আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
83 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (35 points)
edited by

আস সালামু আলাইকুম। আমি আপনাদের কাছে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে পরামর্শ চাচ্ছি। আমি একসময় ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়তাম,রমজানের রোজা রাখতাম, ইবাদত নিয়ে প্রচুর আগ্রহ ছিল।  গত ১ বছর ধরে আমি ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত।  বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ওয়াসওয়াসা এসেছে। এর মধ্যে গত ২০২২ এর ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ গত ৮ মাস ধরে আমি ইমান বিষয়ক ওয়াসওয়াসায় ভুগছি। কিছু উদাহরণ বলিঃ

১) পাঠ্যবইগুলোতে শিরকি কুফরি লাইন আসলে আগে আমি নরমালি পড়তাম মনে অসবের প্রতি ঘৃণা রেখে। কিছু এই বছর এগুলো পড়তে গেলেই মনে ভয় আসে যে ইমান চলে যায় কিনা। ২) ধরুন কালকে আমি ওমুক কাজটা করব। এজন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রেডি করছি। তখন আমার মনে ওয়াসওয়াসা আসে যে আমি গায়েবের জ্ঞান জানলাম কিনা যে আমি এই কাজটা করবই।। তখন আমার মনের অবস্থা এমন হয় যেঃ একবার দৃড়চিত্ত থাকি যে আমি গায়েবের জ্ঞান জানার দাবি তে জিনিসপত্র রেডি করছি না, এরপর সময়েই মনের অবস্থা এমন হয় যে আমার ইমান দূর্বল হয়ে যাচ্ছে,।  মানে রাগ উঠে যায় তখন মনে প্রায় স্থিরই করে ফেলি যে আমি সেটা গায়েবের জ্ঞান জানার দাবিতেই করছি। 

এছাড়া ইমান সংশ্লিষ্ট নিচের কিছু প্রশ্ন আছেঃ

৩) আরবিতে আল্লাহ শব্দের লাম মোটা হরফে পড়তে হয়। কিন্তু আমরা বাংগালিরা আল্লাহ শব্দটা নরমাল বাংলায় যেভাবে বলে সেভাবেই বলি, অনেকে "হ" ও উচ্চারণ করে না। এভাবে উচ্চারণ করলে কি গুনাহ হবে? 

৪) তাছাড়া আমরা যখন বলি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম,  তখন ও অনেকে খুব দ্রুত বলে,  উচ্চারণ একটু বেঠিক হয়ে যায়। এগুলা করলে কেমন গুনাহ হবে?.

৫) ধরুন আমি একটা ভাল কাজ করলাম। পরে আমার আপঞ্জন কেউ বল্লঃ তুমি একটা লক্ষ্মী ছেলে। আমার মনে ওয়াসওয়াসা এসেছিল যে আন্টিটা এটা বলবে কিনা, তাও আন্টিকে বলেছিলাম যে ওই কাজটা আমি করেছি। এখন আমার কি এতে কুফরের গুনাহ হয়েছে? যেহেতু আমার মনে ওয়াসওয়াসা এসেছিল আন্টি আমাকে লক্ষ্মী বলবএ কিনা

৬) বই খাতা তে আল্লাহ নাম টা আছে কয়েক জায়গায়। এখন এগুলার উপর ভর করে মাঝে মাঝে পড়ি নাহলে পিঠ ব্যথা করে। তখন আমার মনে ওয়াসওয়াসা আসে যে আমি আল্লাহ কে অসম্মান করছি কিনা। এসব ওয়াসওয়াসা আসলে রাগ উঠে আর তখন প্রায় স্থির করে ফেলি যে হ্যা আমি আল্লাহ কে অসম্মান করছি। এখন কি ইমান চলে গেছে?

আগে ইমান নিয়ে আরো অনেকক ওয়াসওয়াসা আসত। এখন এগুলো প্রশ্ন আছে। এখন ইমান রক্ষার জন্য আমি কি করতে পারি?

এছাড়াও,,,,, 

আগে ইবাদত নিয়ে আমার প্রচুর আগ্রহ ছিল। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নামাজ পড়া বাদ দেওয়ার ফলে আমার ইবাদত থেকে আগ্রহ চলে গেছে। নামাজ পড়তে ইচ্ছা করে না। প্রস্রাব পায়খানা থেকে পবিত্র হতে গেলে ছিটা আসে, প্রস্রাবের পর ফোটা ফোটা প্রস্রাব বের হয়। এসব নাপাকির চিন্তা ভাল লাগে না। আগে যখন নামাজ পড়তাম তখন এসব সমস্যা ছিল না, আমি খুবই কর্মঠ ছিলাম, পরিবারের সবাই আমাকে অনেক ভালবাসত। এখন আমি খুব অলস হয়ে গিয়েছি।  এখন আমি আমার আগের কর্মঠ রূপ আর ইবাদতের প্রতি আগ্রহ ফিরে পাব কিভাবে? কি কি করতে পারি?

