আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
167 views
in পবিত্রতা (Purity) by (9 points)
edited by
আসসালামু'আলাইকুম উস্তায।

আমার প্রতিমাসেই কিছুদিন ঘনঘন সাদাস্রাব যায়। এসময় অনেক ক্ষেত্রে আধঘন্টার মধ্যেই স্রাব যায় এমনও হয়। আমি প্রতি ওয়াক্তের জন্য তাই আগে টিস্যু দিয়ে পরিষ্কার করে নেই সতর্কতাবশত। যোনির ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়ে স্রাব বের করে করেও মুছি। (1) এতে কি পবিত্রতা অর্জন হয়/ যোনির ভিতরে ঢোকানোর জন্য গুনাহ হয়( ভিতরে না ঢুকিয়ে  মুছলে   দেখা যায়় আবার বের হয় বা হওয়াার সম্ভভাবনাভ ম্ম্ম থাকেকভ র)? দেেেে

কোনো ওয়াক্তে দেখা যায় হয় বায়ু বের হয়ে ওযু ভাঙ্গে, একাধিকবার ওযু এমনিতেই করা লাগে তখন, আবার ওযু করে এসে নামাজে দাঁড়ালে স্রাব বের হয়ে যায়। অর্থাৎ এমনিতে পাঁচ দশ মিনিটের মধ্যে হয়তো স্রাব বের হয় না, ফরজ পড়ার সময় যেটা,কিন্তু ওযু একাধিকবার করা লাগলে বা কোনো কারণে একটু দেরি হলে ফরজ নামাজটা পড়ে শেষ করতে করতেই স্রাব বের হয়ে যায়। এক ফরজ নামাজ পড়তেই দুইবার স্রাব পরিষ্কার করা লাগে তখন। (২)এক্ষেত্রে কি আমি মা'যুর হবো?
যদি এমন হয় যে, কোনো ওয়াক্তে পরিষ্কার হয়ে নামাজ শুরু করার পর ফরজ পড়তে পড়তেই স্রাব বের হলো, তখন মা'যুর কিনা যাচাই করতে নামাজ বাদ দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম,এই অপেক্ষার সময়টা(হয়তো দশ পনের মিনিট/আধ ঘন্টা) দেখলাম নতুন করে বের হলো না তবে ভিতরে স্রাব আছে এমন বোধ হলো, এরপর নামাজে দাঁড়ালে আবার বের হলো স্রাব। (৩)তখন কি আমি মা'যু্র হবো?(মাঝের সময়টা যদিও বন্ধ ছিলো)
(৪)যদি স্রাব নিজে থেকে যোনির বাইরে না আসে বা কাপড়ে না লাগে, বরং দৃঢ়ভাবে মনে হয় যে কাপড়টাই রুকু/ সিজদাতে ভিতরে ঢুকে গেছে আর তখন হালকা একটু লেগে গেছে কাপড়ে, তখনও কি ওযু ভাঙবে?

আজকে ইশায় স্রাব মুছে পরিষ্কার করে ওযু করে ৮ রাকাত পড়েছি। তারপর চেক করে দেখি হালকা স্রাব লেগে গেছে। তখন প্রস্রাবের চাপ ছিলো । মনে করলাম যে প্রস্রাবের চাপ থাকায় হয়তো স্রাব পরিষ্কার করার পরও এত তাড়াতাড়ি আবার বের হলো। তাই ইস্তিঞ্জা করে আবারও ভালোভাবে টিস্যু দিয়ে ইস্তিঞ্জার পানি+স্রাব মুছে ওযু করে নামাজে দাড়াই। ৪ রাকাত পড়েই আবার দেখি স্রাব লেগে গেছে। (তবে স্রাব নিজে থেকে বের হয়েছে, নাকি আমার কাপড়ই যোনির ভিতরে ঢুকে যাওয়ায় স্রাবের স্পর্শ লেগেছে তা বুঝলাম না।) তখন কাপড় বদলাই এবং কাপড়টাতে আর সাথে সাথে স্রাব লাগে না । (এতে বুঝি যে স্রাব তখন নিজে থেকে বের হয়েছিলো না বোধ হয়, বরং কাপড়টাই ভিতরে স্রাব গিয়ে লেগে গেছে।) তাই আর স্রাব না মুছে শুধু ওযু করে নামাজ পড়ি ৪ রাকাত। (৫)এতে কি পবিত্রতা হয়েছে,নাকি স্রাব টিস্যু দিয়ে নতুন করে পরিষ্কার করা প্রয়োজন ছিলো?
অবশ্য ৪রাকাত পড়ার পরেও কাপড়ে আর স্রাব লাগেনি,তবে ভিতরে আছে বুঝতে পারছিলাম এবং এর পরেই পাঁচ মিনিট এর মধ্যে আবার কাপড়ে সরাসরি স্রাব লাগে। অর্থাৎ ইস্তিঞ্জা করে স্রাব পরিষ্কার করে মাঝে এই সময়গুলো যাওয়ার পরই আবার স্রাব বের হয়ে গিয়েছে। (৬) এক্ষেত্রেও আমি কি মা'যুর হবো না?
এসব সময়ে পুরো ওয়াক্ত দেখতে গেলে তো এভাবে তিন চারবার করেই নামাজ পড়তে থাকতে হবে যখন না নামাজ পরিষ্কার থেকে পড়তে পারছি..। (৭)এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী?
[সাদাস্রাব বারবার বের হলেও পরিমাণে সাধারণত খুব বেশি বের হয় না এবং মেডিকেল রিপোর্ট এও তেমন কোনো সমস্যা নেই আমার।]

