আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
148 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (51 points)
edited by
আসসালামুআলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ।

১।কোন স্ত্রী যদি মেসেজে বলে আমি তুমার সাথে সংসার করতে পারব না,সারাজীবন থাকতে পারব না।স্বামী যদি এর পর নিয়ত ছাড়া কেনায়া শব্দ বলে তাহলে কি তালাক হয়?মানে তখন স্বামী ধরেন কেনায়া তালাকের ব্যাপারে জানত না। শুনেছি  মেসেজে স্ত্রী তালাক না চাইলে নিয়ত ছাড়া কেনায়া শব্দ বললে তালাক হয় না মানে এখানে প্রশ্ন করে জেনেছি এটা।আল্লাহ ভালো জানেন নাকি বুঝতে ভুল হয়েছে জানি না।

২।ধরেন কোন মানুষের ওয়াসওয়াসা বেশি।সে তালাকের প্রশ্ন এই সাইটে লেখার সময় ওর মনে ওয়াসওয়াসা আসতে থাকে। ঐ শব্দটা লেখার সময় ।মনে বিভিন্ন ওয়াসওয়াসা আসতে থাকে।না না করে তবু ওয়াসওয়াসা আসে।না চাওয়া সত্ত্বেও।এর দ্বারা কি তালাক হয়?মানে সে জানে প্রশ্ন করার জন্য ঐ শব্দটা লিখতেছে।কিন্তু মনে আবার তেমন চিন্তা আসে যায়।আবার না না করে।

৩।ধরেন কারো মনে তালাকের ব্যাপারে প্রশ্ন এই সাইটে করার সময়  হঠাত মনে ওয়াসওয়াসা আসতে শুরু করল মানে কেনায়া তালাকের ব্যাপারে প্রশ্ন করার সময় ।সে চায় না বিচ্ছেদ হোক।এমনিতে প্রশ্ন করার সময়।এমনকি "তালাকের  " শব্দটা টা লেখার সময় ও।এই শব্দটা লেখার সময় সবসময় ভয় হয় ওর।সে না না করেছে মনে মনে।আবার ওয়াসওয়াসা আসতে শুরু করল এই শব্দটা  প্রশ্ন করার নিয়তে না খারাপ কোন নিয়তে বলেছে মানে কোলনের ভেতর যেই শব্দটা লিখেছে ওটা অথবা ধরেন ওয়াসওয়াসা আসতেছে সেই শব্দটা স্ত্রীর দিকে ইন্গিত করে বলেছে।মানে উল্টা পাল্টা সব ওয়াসওয়াসা। আবার না না করতেছে মনে মনে ধরেন।না না করার সময় ও ওয়াসওয়াসা আসতেই থাকে সেসব নিয়ে।না না করতে করে মাঝে মাঝে টেনশনে ভয়ে কিছু করতে পারে না।কারন সে ধরেন তালাক চায় না কিন্তুু সবসময় ভয়ে থাকে ওয়াসওয়াসা আসতে থাকে এসব বিষয়ে।এর কারনে কি তালাক হয়?

৪।৩ নং প্রশ্নের খারাপ নিয়তে মানে বুঝেছেন? আর ৩নং প্রশ্নটা যার সে লিখলে প্রশ্নটা কি সমস্যা হবে বৈবাহিক সম্পর্কে ?

৫।আমার স্বামী আমাকে পাওয়ার দিছে।৩নং প্রশ্নটা আমি অন্য জনের দিকে ইন্গিত করে করেছি।আমার প্রচুর ওয়াসওয়াসা আসতে থাকে।খুব ভয় পায় প্রশ্ন করার সময়।মানে ওয়াসওয়াসা আসাার কারনে ।প্রশ্ন ওটা করার কারনে কি কোন সমস্যা হবে? মাসআলা জানার জন্য করেছি।আমি স্বামীর সাথে থাকতে চায়।