আপনাদের প্রতি আমার বিশেষ অনুরোধ, 

আপনারা আমার জন্য দুয়া করবেন যেন আল্লাহ আমার প্রস্রাব, পায়খানার সমস্যা দূর করে দেন, এসব ছিটা ফোটা যেন না আসে, মানে নাপাকি নিয়ে যেন আর চিন্তা না করতে হয়। 

আমার যেন ইবাদতে আগের চেয়েও বেশি আগ্রহ আসে, আমি যেন আগের মত কর্মঠ হয়ে যাই। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা হল যাতে আমাকে আর ইমান বিষয়ক ওয়াসওয়াসায় ভুগতে না হয়, আমি যাতে আল্লাহর প্রিয় হয়ে যাই। আপনারা যারাই এটা দেখবেন তারা আমার জন্য খাস দিলে দুয়া করবেন। 

1 Answer

0 votes
by (697,760 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় লিখেন,
ﻣﻌﻨﺎﻩ ﺃﻥ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﺇﻧﻤﺎ ﻳﻮﺳﻮﺱ ﻟﻤﻦ ﺃﻳﺲ ﻣﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻓﻴﻨﻜﺪ ﻋﻠﻴﻪ ﺑﺎﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ؛ ﻟﻌﺠﺰﻩ ﻋﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻭﺃﻣﺎ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮ : ﻓﺈﻧﻪ ﻳﺄﺗﻴﻪ ﻣﻦ ﺣﻴﺚ ﺷﺎﺀ ، ﻭﻻ ﻳﻘﺘﺼﺮ ﻓﻲ ﺣﻘﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ، ﺑﻞ ﻳﺘﻼﻋﺐ ﺑﻪ ﻛﻴﻒ ﺃﺭﺍﺩ ، ﻓﻌﻠﻰ ﻫﺬﺍ ﻣﻌﻨﻰ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ : ﺳﺒﺐ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ : ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﺃﻭ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ﻋﻼﻣﺔ ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﻭﻫﺬﺍ ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺍﺧﺘﻴﺎﺭ ﺍﻟﻘﺎﺿﻲ ﻋﻴﺎﺽ ...
অর্থাৎ শয়তান সে ব্যক্তিকেই প্ররোচনা দেয়,যাকে গোমরাহ করতে সে নিরাশ হয়ে যায়।সে কাউকে গোমরাহ করতে নিরাশ হয়ে গেলে সর্বশেষে সে মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিতে চায়।
আর কাফিরের নিকট শয়তান যেকোনো থেকে যেহেতু আসতে পারে,তাই কাফিরকে প্ররোচনা দেয়ার কোনো প্রয়োজন তার থাকে না।কেননা সে যেকোনো সময় তার ইচ্ছামত কাফিরকে ব্যবহার করতে পারে।সুতরাং হাদীসের অর্থ হলো এই যে,ঈন্তরে ঈমানের দানা থাকার দরুণই শয়তান ঈমানদারদেরকে প্ররোচনা দিয়ে থাকে। এ বিষয়ে এটাই কাযী ঈয়ায রাহ এর পছন্দনীয় ব্যাখ্যা।
(আল-মিনহাজ্ব-২/১৫৪)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1379

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১) পাঠ্যবইগুলোতে শিরকি কুফরি লাইন আসলে মনে এসবের প্রতি ঘৃণা রেখে পড়লে ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।

২)
প্রশ্নের বিবরণমতে শিরক হবে না,কুফর হবে না।

৩) আরবিতে আল্লাহ শব্দের লাম মোটা হরফে পড়তে হয়। বাংগালিরা আল্লাহ শব্দটা বাংলায় হ সহকারে উচ্ছারণ করতে হবে।তবে কেউ না করলে গোনাহ হবে না।

৪) রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, এ বাক্যকেও সঠিকভাবে উচ্ছারণ করতে হবে।তবে ভুল উচ্ছারণ হয়ে গেলে ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।

৫) কেউ আপনাকে লক্ষ্মী ছেলে বলার কারণে আপনার ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।তাকে বুঝিয়ে দিবেন।এই শব্দ পরিহার করাটা উচিৎ।

৬)
বই খাতায় হেলান দেওয়া বে'আদবি।তাতে অাল্লাহ শব্দ থাকলেও ঈমানে কোনো সমস্যা হবে।

ইবাদতর মনযোগ ফিরিয়ে আনতে নেককার আলেমের শরণাপন্ন হন।তাবলীগ জামাতে সময় দিন। ওয়াসওয়াসার জন্য ওডিসি চিকিৎসা গ্রহণ করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 199 views
...