 (৮)আর যদি স্রাব ভেজা/কাঁচা থাকে তবুও এক দিরাহামের কম হলে ওই স্রাবযুক্ত কাপড় পড়ে নামাজ পড়লে কি নষ্ট/ মাকরুহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
এতে পবিত্রতা অর্জন হয়।
এতে আপনার গুনাহ হবেনা।

(০২)
https://ifatwa.info/42277/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
কোনো অসুস্থ ব্যক্তি শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য শর্ত হলো,

شرط ثبوت العذر ابتداء أن يستوعب استمراره وقت الصلاة كاملا وهو الأظهر كالانقطاع لا يثبت ما لم يستوعب الوقت كله-

শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য কোনো নামাযের শুরু থেকে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত উযর স্থায়ী থাকা শর্ত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪০)

কোনো ব্যাক্তি মা'যুর প্রমানিত হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে পুরো সময় উক্ত ওযর পাওয়া জরুরি নয়,বরং পরবর্তী প্রতি ওয়াক্তে এক বারও যদি উক্ত ওযর পাওয়া যায়,তাহলে সে মা'যুরই থাকবে।   
,
সুতরাং যদি কোনো একটি নামাযের শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত তথা  সম্পূর্ণ ওয়াক্ত আপনার এমনভাবে অতিবাহিত হয় যে,উক্ত সমস্যা বন্ধ না হয়,বরং চলতেই থাকে,এই উযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট ছুরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,তাহলে আপনি মা'যুর। 
আপনি প্রতি ওয়াক্তের জন্য অযু করবেন,এই অযু দিয়ে উক্ত ওয়াক্তের মধ্যে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারবেন।
(যদি অন্য কোনো অযু ভঙ্গকারী কিছু না পাওয়া যায়।)
,
পরবর্তী ওয়াক্তে আবার অযু করবেন
,
আর যদি আপনার ওযরটি এমন না হয়,তাহলে আপনি শরয়ী ভাবে মা'যুর প্রমাণিত হবেন না।

বিস্তারিত জানুনঃ  
,
মা'যুরের বিধান ইস্তেহাজা ওয়ালা মহিলার ন্যায়। 
আবু দাউদ শরীফের ১৮০ নং হাদীসে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَخْلَدٍ الطَّالْقَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، - يَعْنِي ابْنَ مَغْرَاءَ - حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، أَخْبَرَنَا أَصْحَابٌ، لَنَا عَنْ عُرْوَةَ الْمُزَنِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، بِهَذَا الْحَدِيثِ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ لِرَجُلٍ احْكِ عَنِّي أَنَّ هَذَيْنِ - يَعْنِي حَدِيثَ الأَعْمَشِ هَذَا عَنْ حَبِيبٍ وَحَدِيثَهُ بِهَذَا الإِسْنَادِ فِي الْمُسْتَحَاضَةِ أَنَّهَا تَتَوَضَّأُ لِكُلِّ صَلَاةٍ 

উরওয়াহ আল-মুযানী ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে উপরোক্ত হাদীস বর্ণনা করেন। ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, ইয়াহ্ইয়াহ্ ইবনু সাঈদ আল-কাত্তান এক ব্যক্তিকে এ মর্মে আদেশ দেন, আমার সূত্রে ঐ হাদীস দু’টি বর্ণনা কর। অর্থাৎ আ‘মাশের হাদীস এবং একই সানাদে ইস্তিহাযা রোগিনী’’ সম্পর্কে বর্ণিত তার ঐ হাদীস যাতে রয়েছে, ‘ইস্তিহাযা রোগিনী প্রত্যেক সলাতের জন্যই অযু করবে।’ 

