আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
129 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (129 points)
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

১,আমি নামাজের ২য় রাকাত এর বসা থেকে যখন উঠি তখন এক পা বসা রেখে অন্য পা ভর দিয়ে বসা থেকে দাড়ানোর মাঝে যাই,এরপর বাকি পা দিয়ে ভর দিয়ে দাড়াই।আমার কোনো শারীরিক সমস্যা নাই।এটা এম্নিতেই মাঝে মাঝে হয়ে যাউ।কিন্তু ভয় হচ্ছে এটা আমলে কাসীর কিনা।কারণ এভাবে মানুষ সাধারন মজলিসে বসা থেকে উঠে,যেটা দেখে কেউ ভাবতে পারে আমি নামাজে নাই।


২,একটা হাদীসে শুনেছিলাম দুই ক্ষেত্রে অহংকার করা জায়েজ।হাদীস একটু ব্যাখ্যা করে দিবেন প্লিজ

জাযাকাল্লাহু খাইরান ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরাহ

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
মুসাল্লির এমন নড়াচড়া যা নামায পরিপন্থী, তা দু-ভাগে বিভক্ত-
(ক)পরিমাণে সামান্য, যাকে শরয়ী পরিভাষায় 'আ'মলে ক্বালীল' বলা হয়ে থাকে।
(খ)পরিমাণে বেশী যাকে শরয়ী পরিভাষায়  'আ'মলে কাসির' বলা হয়ে থাকে।

নামাযরত অবস্থায় মুসাল্লির কোনো প্রকার হারকাত/নড়াচড়া 'আ'মলে কাছির' বলে প্রমাণিত হলে,উক্ত মুসাল্লির নামায সর্বসম্মতিক্রমে ফাসিদ হয়ে যাবে।

আ'মলে কাছির নির্ণয়ে ফুকাহায়ে কেরামের মধ্য যথেষ্ট মতবিরোধ রয়েছে।যথা-
(১) সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মতানুযানী 'আ'মলে কাছির' বলা হয়,এরূপ নড়াচড়া-কে যে, নড়াচড়ায় কর্মরতকে মুসাল্লি সম্পর্কে নামাযের বাহির থেকে অবলোকনকারীর নিশ্চিত ধারণা জন্মে যে,সে এখন আর নামাযে নেই। এ ধরনের কাজ দ্বারা তার নামায নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু যদি উক্ত মুসাল্লি সম্পর্কে নামাযরত বলে ধারণা করা যায়,তাহলে এমতাবস্থায় সে কাজকে 'আ'মলে কাছীর' বলা যাবে না।বরং একে 'আ'মলে ক্বালিল'-ই  বলা হবে, এবং তখন নামায নষ্ট হবে না।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/445


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
আপনি বিনা প্রয়োজন ও হাজতে নামায পড়ার যে পদ্ধতি বর্ণনা করতেছেন, সেই পদ্ধতির নামাযকে বাহির থেকে যদি কেউ মনে করে যে, উক্ত ব্যক্তি বর্তমানে নামাযে নেই, তাহলে আপনার বর্ণিত পদ্ধতি দ্বারা নামায হবে না। 

(২)
আপনি সম্ভবত হিংসা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন,
হিংসা বা অহংকার সর্বক্ষেত্রেই নাজায়েয। তবে কিছু ক্ষেত্রে অনুমোদনযোগ্য।
আবদুল্লাহ ইবনু ওমর রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী ﷺ বলেছেন, 
لاَ حَسَدَ إِلاَّ فِي اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ الْقُرْآنَ فَهُوَ يَقُومُ بِهِ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالاً فَهُوَ يُنْفِقُهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ
দু’টি ব্যাপার ছাড়া হিংসা পোষণ করা যায় না। একটি হল, এমন ব্যক্তি যাকে মহান আল্লাহ কুরআনের ইলম দান করেছেন। সে তদনুযায়ী রাত-দিন আমল করে। আরেক ব্যক্তি যাকে আল্লাহ তা’আলা অর্থ-সম্পদ দান করেছেন। সে রাত-দিন তা (আল্লাহর পথে) খরচ করে। (এ দু’ ব্যক্তির সাথে হিংসা পোষণ করা যায়। (বুখারী ৩৭৩৭ মুসলিম ৮১৫)

 মুহাদ্দিসগণ হাদীসটির ব্যাখ্যা নিম্নরূপে করেছেন,
الْحَسَدُ قِسْمَانِ : حَقِيقِيٌّ وَمَجَازِيٌّ ، فَالْحَقِيقِيُّ تَمَنِّي زَوَالِ النِّعْمَةِ عَنْ صَاحِبِهَا ، وَهَذَا حَرَامٌ بِإِجْمَاعِ الْأُمَّةِ مَعَ النُّصُوصِ الصَّحِيحَةِ ، وَأَمَّا الْمَجَازِيُّ فَهُوَ الْغِبْطَةُ وَهُوَ أَنْ يَتَمَنَّى مِثْلَ النِّعْمَةِ الَّتِي عَلَى غَيْرِهِ مِنْ غَيْرِ زَوَالِهَا عَنْ صَاحِبِهَا ، فَإِنْ كَانَتْ مِنْ أُمُورِ الدُّنْيَا كَانَتْ مُبَاحَةً ، وَإِنْ كَانَتْ طَاعَةً فَهِيَ مُسْتَحَبَّةٌ ، وَالْمُرَادُ بِالْحَسَدِ فِي هَذَا الْحَدِيثِ مَعْنَاهُ الْمَجَازِيُّ
হিংসা দু’ প্রকার। বাস্তব এবং রূপক। বাস্তব হিংসা হল- কোন ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ যে নেয়ামত দান করেছেন তার অবসান কামনা করা। এটি সহিহ বর্ণনার আলোকে উম্মতের ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্যে হারাম। আর রূপক অর্থে হিংসা হল-ঈর্ষা। অর্থাৎ, অবসান কামনা না করে নিজের জন্যেও অনুরূপ নেয়ামত কামনা করা। যদি এটি জাগতিক বিষয়ে হয় তাহলে জায়েয এবং ইবাদতের ক্ষেত্রে হলে মুস্তাহাব। আর এই হাদিসে হিংসা দ্বারা রূপক অর্থই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। (মুসলিম শারহে নববী ১/২৭২)


হাফেজ ইবন হাজর আসকালানি রহ. বলেন,
وأما الحسد المذكور في الحديث فهو الغبطة، وأطلق الحسد عليها مجازا، وهي أن يتمنى أن يكون له مثل ما لغيره من غير أن يزول عنه
হাদিসেল্লেখিত হিংসা দ্বারা উদ্দেশ্য, ঈর্ষা। একে হিংসা শব্দ দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে রূপকভাবে। আর ঈর্ষা বলা হয়, অবসান কামনা না করে নিজের জন্যেও অনুরূপ নেয়ামত কামনা করা। (ফাতহুল বারী ১/৭৩)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...