আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
104 views
in পবিত্রতা (Purity) by (39 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ।

স্বপ্নদোষ হওয়ার কারণে আমি কাপড় ও কাঁথা(যে কাঁথাটা গায়ে দিয়ে শুয়েছিলাম) দুইটাই ভালো করে ধুয়ে নিয়েছি।

এখন আমার মনে সন্দেহ লাগছে বিছানায় বীর্য লেগেছে কি-না!কিন্তু বিছানায় আমি বীর্যের কোনো দাগ বা ভেজা কিছু দেখতে পাই নাই।কারণ বীর্য বের হওয়ার সাথে সাথেই আমার ঘুম ভেঙে যায়।আর তখনই বিছানায় ভেজা কিছু দেখতে পাই নি।এক্ষেত্রে আমার কি বিছানা ধুৃয়ে নেয়া প্রয়োজন।সবসময় মনের মধ্যে একটা সন্দেহজনক কাজ করছে।

আর যে কাঁথাটা ধুয়ে নেয়ার কথা বললাম ঐ কাঁথায়ও বীর্যের কোনো দাগ ছিল না।লুঙ্গি ভেজার পর পরই আর কোথাও বীর্যের যে ভেজা একটা প্রকৃতি ঐটা অন্য কাঁথা,বিছানা পর্যন্ত পৌঁছায়নি।সন্দেহবশত কাঁথাটা কি ধুয়ে নেয়া ঠিক ছিল??

২/আজকে সকালাবেলা ফজরের নামাজের সময় মসজিদেে ওযুখানায় এক বৃদ্ধাকে দেখলাম।সম্ভবত মানসিক রোগী হতে পারেন।এখন, আমার কি করা উচিৎ?বাইরে বৃষ্টি পড়তেছে এবং প্রচন্ড ঠান্ডাও পড়তেছে।ওনার গায়ে দেখলাম একটা বস্তা পরানো।আমার বৃদ্ধার জন্য কোনো সহায়তা করার ইচ্ছা করছে কিন্তু রিয়ার ভয়ও হচ্ছে।কিছু নেক কাজে আমার হাত বাড়াতে ইচ্ছা করে কিন্তু রিয়ার ভয়ের কারণে নেক কাজে আর হাত বাড়ানো হয় না।

[২ নং প্রশ্নের মতো এরকম সমস্যাজাতীয় প্রশ্নের জন্য ifatwa- এর প্রতি অনুরোধ থাকবে ইনস্ট্যান্ট প্রশ্ন ও উত্তরের একটি অপশন খোলা রাখার জন্য।]যাতে তাৎক্ষণিক প্রশ্ন ও উত্তর পেতে পারি।

৩/ফরজ গোসল করে না এমন ব্যাক্তির কাপড় কি নাপাক।ফরজ গোসল করে না এমন ব্যাক্তি যখন কাপড় ধুয়ে শুকাইতে দেন তখন তার ভেজা কাপড়ের সাথে ফরজ গোসল করে এমন ব্যাক্তির কাপড়(ভেজা/শুকনো) লাগলে কি নাপাক হয়??
by
এখানে কিভাবে প্রশ্ন করতে হয়। কেউ জানালে উপকৃত হতাম।

1 Answer

+1 vote
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/54888/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

বীর্য নাপাক। শুকনা হলে খুটিয়ে তুলে ফেলা ও ভিজা হলে কাপড়টি ধৌত করার কথা হাদীসে এসেছে। যেমন-

عَمْرُو بْنُ مَيْمُونٍ، قَالَ: سَأَلْتُ سُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ [ص:56] فِي الثَّوْبِ تُصِيبُهُ الجَنَابَةُ، قَالَ: قَالَتْ عَائِشَةُ: «كُنْتُ أَغْسِلُهُ مِنْ ثَوْبِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ يَخْرُجُ إِلَى الصَّلاَةِ، وَأَثَرُ الغَسْلِ فِيهِ» بُقَعُ المَاءِ

