আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
157 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আমার হারাম সম্পর্ক ছিলো।দ্বীনের বুঝ না থাকায় আমার দ্বারা যিনা হয়ে যায় একবার৷ সে ঘটনার পর থেকে প্রচন্ড অনুশোচনা আর পাপবোধ তৈরি হয়। আমি তারপর দ্বীনের বুঝ পাই৷ তখন সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসি। যদিও সে আমাকে বিয়ে করতে চায়। সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আাসার ২ বছর পরও সে বিয়ে করতে চায় হালাল ভাবে। সে মানুষ হিসেবে ভালো৷  কিন্তু নামাজের ব্যাপারে উদাসীন৷ এটা নিয়ে আমার দুশ্চিন্তা৷ আমি চাই এমন একজন জীবনসঙ্গী হবে যে আমাকে জান্নাতের পথে সাহায্য করবে৷ সে ব্যাংকে চাকরি করে৷ যেটা হারাম জানার পর বলেছে অন্য চাকরি পেলে ছেড়ে দিবে৷ এখন বর্তমানে দেশে চাকরি পাওয়া কঠিন তাই দেরি হচ্ছে। আমি তার সাথে কথা বলিনা গুনাহ হবে তাই৷ বাট সে চায় বিয়ে করি আমরা ব্যাংকে চাকরি থাকা অবস্হায়৷ আমি তো হালাল ভাবে সব শুরু করতে চাই তাই কোনো ভাবেই ব্যাংকের চাকরি মানতে পারিনা৷ আর তার নামাজের প্রতি উদাসীনতা মানতে পারিনা৷ এদিকে আমি অন্য কাউকে বিয়ে করলে সেই ব্যাক্তির হক্ব নষ্ট করা হতে পারে।হানাফী ফিকহ অনুযায়ী৷ আমি আর গুনাহ চাই না এই জীবনে৷ পরিবার দ্বীন বলতে কিছু বুঝে না৷ তারা চায় আমি বিয়ে করি যাকে পাই তাকে শুধু ছেলে চাকরীজিবি হতে হবে৷ এদিকে আমার শারীরিক সমস্যার কারনে বিয়ে তাড়াতাড়ি করতে বলেছেন ডাক্তার। আমি দুই বছর ধরে দোয়া করে যাচ্ছি৷ আমার এখন খুব হতাশ লাগে৷ যদিও আমি হতাশ হতে চাইনা৷ আমি হারাম কিছু দিয়ে বিবাহিত জীবন শুরু করতে চাইনা৷ একজন সঙ্গী চাই আল্লাহর পথে। কিন্তু আমি কিছুই পাচ্ছিনা কোনোদিকে৷ আমার বয়স ২৪, বয়সও বেড়ে যাচ্ছে পরবর্তীতে বাচ্চা হতে সমস্যা হতে পারে ডাক্তার বলেছন৷  মনে হয় আল্লাহ হয়তো আমার গুনাহের জন্য এমন শাস্তি দিচ্ছেন আমাকে৷ আমাকে নসীহা দিন আমি কি করবো! এসব হতাশা আমাকে ইবাদাতের ক্ষেত্রে দুর্বল করে ফেলছে। আমি ইবাদাতের স্বাদ হারিয়ে ফেলছি দিন দিন৷ মনে হচ্ছে যেনো হিদায়াাত হারিয়ে ফেলবো৷ আমার চারপাশের পরিবেশ টাও দ্বীনদ্বার না কেউ ই আমার ব্যাপারটা বুঝে না।।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


ব্যাংকের চাকুরি হারাম হওয়ার মূল কারণ দু’টি।যথা-
১-হারাম কাজে সহায়তা করা।
২-হারাম মাল থেকে বেতন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকা।

হারাম কাজের সহায়তার বিভিন্ন স্তর আছে। শরীয়তে সব প্রকার সহায়তা হারাম নয়।বরং সে সব সহায়তাই হারাম যা সরাসরি হারাম কাজের সহিত জড়িত থাকে। যেমন, সুদী লেনদেন করা। সুদী লেনদেন লিখে রাখা। সুদী টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ থেকে উসুল করা, ইত্যাদি ইত্যাদি।

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-
“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়,যে তার সাক্ষী হয়, এবং যে দলিল লিখে রাখে, তাদের সকলের উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন।(মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

তবে যদি ব্যাংকের এমন কোনো সেক্টরের কাজ হয়,যাতে  সুদী কাজে জড়িত হতে হয় না।যেমনঃ ড্রাইভার, ঝাড়ুদার, দারোয়ান, জায়েজ কারবারে বিনিয়োগ ইত্যাদি সেক্টর হয়,তাহলে যেহেতু এসবে সরাসরি সুদের সহায়তা নেই তাই এমন সেক্টরে কাজ করার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে। 

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/398

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন  

الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا ۗ وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا ۚ فَمَنْ جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّهِ فَانْتَهَىٰ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ ۖ وَمَنْ عَادَ فَأُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ [٢:٢٧٥

যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লাহ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। {সূরা বাকারা-২৭৫}

হাদীস শরীফে এসেছে  
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)
,

যদি স্ত্রীর আলাদা কোন উপার্জন না থাকে, তাহলে প্রয়োজনীয় অর্থ নেয়া জায়েজ হবে। সেই সাথে স্বামীকে সর্বদা হারাম ছেড়ে দিয়ে হালাল উপার্জন করতে তারগীব দিতে থাকবে।

স্ত্রীর কোনো প্রকার মাল না থাকলে সে স্বামীর উক্ত সম্পত্তি থেকে প্রয়োজন পর্যন্ত খোরাকি নিতে পারবে।

রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে,

وَفِي جَامِعِ الْجَوَامِعِ: اشْتَرَى الزَّوْجُ طَعَامًا أَوْ كِسْوَةً مِنْ مَالٍ خَبِيثٍ جَازَ لِلْمَرْأَةِ أَكْلُهُ وَلُبْسُهَا وَالْإِثْمُ عَلَى الزَّوْج ِتَتَارْخَانِيَّةٌ

যদি স্বামী সন্দেহজনক মাল দ্বারা খাদ্য বা কাপড় ক্রয় করে,তাহলে স্ত্রীর জন্য উক্ত খাদ্য এবং কাপড়-কে গ্রহণ করা জায়েয রয়েছে। গোনাহ অবশ্য স্বামীরই হবে।(তাতারখানিয়া)(রদ্দুল মুহতার-৬/১৯১)

যদি স্বামীর উপার্জন ছাড়া নিজস্ব হালাল সম্পদ দিয়ে চলা সম্ভব হয়, তাহলে স্বামীর হারাম টাকা নেয়া বৈধ হবে না

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
সুদী কারবারে জড়িত সকল প্রকার চাকুরী হারাম।আর হারাম মাল দ্বারা ভালো কিছু আশা করা যায়। সুতরাং যথাসম্ভব এমন রিশতায় কখনো রাজি হবেন না।

হ্যা যদি এছাড়া আপনার নিকট আরো কোনো অপশন না থাকে, তাহলে আপনি তাকে বিবাহ করে তার নিকট থেকে শুধুমাত্র শরয়ী ভরণপোষণ নিতে পারবেন। এ ছাড়া আর কিছুই গ্রহণ করতে পারবেন না। এবং গ্রহণ করা জায়েযও হবে না।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...