৬। ধরেন স্বামী স্ত্রী কেনায়া তালাকের ব্যাপারে কোনদিন শুনেও নি।স্ত্রী ধরেন মেসেজে বলল সংসার করতে পারবে না স্বামীর সাথে বা থাকতে পারবে না সারাজীবন। এটা বলার সময় ধরেন স্ত্রীর মনে তালাকের চিন্তা চলতেছে মানে হয়ত ভবিষ্যৎ এ দিবে এমন নিয়তে বলেছে বা মনে মনে তালাক চাওয়ার ইন্গিতে বলেছে।কিন্তু তালাক চায় নি সরাসরি। এরপর স্বামী কেনায়া শব্দ নিয়ত ছাড়া বললে কি তালাক হবে?  কারন শুনেছি মেসেজে তালাক চাইলে স্ত্রী এর পর কেনায়া শব্দ নিয়ত ছাড়া বললেও তালাক হয়।এখানে তহ স্ত্রী সরাসরি তালাক ও চায় নি।আর স্বামী তালাক চাওয়ার  উত্তরেও বলে নি।যা ছিল ধরেন স্ত্রীর মনে ছিল। আর জেনেছি এই সাইটে প্রশ্ন করে মেসেজে স্ত্রী তালাক দিবে বললে স্বামীকে এরপর ও স্বামী নিয়ত ছাড়া কেনায়া শব্দ বললে তালাক হয় না।

৭।৬ নং প্রশ্নটা অন্য জনের দিকে ইন্গিত করে করেছি। প্রশ্নটা করার সময় মনে হচ্ছিল স্ত্রী যা বলেছে যেই নিয়তে বলেছে আমিও সেই নিয়তে বলেছিলাম।কিন্তু পরে আবার মনে আসে না তালাক চাওয়ার জন্য বলি নি বা তালাক চাওয়ার উদ্দ্যশ্যে বলি নি আমি।তাই আমি প্রশ্নটা অন্য জনের দিকে ইন্গিত করে করেছি।যাতে বৈবাহিক সম্পর্কে সমস্যা না হয়। ৬ নং প্রশ্নটা করার কারনে বা   মনে মনে এসব চিন্তা আসার কারনে কি কোন সমস্যা হবে বৈবাহিক সম্পর্কে?  আর আমার স্বামী আমাকে পাওয়ার দিছে। মাসআলা জানার জন্য করেছি।

1 Answer

0 votes
by (559,530 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


https://ifatwa.info/45359/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
তালাক খুবই মারাত্মক  একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

যদি স্বামী তালাক দেয়ার উপর ধমক দিতে থাকে,বা স্ত্রী তালাক চায়,বা সেখানে অন্য কোনো ব্যাক্তি সেই স্বামীকে তালাক দেয়ার উপর উদ্ভুদ্ধ করে,তাহলে সেটিকে তালাকের মজলিস,মুযাকারায়ে তালাক বলা হবে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
https://ifatwa.info/1049/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  

 "ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া) তে বর্ণিত রয়েছে,

 لَا يَقَعُ بِهَا الطَّلَاقُ إلَّا بِالنِّيَّةِ أَوْ بِدَلَالَةِ حَالٍ كَذَا فِي الْجَوْهَرَةِ النَّيِّرَةِ. ثُمَّ الْكِنَايَاتُ ثَلَاثَةُ أَقْسَامٍ (مَا يَصْلُحُ جَوَابًا لَا غَيْرُ) أَمْرُك بِيَدِك، اخْتَارِي، اعْتَدِّي (وَمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَرَدَّا لَا غَيْرُ) اُخْرُجِي اذْهَبِي اُعْزُبِي قُومِي تَقَنَّعِي اسْتَتِرِي تَخَمَّرِي (وَمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَشَتْمًا) خَلِيَّةٌ بَرِيَّةٌ بَتَّةٌ بَتْلَةٌ بَائِنٌ حَرَامٌ


কেনায়া শব্দাবলী দ্বারা নিয়ত ব্যতীত বা তালাকের ব্যাপারে ইশরা ইঙ্গিত ব্যতীত তালাক পতিত হয় না।কেনায়া তালাক তিন প্রকার যথাঃ-


(১)

যে সমস্ত শব্দাবলী দ্বারা তালাক ব্যতীত ভিন্ন কিছু বুঝা যায় না।যেমন,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি পছন্দ করো,তুমি গণনা করো।


