আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
217 views
in পবিত্রতা (Purity) by (9 points)
reopened by
আমার হায়েযের তিনদিন থেকে হায়েয থাকা না থাকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়া শুরু হয়। আমি জানি যে দশদিন পর্যন্ত সাদা বাদে সবই হায়েযের রং।
আমার আসলে হঠাৎ দেখা যায় প্যাড এ কোনো রক্ত নেই। আমি যদি টিস্যু দিয়ে চেক করি,তখন আবার লালচে স্রাব আসে। আবার দেখা যায় লালচে স্রাবও না, টিস্যু দিলে লাল বা মেটে বর্ণের তরল আসছে। আমি এরকম যোনিপথে হঠাৎ সাদা বা পরিপূর্ণ শুষ্ক অবস্থা দেখি আবার হঠাৎ লাল স্রাব অথবা অন্য রং এর বস্তু দেখি। এরকম বারবার হতেই থাকে তাই এরকম সময়ে আমি প্রতি ওয়াক্ত হলে কয়েকবার করে করে টিস্যু দিয়ে মুছে যদি সাদা দেখি তবেই আমি গোসল করে নামাজ পড়ি। আবার দুই তিন ওয়াক্ত এরকম পরিপূর্ণ সাদা দেখার পর হঠাৎ আবার ব্লাড বাইরে তথা কাপড়ে আসতে দেখা যায়। কখনো কখনো ব্লাড বাইরে তথা আন্ডারওয়্যারেও আসে না, অর্থাৎ পরনের কাপড় সম্পূর্ণ শুষ্ক থাকে কিন্তু টিস্যু দিয়ে চেক করলে টিস্যুতে হালকা লাল অথবা হলুদ পদার্থ দেখা যায়। কখনো কখনো এমন হয় যে টিস্যুতেও খুউউব সামান্য হলুদ বর্ণ দেখা যায়, আবার কখনো কখনো এমন হয় যে দুই তিনবার টিস্যু দিয়ে মোছার পর হয়তো চতুর্থ বার টিস্যুতে সামান্য হলুদ বা মেটে রঙের মতো তরল দেখা যায়।
উল্লেখ্য,প্যাড শুকনো দেখা শুরু করলে অনেক সময় প্যাডের পরিবর্তে ওই স্থানে টিস্যু বসিয়ে দিয়ে রাখি, এতে মাঝে মাঝে একটু পরে টিস্যু বের করলে হালকা স্রাব দেখা যায়,তবে বেশিরভাগ সময়েই টিস্যুটাও শুকনো থেকে যায়, কিন্তু সেই টিস্যুই যদি তখন হাত দিয়ে ধরে যোনির ভিতরে ঢুকিয়ে চেক করি,তাহলে আবার হলুদ বা লাল স্রাবও টিস্যুতে লাগতে দেখা যায়।

আমার প্রশ্ন:

১.হায়েযের স্রাব বন্ধ হওয়া বোঝার পদ্ধতি আসলে কী?(লাল বা সাদা ছাড়া অন্য বর্ণের স্রাব যোনির ভিতরে থাকলে কি তা অপবিত্রতা হিসেবে গণ্য নাকি পবিত্রতা সেটাই তো জানি না)

   ক)এই যে আমি কাপড়ে কোনো তরল না আসতে দেখলে বা টিস্যু/প্যাডে কিছু লাগতে না দেখলে সরাসরি টিস্যু যোনির ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়ে দেখি সাদা আসছে নাকি অন্য কোনো বর্ণ আসছে এবং সেই ভিত্তিতে পবিত্র হই,এটা কি ঠিক আছে?
খ) নাকি টিস্যু এভাবে ভিতরে ঢুকিয়ে দেখার প্রয়োজন নেই? তাহলে কি যোনির ভিতরে না ঢুকিয়ে শুধু আন্ডারওয়্যারের ওপরে টিস্যু বসিয়ে রেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে চেক করবো যে টিস্যু তে কিছু লাগলো কিনা? নাকি তারও প্রয়োজন নেই, অর্থাৎ শুধু পরনের অন্তর্বাস বা প্যাড শুকনো থাকলেই নিজেকে পবিত্র ধরবো?

২. এক টা নামাজের ওয়াক্তে কতবার চেক করা প্রয়োজন যে পবিত্র হয়েছি কিনা? অর্থাৎ ধরুন আসরের ওয়াক্ত ৪.০০-৫.৩০। এখন, আমি যদি ৪.৩০ এর মধ্যে একবার হলুদ বা মেটে সামান্য কিছু দেখি,আমার কি এই ওয়াক্তের জন্য আবারো চেক করা প্রয়োজন?

[##আমার এরকম অনেক হয় যে আসরের সময় একবার হালকা বর্ণের কিছু পেলে পরবর্তী এক দুই ঘণ্টা কিছু পাওয়া যায় না বা এর পর আবার ইশা পর্যন্ত সাদা থাকে আর ইশার সময় আবার অন্য বর্ণের (হলুদ/মেটে) সামান্য কিছু দেখা যায়; তাই আমি কি ৪.৩০ এ এরকম হালকা কিছু পেলে আর চেক না করে একদম সরাসরি ইশা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবো?]

     আর যদি ইশা পর্যন্ত অপেক্ষা করার অবকাশ না থাকে,এর আগেই চেক করা উচিত হয়, তাহলে ৫.০০ এর সময় দ্বিতীয় আরেকবার চেক করে যদি সাদা দেখি তাহলে কি আমার আসর পড়তে হবে?নাকি গোসল করে শুধু মাগরিব পড়তে হবে? আসর পড়তে হলে সেক্ষেত্রে তো গোসল করতে করতেই ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায় আর কাযা করতে হয় নামাজ,

       ২-ক) এরকম কাযার ক্ষেত্রে মাগরিবের সময় যেহেতু কম থাকে তাই মাগরিব আগে পড়ব নাকি আসর পড়ে মাগরিব পড়ব?

