আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
164 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।

১.আমি যদি কাউকে টাকা দিই, তাহলে তো টাকাটা আমি ভোগ করতে পারলাম না। এর মানে কি এটা যে টাকাটা আমার রিজিকেই ছিল না??? নাকি তারা আমার ঐ রিযিক টা নিয়ে গেল? রিযিক কি কাউকে দেয়া বা নেয়া যায়?

২.আমাদের সমাজে ভাইয়ে ভাইয়ে সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়, একজন আরেকজনের সম্পত্তি নিয়ে ভোগ করে এমন অনেক ঘটনা আছে। অন্যায়ভাবে সম্পত্তি নিলে তার রিজিকেই কি এই পরিমাণ অথবা এই সম্পত্তি ছিল, নাকি সে তার ভাইয়ের রিযিক ভোগ করছে? এখানেও ঘুরেফিরে একই প্রশ্ন যে, একজন কি আরেকজনের রিযিক ভোগ করতে পারে?

৩.যেসব মানুষেরা ঈমান থাকা সত্বেও ব্যাভিচার করে, তাদের কি ঈমান চলে যায়?

৪.যারা নিশ্চিত ফাসিক, মুরতাদ তাদের কি ঈমান থাকে?

৫.কেউ যদি কোনো জামা-কাপড়, খাবার, বাড়ি-গাড়ি কিনে, তার মানে কি এটা যে, ঐ নির্দিষ্ট খাবার, পোশাক, বাড়ি-গাড়ি তার রিজিকে ছিল?

৬.আমি যদি দেখি যে কোনো মানুষ( নিকটাত্মীয় বা দূরের কেউ) শিরক বা কুফরী করছে, অথবা ধরুন বিভিন্ন কারণে স্বামী স্ত্রীর ঈমান চলে গেলে আবার বিয়ে করতে হয়... ইত্যাদি ইত্যাদি ঘটনা ঘটলে যদি আমি তাদেরকে সতর্ক না করি বা তাদের ভুলের কথা না বলি, তাহলে কি আমার ঈমান চলে যাবে??

৭.আমি যদি নেককার স্ত্রী পাবার আশায়/ পরিবারের সবাইকে শুদ্ধভাবে আয়তুল কুরসী পড়ে ফুঁক দেয়ার জন্য নামাজ পড়া, সহীহ ভাবে কোরআন শিখি, তাহলে কি গুনাহ হবে? কেননা এখানে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি প্রথমে আসছে না।

৮.আমি যদি একটি জিনিস ব্যাবহার করে বিক্রি করি, তাহলে কি এর অর্থ এটা যে ওই জিনিসটি দুজনেরই রিজিকে ছিল।

জাযাকাল্লাহ খায়রান।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
আপনি যদি টাকাটা ঋন হিসাবে না দিয়ে দান সদকাহ বা হাদিয়া হিসেবে দেন,তাহলে এর মানে হলো টাকাটা আপনার রিযিকে ছিলোনা।

মানুষ যাহা কামাই করবে,সবই সে খেতে পারবে,বিষয়টি এমন নহে।

এসবই তাকদীরে লিপিবদ্ধ বিষয়। 
এই রিযিক আল্লাহই দেন,বান্দা নয়।

(০২)
অন্যায়ভাবে সম্পত্তি নিলে সে তার ভাইয়ের রিযিক ভোগ করছে।
তবে বিষয়টি তাকদিরেই ছিলো।

(০৩)
যেসব মানুষেরা ব্যাভিচার করে, তাদের ঈমান চলে যায়না ঠিক,তবে যেনার সময় তাদের পূর্ণ ঈমান থাকেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। 

 عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِينَ يَشْرَبُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَسْرِقُ حِينَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَنْتَهِبُ نُهْبَةً يَرْفَعُ النَّاسُ إِلَيْهِ فِيهَا أَبْصَارَهُمْ حِينَ يَنْتَهِبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ
وَعَنْ سَعِيدٍ وَأَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ إِلاَّ النُّهْبَةَ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন ব্যভিচারী মু’মিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না এবং কোন মদ্যপায়ী মু’মিন অবস্থায় মদ পান করে না। কোন চোর মু’মিন অবস্থায় চুরি করে না। কোন লুটতরাজকারী মু’মিন অবস্থায় এরূপ লুটতরাজ করে না যে, যখন সে লুটতরাজ করে তখন তার প্রতি লোকজন চোখ তুলে তাকিয়ে থাকে।সা‘ঈদ ও আবূ সালামাহ (রাঃ) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ বর্ণিত, তবে তাতে লুটতরাজের উল্লেখ নেই। ফিরাবরী (রহ.) বলেন, আমি আবূ জা‘ফর (রহ.)-এর লেখা পান্ডুলিপিতে পেয়েছি যে, আবূ ‘আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহ.) বলেন, এ হাদীসের ব্যাখ্যায় ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, এর অর্থ হল, তার হতে ঈমানের নূর ছিনিয়ে নেয়া হয়।সহীহ বোখারী- শামেলা-২৪৭৫ (৫৫৭৮, ৬৭৭২, ৬৮১০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৩১৩) 


উক্ত হাদীসের অনেক ব্যখ্যা হতে পারে।মোল্লা আলী ক্বারী রাহ. বলেন, 
 «وَأَصْحَابُنَا أَوَّلُوهُ بِأَنَّ الْمُرَادَ الْمُؤْمِنُ الْكَامِلُ فِي إِيمَانِهِ، أَوْ ذُو أَمْنٍ مِنْ عَذَابِ اللَّهِ تَعَالَى، أَوِ الْمُرَادُ الْمُؤْمِنُ الْمُطِيعُ لِلَّهِ، يُقَالُ: أَمِنَ لَهُ، إِذَا انْقَادَ وَأَطَاعَ، أَوْ مَعْنَاهُ الزَّجْرُ وَالْوَعِيدُ، أَوِ الْإِنْذَارُ لِمُرْتَكِبِ هَذِهِ الْكَبَائِرِ بِسُوءِ الْعَاقِبَةِ، إِذْ مُرْتَكِبُهَا لَا يُؤْمَنُ عَلَيْهِ أَنْ يَقَعَ فِي الْكُفْرِ الَّذِي هُوَ ضِدُّ الْإِيمَانِ، أَوْ أَنَّ الْإِيمَانَ إِذَا زَنَى الرَّجُلُ خَرَجَ مِنْهُ، وَكَانَ فَوْقَ رَأْسِهِ مِثْلَ الظُّلَّةِ، فَإِذَا انْقَلَعَ رَجَعَ إِلَيْهِ، وَسَيَأْتِي تَقْرِيرُهُ. وَقِيلَ: مَعْنَى مُؤْمِنٍ مُسْتَحٍ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى؛ لِأَنَّ الْحَيَاءَ شُعْبَةٌ مِنَ الْإِيمَانِ، فَلَوِ اسْتَحَى مِنْهُ وَاعْتَقَدَ أَنَّهُ نَاظِرٌ لَمْ يَرْتَكِبْ هَذَا الْفِعْلَ الشَّنِيعَ، وَفِيهِ بَحْثٌ،» - «مرقاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح» (1/ 124)
সর্বোত্তম ব্যখ্যা হল, যিনার সময় মানুষের কামিল ঈমান থাকে না। বা যিনার সময় ঈমান বের হয়ে যায়, এবং মাথার উপর ছায়ার মত থাকে, যখন যিনা শেষ হয়, তখন আবার ঈমান চলে আসে। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৪)
ফাসিকদের ঈমান থাকে,তবে মুরতাদদের ঈমান থাকেনা।

(০৫)
হ্যাঁ, ঐ নির্দিষ্ট খাবার, পোশাক, বাড়ি-গাড়ি তার রিজিকে ছিল।
তবে বিষয়টি সেই সময়ে বলা যাবে,যখন সে সেই খাবার খাবে,সেই পোশাক পরিধান করবে,বাড়ি গাড়ি সে ব্যবহার করবে।

(০৬)
যদি আপনি তাদেরকে সতর্ক না করেন বা তাদের ভুলের কথা না বলেন, তাহলে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৭)
তাহলে গুনাহ হবেনা।

(০৮)
হ্যাঁ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...