অনুবাদ- আমার বিন মাইমুন রহঃ সুলাইমান বিন ইয়াসার রাঃ কে বীর্য লাগা কাপড়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,হযরত আয়শা রাঃ বলেছেন, “আমি রাসূল সাঃ এর কাপড় থেকে তা ধুয়ে ফেলতাম তারপর তিনি নামাযের জন্য বের হতেন এমতাবস্থায় যে,কাপড়ে পানির ছাপ লেগে থাকতো। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২৩১, ২২৯}

 

অন্যান্য হাদীসে এসেছে-

يَا عَمَّارُ إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ: مِنَ الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ وَالْقَيْءِ وَالدَّمِ وَالْمَنِيِّ

আম্মার বিন ইয়াসার রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-নিশ্চয় ৫টি কারণে কাপড় ধৌত করতে হয়, যথা-১-পায়খানা, ২-প্রশ্রাব, ৩-বমি, ৪-রক্ত, ৫-বীর্য। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৪৫৮}

আরো জানুন- https://ifatwa.info/13541/

তোষক পাক করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/3358/

 

নাজাসতে গালিজাহ কাপড় বা শরীরে লাগলে, এক দিরহাম (তথা বর্তমান সময়ের পাঁচ টাকার সিকি) পরিমাণ বা তার চেয়ে কম হলে, উক্ত কাপড়ের সাথে নামায বিশুদ্ধ হবে। যদিও তা ধৌত করা উত্তম যদি সময়-সুযোগ থাকে। আরো বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/6568/

 

ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ

ইবনে হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে (১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে এর প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها وعمل بقضيتها فإنها لا تزال تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم

অর্থাৎ, এর ঔষধ একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু সময় পর চলে যাবে; যেমনটি তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছাবে।

 

এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্ পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।

 

রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ عَلَى الْوَسْوَسَة

সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি শয়তানের বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ)

 

ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان

ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

 

১. ক. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত তোষকে নাপাক লাগার পর তা শুকিয়ে গেলে তাতে ঘুমানো যাবে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি উক্ত তোষকের উপরেই ঘুমাবেন। তবে তার উপর একটা পবিত্র চাদর বিছিয়ে নিবেন। অত:পর তার উপর ঘুমাতে কোনো প্রকার ইতস্তবোধ করবেন না। যদিও তার উপর ঘুমানোর পরে আপনার শরীর ঘামে বা ভিজা শরীর নিয়ে বা ভিজা কাপড় পরিধান করে ঘুমান। সুতরাং প্রশ্নোক্ত বিছানাতে ঘুমানোর কারণে আপনার শরীর ততক্ষণ নাপাক হবে না যতক্ষণ না বিছানা থেকে নাপাকির চিহ্ন আপনার শরীর বা কাপড়ে না লাগে এবং স্পষ্ট ভাবে আপনি উক্ত নাপাকি দেখতে পান।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত নাপাকির সন্দেহ পরিহার করবেন এবং সর্বদা ওয়াসওয়াসা থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন। আর ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)

. কাঁথাটা ধুয়ে যখন ফেলেছেন তো আরো ভালো হয়েছে

 

. জ্বী, আপনি চাইলে তাকে সাহায্য সহযোগিতা করতে পারেন তাকে শাড়ীও কিনে দিতে পারেন এগুলো করবেন এক মাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য তাই এই ক্ষেত্রে যেনো রিয়া না আসে সে জন্য তিন সময় (দান করার আগে, দান করার সময় দান করার পরে) নিয়তকে ঠিক করে নিবেন তাহলে আশা করা যায় যে, রিয়া আসবে না

৩. আপনার প্রশ্নটা অস্পষ্ট তাই বিস্তারিত উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, উক্ত কাপড়টি নাপাক কাপড় ছিলো কি না?


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...