৩. ইশার ওয়াক্ত এর জন্য কতক্ষণ ধরে হায়েয চেক করা প্রয়োজন? অর্থাৎ আমি সাধারণত কোনোদিন ১১টায় কোনোদিন ১২টায় এভাবে ঘুমাই, কোনো ব্যতিক্রম হলে ১টার মতো বাজে, স্বাভাবিক রুটিনে। এখন যদি ১১ বা ১২ টা তে হায়েযের হালকা স্রাব অর্থাৎ হলুদ বা মেটে রং দেখি, যার কিছু ঘণ্টা পরই হয়তোবা পবিত্র হয়ে যাওয়ার লক্ষণ পেলেও পেতে পারি, এমতাবস্থায় আমার কী করণীয়? আমি কি রাত ২/৩ টায় উঠে চেক করবো? তখন চেক করে সাদা পেলে গোসল করে শেষ মুহূর্তে ইশার নামাজ পড়বো? নাকি সরাসরি ফজরের ওয়াক্তের আগে চেক করবো এবং সাদা পেলে ফজরের নামাজ পড়বো?

1 Answer

0 votes
by (589,260 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হায়েযের সর্বোচ্ছ সময়সীমা ১০দিন।এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে।(বেহেশতী জেওর-১/২০৬)তথা সাদা রং ব্যতীত সকলপ্রকার রং ই হায়েযের অন্তর্ভুক্ত।

(وَمِنْهَا) النِّصَابُ أَقَلُّ الْحَيْضِ ثَلَاثَةُ أَيَّامٍ وَثَلَاثُ لَيَالٍ فِي ظَاهِرِ الرِّوَايَةِ. هَكَذَا فِي التَّبْيِينِ وَأَكْثَرُهُ عَشَرَةُ أَيَّامٍ وَلَيَالِيهَا. كَذَا فِي الْخُلَاصَةِ.
হায়েযের সর্বনিম্ন মেয়াদ ৩ দিন ৩ রাত। তিন দিনের কম রক্তস্রাব হলে সেটা হায়েয হিসেবে গণ্য হবে না। হায়েযের সর্বোচ্ছ মেয়াদ ১০ দিন১০ রাত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৬)

কারো ১০ দিনের ভিতর নির্দিষ্ট কয়েকদিন হায়েয আসার অভ্যাস থাকলে, অতঃপর কোনো কারণে সেই নিয়ম উলট পালট হয়ে গেলে,তখন করণীয় কি? সে সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
فَإِنْ لَمْ يُجَاوِزْ الْعَشَرَةَ فَالطُّهْرُ وَالدَّمُ كِلَاهُمَا حَيْضٌ سَوَاءٌ كَانَتْ مُبْتَدَأَةً أَوْ مُعْتَادَةً وَإِنْ جَاوَزَ الْعَشَرَةَ فَفِي الْمُبْتَدَأَةِ حَيْضُهَا عَشَرَةُ أَيَّامٍ وَفِي الْمُعْتَادَةِ مَعْرُوفَتُهَا فِي الْحَيْضِ حَيْضٌ وَالطُّهْرُ طُهْرٌ. هَكَذَا فِي السِّرَاجِ الْوَهَّاجِ.
মাঝেমধ্যে হায়েয হওয়া আবার মাঝেমধ্যে বন্ধ হওয়া, দশ দিনের ভিতর সবকিছুই হায়েয হিসেবে গণ্য হবে।চায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন ঐ মহিলা প্রথমবার হোক বা এ ব্যাপারে অভ্যস্ত থাকুক।
যদি রক্তস্রাব দশদিন অতিক্রম করে যায়, তাহলে প্রথমবার এ পরিস্থিতির সম্মুখিন মহিলার জন্য দশদিন হায়েয। আর কোনো এক সংখ্যায় আদত ওয়ালী মহিলার জন্য তার পূর্বের আদতই হায়েয় এবং বাদবাকী সময় তুহুর। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭,কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/১০৮,কিতাবুন-নাওয়াযিল-৩/১৭২)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/7474

প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
(১)(সাদা ছাড়া অন্য যে কোনো বর্ণের স্রাব হায়েযের সময়ে যোনির ভিতরে থাকলে, তা অপবিত্র হিসেবে গণ্য  হবে

 টিস্যু এভাবে ভিতরে ঢুকিয়ে দেখার কোনো প্রয়োজনিয়তা নেই। যোনির ভিতরে না ঢুকিয়ে শুধু আন্ডারওয়্যারের ওপরে টিস্যু বসিয়ে রেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে চেক করে নিলেই হবে।

২. এক নামাজের ওয়াক্তে কতবার চেক করা প্রয়োজন এর নির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ নাই। প্রত্যেক নামাযের ওয়াক্ত শুরুর সাথে সাথে একবার চেক করে নিলেই হবে।

২-ক)
আসরের নামায বাকী থাকাবস্থায় মাগরিবের নামাযের ওয়াক্ত হয়ে গেলে, আপনার জীবনে ছয় ওয়াক্তের বেশী নামায কাযা হয়ে থাকলে, আপনি প্রথমে মাগরিব পড়বেন তারপর আসর পড়বেন।

৩. আপনার হায়েয রয়েছে কি না যখনই সন্দেহ হবে, তখনই চেক করবেন। সতর্কতামূলক প্রতি ওয়াক্তের সূচনাতেই চেক করে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,260 points)
জ্বী, জোহর পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।কিছু না পেলে তখন ফজর জোহর কাযা করে নিবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...