আমার হায়েযের তিনদিন থেকে হায়েয থাকা না থাকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়া শুরু হয়। আমি জানি যে দশদিন পর্যন্ত সাদা বাদে সবই হায়েযের রং।
আমার আসলে হঠাৎ দেখা যায় প্যাড এ কোনো রক্ত নেই। আমি যদি টিস্যু দিয়ে চেক করি,তখন আবার লালচে স্রাব আসে। আবার দেখা যায় লালচে স্রাবও না, টিস্যু দিলে লাল বা মেটে বর্ণের তরল আসছে। আমি এরকম যোনিপথে হঠাৎ সাদা বা পরিপূর্ণ শুষ্ক অবস্থা দেখি আবার হঠাৎ লাল স্রাব অথবা অন্য রং এর বস্তু দেখি। এরকম বারবার হতেই থাকে তাই এরকম সময়ে আমি প্রতি ওয়াক্ত হলে কয়েকবার করে করে টিস্যু দিয়ে মুছে যদি সাদা দেখি তবেই আমি গোসল করে নামাজ পড়ি। আবার দুই তিন ওয়াক্ত এরকম পরিপূর্ণ সাদা দেখার পর হঠাৎ আবার ব্লাড বাইরে তথা কাপড়ে আসতে দেখা যায়। কখনো কখনো ব্লাড বাইরে তথা আন্ডারওয়্যারেও আসে না, অর্থাৎ পরনের কাপড় সম্পূর্ণ শুষ্ক থাকে কিন্তু টিস্যু দিয়ে চেক করলে টিস্যুতে হালকা লাল অথবা হলুদ পদার্থ দেখা যায়। কখনো কখনো এমন হয় যে টিস্যুতেও খুউউব সামান্য হলুদ বর্ণ দেখা যায়, আবার কখনো কখনো এমন হয় যে দুই তিনবার টিস্যু দিয়ে মোছার পর হয়তো চতুর্থ বার টিস্যুতে সামান্য হলুদ বা মেটে রঙের মতো তরল দেখা যায়।
উল্লেখ্য,প্যাড শুকনো দেখা শুরু করলে অনেক সময় প্যাডের পরিবর্তে ওই স্থানে টিস্যু বসিয়ে দিয়ে রাখি, এতে মাঝে মাঝে একটু পরে টিস্যু বের করলে হালকা স্রাব দেখা যায়,তবে বেশিরভাগ সময়েই টিস্যুটাও শুকনো থেকে যায়, কিন্তু সেই টিস্যুই যদি তখন হাত দিয়ে ধরে যোনির ভিতরে ঢুকিয়ে চেক করি,তাহলে আবার হলুদ বা লাল স্রাবও টিস্যুতে লাগতে দেখা যায়।
আমার প্রশ্ন:
১.হায়েযের স্রাব বন্ধ হওয়া বোঝার পদ্ধতি আসলে কী?(লাল বা সাদা ছাড়া অন্য বর্ণের স্রাব যোনির ভিতরে থাকলে কি তা অপবিত্রতা হিসেবে গণ্য নাকি পবিত্রতা সেটাই তো জানি না)
ক)এই যে আমি কাপড়ে কোনো তরল না আসতে দেখলে বা টিস্যু/প্যাডে কিছু লাগতে না দেখলে সরাসরি টিস্যু যোনির ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়ে দেখি সাদা আসছে নাকি অন্য কোনো বর্ণ আসছে এবং সেই ভিত্তিতে পবিত্র হই,এটা কি ঠিক আছে?
খ) নাকি টিস্যু এভাবে ভিতরে ঢুকিয়ে দেখার প্রয়োজন নেই? তাহলে কি যোনির ভিতরে না ঢুকিয়ে শুধু আন্ডারওয়্যারের ওপরে টিস্যু বসিয়ে রেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে চেক করবো যে টিস্যু তে কিছু লাগলো কিনা? নাকি তারও প্রয়োজন নেই, অর্থাৎ শুধু পরনের অন্তর্বাস বা প্যাড শুকনো থাকলেই নিজেকে পবিত্র ধরবো?
২. এক টা নামাজের ওয়াক্তে কতবার চেক করা প্রয়োজন যে পবিত্র হয়েছি কিনা? অর্থাৎ ধরুন আসরের ওয়াক্ত ৪.০০-৫.৩০। এখন, আমি যদি ৪.৩০ এর মধ্যে একবার হলুদ বা মেটে সামান্য কিছু দেখি,আমার কি এই ওয়াক্তের জন্য আবারো চেক করা প্রয়োজন?
[##আমার এরকম অনেক হয় যে আসরের সময় একবার হালকা বর্ণের কিছু পেলে পরবর্তী এক দুই ঘণ্টা কিছু পাওয়া যায় না বা এর পর আবার ইশা পর্যন্ত সাদা থাকে আর ইশার সময় আবার অন্য বর্ণের (হলুদ/মেটে) সামান্য কিছু দেখা যায়; তাই আমি কি ৪.৩০ এ এরকম হালকা কিছু পেলে আর চেক না করে একদম সরাসরি ইশা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবো?]
আর যদি ইশা পর্যন্ত অপেক্ষা করার অবকাশ না থাকে,এর আগেই চেক করা উচিত হয়, তাহলে ৫.০০ এর সময় দ্বিতীয় আরেকবার চেক করে যদি সাদা দেখি তাহলে কি আমার আসর পড়তে হবে?নাকি গোসল করে শুধু মাগরিব পড়তে হবে? আসর পড়তে হলে সেক্ষেত্রে তো গোসল করতে করতেই ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায় আর কাযা করতে হয় নামাজ,
২-ক) এরকম কাযার ক্ষেত্রে মাগরিবের সময় যেহেতু কম থাকে তাই মাগরিব আগে পড়ব নাকি আসর পড়ে মাগরিব পড়ব?
৩. ইশার ওয়াক্ত এর জন্য কতক্ষণ ধরে হায়েয চেক করা প্রয়োজন? অর্থাৎ আমি সাধারণত কোনোদিন ১১টায় কোনোদিন ১২টায় এভাবে ঘুমাই, কোনো ব্যতিক্রম হলে ১টার মতো বাজে, স্বাভাবিক রুটিনে। এখন যদি ১১ বা ১২ টা তে হায়েযের হালকা স্রাব অর্থাৎ হলুদ বা মেটে রং দেখি, যার কিছু ঘণ্টা পরই হয়তোবা পবিত্র হয়ে যাওয়ার লক্ষণ পেলেও পেতে পারি, এমতাবস্থায় আমার কী করণীয়? আমি কি রাত ২/৩ টায় উঠে চেক করবো? তখন চেক করে সাদা পেলে গোসল করে শেষ মুহূর্তে ইশার নামাজ পড়বো? নাকি সরাসরি ফজরের ওয়াক্তের আগে চেক করবো এবং সাদা পেলে ফজরের নামাজ পড়বো?