,স্বামী যদি না জেনেই নিচে সাইন করে,সে যদি তালাকের ক্ষমতা প্রদানের এই বিষয় সম্পর্কে স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা,অথবা এই নিকাহ নামা যদি বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার আগে লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।
 
كُلُّ كِتَابٍ لَمْ يَكْتُبْهُ بِخَطِّهِ وَلَمْ يُمِلَّهُ بِنَفْسِهِ لَا يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ إذَا لَمْ يُقِرَّ أَنَّهُ كِتَابُهُ كَذَا فِي الْمُحِيطِ (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)
সারমর্মঃ
প্রত্যেক ঐ লেখা,যেটা নিজ হাত দিয়ে লিখেনি,নিজের মন সেদিকে ঝুকেওনি,তাহলে তালাক পতিত হবেনা।
যদি সে এটা স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা।    

সুতরাং  যদি স্বামীর দস্তখত করার সময় জানা থাকে যে, কাজী স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দিয়েছে মর্মে উপরে লিখে দিয়েছে, একথা জানার পরও যদি স্বামী উক্ত কাগজের নিচে সাইন করে, তাহলে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে বলে সাব্যস্ত হবে। সেই হিসেবে স্ত্রী যদি পরবর্তীতে নিজের উপর তালাক পতিত করে থাকে, তাহলে তালাক পতিত হয়ে যায়।

আরো জানুনঃ 
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।
সুতরাং চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।   

(০৩)
এক্ষেত্রে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।
তিন তালাকের নিয়ত করলেও এক তালাক পতিত হবে। 

(০৪)
হ্যাঁ, ইদ্দতের সমস্ত নিয়ম পালন করতে হবে।
তবে এভাবে ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার আগে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে যাওয়া বিশেষ ওযত ব্যাতিত জায়েজ নেই।
এতে গুনাহ হবে।

(০৫)
এক্ষেত্রে ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার পরে ফিরিয়ে নিতে চাইলে নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।

আর ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার আগে ফিরিয়ে নিতে চাইলে মৌখিক ভাবে "তোমাকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে নিলাম" বললেই হবে।
বা স্ত্রীর সাথে স্বামী সুলভ আচরন করলেই ফিরিয়ে নেয়া হবে।

(০৬)
যদি সেই পানির স্বাদ, গন্ধ, রং ঠিক থাকে,তাহলে সেই পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা যাবে।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...