আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
173 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ।
আমরা ২ বোন, কোন ভাই নেই। আমার আম্মুর জায়গা এবং ব্যাংকে টাকা আছে।
১.আমার মায়ের সম্পত্তি ( পৌত্রিক সম্পত্তি নয়,আম্মুর উপার্জনের) কি আমরা ২ বোনই পাবো?  নাকি আমার বাবা, মামা,নানারাও পাবেন?

২. যদি এই সম্পত্তিতে তাদেরও হক থেকে থাকে তাহলে তাদের  থেকে অনুমতি নিয়ে বা শরীয়াতে আরো কোন উপায় আছে যেভাবে আম্মু আমাদের নামে সম্পত্তি লিখে দিতে পারবে? আম্মু চাচ্ছে উনি জীবিত থাকাবস্থায় আমাদের দুই বোনের নামে সম্পত্তি লিখে দিতে,রেকর্ড করে দিতে। কিন্তু আমি খুব চিন্তিত। কারণ, এখানে বাকী সবার হক থাকলে তাদের হক মারা হবে। যদি তাদের থেকেও অনুমতি নিতে হয়, তাহলে সেটা আম্মু মানবে না।  এমনিতেই  আমাদের ২ বোনের নামে লিখে দিবেন।দ্বীনের বুঝ নেই তাই এগুলো মানবে না।।আর পরিবারের কেউও তাদের হক ছাড়বে না হয়তো। কিন্তু বিষয়টা আমাকে খুব পীড়া দিচ্ছে!!! এখন এটার কি সমাধান উস্তায? কিভাবে এগুলো ভাগ বাটোয়ারা করবে?।
৩.আম্মু যদি শরীয়াত মোতাবেক নির্দেষ না মেনেই আমাদের নামে লিখে দেয় তাহলে পরবর্তীতে আমাদের কি করনীয়?  এর জন্য কি আমরাও গুনাহগার হবো? আম্মুকেই বা কীভাবে বুঝাতে পারি?

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ভূমিকা
হযরত আবু উমামা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺪْ ﺃَﻋْﻄَﻰ ﻛُﻞَّ ﺫِﻱ ﺣَﻖٍّ ﺣَﻘَّﻪُ ، ﻓَﻠَﺎ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَﺍﺭِﺙٍ
নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক হক্বদারকে তার প্রাপ্য হক্ব (নির্ধারণ)করে দিয়েছেন।সুতরাং ওয়ারিছদের জন্য আর কোনো ওসিয়্যাত নেই।
অর্থাৎ-মূত্যুর পরে কাউকে কিছু দানের সিদ্ধান্ত নিলে সেটা ওসিয়ত হয়ে যায়,আর নিজ ওয়ারিছদের মধ্য থেকে কারো জন্য ওসিয়ত করা জায়েয নয়।তবে ওয়ারিছ ব্যতীত অন্য কারো জন্য এক তৃতীয়াংশ মালে ওসিয়ত করা জায়েয আছে। (সুনানে আবু-দাউদ-২৮৭০সুনানে তিরমিযি-২১২০সুনানে নাসাঈ-৪৬৪১ইবনে মাজাহ-২৭১৩)

হযরত আনাস ইবনে মালেক রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّه ُمِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ যে ব্যক্তি তার ওয়ারিছদেরকে মিরাছ প্রদান থেকে পলায়ন করবে(তথা-ওয়ারিছদেরকে মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবে)আল্লাহ তা'আলা ক্বিয়ামতের দিন তাকে জান্নাতের মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ-২৭০৩)

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦِ اﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ - ﻋَﻦِ اﻟﻨَّﺒِﻲِّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ: «ﻻَ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَاﺭِﺙٍ، ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺸَﺎءَ اﻟْﻮَﺭَﺛَﺔُ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ ওয়ারিছদের জন্য কোনো ওসিয়ত নেই,তবে যদি অন্যান্য সমস্ত ওয়ারিছরা রাজি থাকে তাহলে জায়েয আছে। (মিশকাত-৩০৭৪)

সুতরাং
(১)
যদি কারো শুধুমাত্র দুই মেয়েই থাকে তাহলে তার মৃত্যর পর তার ঐ দুই মেয়ে পূর্ণ সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ পাবে।
বাকী এক তৃতীয়াংশ  ঐ মৃতব্যক্তির অন্যান্য আসহাবে ফারায়েযরা পাবেন। যেমন,স্বামী, ভাই,ভাইয়ের সন্তানরা পাবে। স্বামী চার ভাগের এক ভাগ পাবে।আর ভাই বা ভাইয়ের ছেলেরা বাদবাকী সমস্ত পেয়ে যাবে।

(২)মৃত্যু পরবর্তী সম্পদকে  আল্লাহ তা'আলা নিজেই বন্টন করে দিয়েছেন।তাই কারো মৃত্যুর পর আল্লাহ তা'আলা প্রদত্ত বিধি-বিধানের আলোকেই তার সম্পদ বন্টন করতে হবে।এক্ষেত্রে কোনো ওয়ারিছকে তার নির্ধারিত অংশ ব্যতীত অতিরিক্ত কিছু দেয়া যাবে না বা তার ওসিয়ত করা যাবে না। জায়েয হবে না।তবে বাকী সমস্ত ওয়ারিছদের সম্মতিতে কোনো এক ওয়ারিছকে সমস্ত সম্পত্তি বা তার নির্ধারিত অংশের চেয়ে বেশী দেয়া যাবে। মৃত্যুর সময় এক তৃতীয়াংশ সম্পত্তিকে ওয়ারিছ ব্যতীত অন্য যে কারো জন্য ওসিয়ত করা জায়েয আছে।

হ্যা, যদি আপনার মা তার পূর্ণ সম্পত্তিকে আপনারা দুই বোনের নামে উনার জীবদ্দশায় দিয়ে যান,তাহলে আপনার মা গোনাহগার হলেও আপনারা দুই বোন পূর্ণ সম্পত্তির মালিক হয়ে যাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।
by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ উস্তায।

আপনি বলেছেনঃ  
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦِ اﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ - ﻋَﻦِ اﻟﻨَّﺒِﻲِّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ: «ﻻَ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَاﺭِﺙٍ، ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺸَﺎءَ اﻟْﻮَﺭَﺛَﺔُ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ ওয়ারিছদের জন্য কোনো ওসিয়ত নেই,তবে যদি অন্যান্য সমস্ত ওয়ারিছরা রাজি থাকে তাহলে জায়েয আছে। (মিশকাত-৩০৭৪)
এটার মানে কি আমার মামা,নানা ওনারা যদি অনুমতি দেন  তাহলে আম্মু ওনার জীবিত থাকা অবস্থায় আমাদের নামে লিখে দিতে পারবেন? এতে কোন গুনাহ হবে না? কোন সন্তান চাইবে না তার মা গুনাহগার হোক!!! 

আর আমার আম্মু আব্বু সেপারেটেড।তাহলে আব্বুও কি এখানে অংশীদার।
by (590,550 points)
আপনার আম্মু যদি আপনাদের নামে লিখে দেন, তাহলে অবশ্যই আপনার আম্মু গোনাহগার হবেন।তবে যদি আপনার আম্মুর অন্যান্য ওয়ারিছরা সমর্থন দেন।, তাহলে তো তিনি গোনাহগার হবেন না।আপনার আম্মুর সাথে আব্বুর তালাক না হলে আব্বু ওয়ারিছ হবেন।যদি তিনি বেঁচে থাকেন,যখন আপনার আম্মু মারা যাবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...