আরো জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি মা'যুর বলে গন্য হবেননা।

আপনি যেহেতু নামাজের পুরো ওয়াক্তের কোনো সময়ে ঠিক ভাবে নামাজ পড়তে পারছেন,আর আপনার স্রাব যেহেতু সব সময় বাহিরের দিকে আসেনা,ভিতরেই থাকে,সার্বিক দিক৷ বিবেচনা করে বলা যায় যে আপনি মা'যুর হবেননা।

★তবে কোনো নামাজের পুরো ওয়াক্ত জুড়েই যদি আপনার স্রাব বাহিরের দিকে আসতেই থাকে,পবিত্র হয়ে ছোট সূরা দিয়ে হলেও নামাজ আদায় সম্ভব না হয়,সেক্ষেত্রে আপনি মা'যুর বলে বিবেচিত হবেন।

(০৩)
না,প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনি মা'যুর হবেননা।

আপনি যেহেতু নামাজের পুরো ওয়াক্তের কোনো সময়ে ঠিক ভাবে নামাজ পড়তে পারছেন,আর আপনার স্রাব যেহেতু সব সময় বাহিরের দিকে আসেনা,ভিতরেই থাকে,সার্বিক দিক৷ বিবেচনা করে বলা যায় যে আপনি মা'যুর হবেননা।

তবে কোনো নামাজের পুরো ওয়াক্ত জুড়েই যদি আপনার স্রাব বাহিরের দিকে আসতেই থাকে,পবিত্র হয়ে ছোট সূরা দিয়ে হলেও নামাজ আদায় সম্ভব না হয়,সেক্ষেত্রে আপনি মা'যুর বলে বিবেচিত হবেন।

(০৪)
এক্ষেত্রে অযু ভেঙ্গে যাবেনা। 
তবে কাপড়ে নাপাকি লেগে থাকার দরুন দেখতে হবে যে এটি এক দিরহাম চেয়ে কম  কিনা?

যদি এক দিরহাম চেয়ে কম হয়,তাহলে উক্ত নামাজ হয়ে যাবে।

আর যদি এক দিরহাম সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি হয়,তাহলে নামাজে যেহেতু কাপড় থাকা শর্ত,তাই নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

(০৫)
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে "অবশ্য ৪রাকাত পড়ার পরেও কাপড়ে আর স্রাব লাগেনি,তবে ভিতরে আছে বুঝতে পারছিলাম""

সুতরাং আপনার উক্ত চার রাকাত নামাজ আদায় হয়ে গিয়েছে।

এতে আপনি নামাজের আগে পবিত্র হয়েছিলেন বলে গন্য করা হবে।

(০৬)
আপনি যেহেতু নামাজের পুরো ওয়াক্তের কোনো সময়ে ঠিক ভাবে নামাজ পড়তে পারছেন,আর আপনার স্রাব যেহেতু সব সময় বাহিরের দিকে আসেনা,ভিতরেই থাকে,সার্বিক দিক৷ বিবেচনা করে বলা যায় যে আপনি মা'যুর হবেননা।

তবে কোনো নামাজের পুরো ওয়াক্ত জুড়েই যদি আপনার স্রাব বাহিরের দিকে আসতেই থাকে,পবিত্র হয়ে ছোট সূরা দিয়ে হলেও নামাজ আদায় সম্ভব না হয়,সেক্ষেত্রে আপনি মা'যুর বলে বিবেচিত হবেন।

(০৭)
আপনি ভিতর থেকে বের করবেননা।
এমনিতেই যদি বাহিরে আসে,তাহলে সেই স্থান পাক করবেন,আর অযু ভেঙ্গে গিয়েছে বলে ধরবেন।

প্রত্যেক নামাজের পর চেক করবেন যে স্রাব বাহিরের দিকে বের হয়েছে কিনা,বের হলে কাপড় ও উক্ত স্থান পাক করে পুনরায় নামাজ আদায় করবেন।

আর বের না হলে তো কোনো সমস্যাই নেই।

আর মা'যুর হওয়ার শর্ত পাওয়া গেলে আপনি এভাবেই নামাজ আদায় করতে পারবেন।
চেক করতে হবেনা।

(০৮)
ঐ কাপড়ে নামাজ হয়ে যাবে।

তবে নামাজের মধ্যে বের হলে অযু ভেঙ্গে যাওয়ার দরুন নামাজ হবেনা।
কেননা অযু ছাড়া নামাজ হয়না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 157 views
0 votes
1 answer 248 views
0 votes
1 answer 155 views
...