(২) যে সমস্ত শব্দাবলী দ্বারা তালাক হওয়া এবং না হওয়া উভয়টি বুঝায়।যেমন,তুমি বের হও,তুমি চলে যাও,তুমি আমার কওম থেকে দূরে চলে চাও,তুমি নেকাব পরিধান করো,তুমি পর্দার আড়ালে চলে যাও,তুমি উড়না পরিধান করো।


(৩) যা তালাক এবং গালির উভয়টির সম্ভাবনা রাখে। হারাম,বায়িন,মুক্ত,দায়মুক্ত, বাত্তাহ,বাতলাহ ইত্যাদি শব্দাবলি।


পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট তিন প্রকারঃ যথাঃ- 

وَالْأَحْوَالُ ثَلَاثَةٌ (حَالَةُ) الرِّضَا (وَحَالَةُ) مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ بِأَنْ تَسْأَلَ هِيَ طَلَاقَهَا أَوْ غَيْرُهَا يَسْأَلُ طَلَاقَهَا (وَحَالَةُ) الْغَضَبِ 

পরিবেশ ও পরিস্থিতি তিন প্রকার।(১) হালতে রেযা- খুশির হালত(২) তালাকের শব্দাবলী উচ্ছারণের হালত(৩) রাগান্বিত অবস্থা।


فَفِي حَالَةِ الرِّضَا لَا يَقَعُ الطَّلَاقُ فِي الْأَلْفَاظِ كُلِّهَا إلَّا بِالنِّيَّةِ وَالْقَوْلُ قَوْلُ الزَّوْجِ فِي تَرْكِ النِّيَّةِ مَعَ الْيَمِينِ

(১) খুশির হালতে নিয়ত ব্যতীত কেনায়া শব্দাবলী দ্বারা তালাক পতিত হবে না।নিয়ত না থাকার বিষয়ে স্বামীর কথাই কসমের সাথে গ্রহণযোগ্য। 


وَفِي حَالَةِ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ يَقَعُ الطَّلَاقُ فِي سَائِرِ الْأَقْسَامِ قَضَاءً إلَّا فِيمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَرَدَّا فَإِنَّهُ لَا يُجْعَلُ طَلَاقًا كَذَا فِي الْكَافِي

(২)তালাকের আলোচনার পরিস্থিতিতে সকল প্রকার কেনায়া তালাকে তালাক পতিত হবে।তবে যে শব্দগুলো তালাকের আবেদনের জবাব এবং রদ উভয়টা বুঝাবে,সে শব্দগুলো দ্বারা তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
উপরে উল্লেখ রয়েছে যে তালাকের আলোচনার পরিস্থিতিতে যে শব্দগুলো তালাকের আবেদনের জবাব এবং রদ উভয়টা বুঝাবে,সে শব্দগুলো দ্বারা তালাক পতিত হবে না।
সে শব্দ গুলো দিয়ে তালাক হওয়ার জন্য নিয়ত শর্ত।
সেই শব্দ গুলো হলোঃ
তুমি বের হও,তুমি চলে যাও,তুমি আমার কওম থেকে দূরে চলে চাও,চলে যাও,বের হও ইত্যাদি।  

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
https://ifatwa.info/53651/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
স্ত্রী যদি বলে স্বামীকে তুমাকে ছেড়ে দিব বা তালাক দিব।অর্থাৎ স্ত্রী তালাক চায়নি। এরপর স্বামী কোনো কেনায়া শব্দ বলে,তাহলে  স্বামীর নিয়ত ছাড়া তালাক হবে না। কারন এখানে তো স্ত্রী তালাক চায়নি , তাই এখানে মুযাকারায়ে তালাক হয়নি।

★ প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতেও যেহেতু স্ত্রী তালাক চায়নি।
আর স্বামীরও তালাকের নিয়ত নেই।
তাই এক্ষেত্রে তালাক হবেনা। 
এটিকে মুযাকারায়ে তালাক বা তালাকের মজলিস বলা হবেনা।

(০২)
এর দ্বারা তালাক হবেনা।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক হবেনা। 

(০৪)
না,এতে বৈবাহিক সম্পর্কে সমস্যা হবেনা।

(০৫)
উক্ত প্রশ্ন করার কারনে কোনো সমস্যা হয়নি।

(০৬)
এক নং প্রশ্নের জবাব দ্রষ্টব্য।

(০৭)
উক্ত প্রশ্ন করার কারনে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...