আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
266 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
আমি আমার স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম । খোশ মেজাজেই ছিলাম দুজনে। হঠাৎ দুজনের মধ্যে আলোচনা শুরু হয় নানাবিধ বিষয়ে । আমি হঠাৎ করে বলি ৮ দিনেও না আসলে সংসার কইরা কি দরকার? তারপর আমার স্বামী প্রতিউত্তরে বলে সংসার না করলে *** যাইয়া।( খারাপ একটি ভাষা ব্যবহার করেছে আরকি) । তারপর বলে তোর সংসার করা লাগবে না । তুই **** যাইয়া। তারপর আমরা আবার ঘোরায় মন দেই । তখন তার কোনো তালাকের নিয়ত ছিল না বা আমাদের মধ্যে কোনো তালাকের আলোচনা ও হয়নি ।
১. উপরোক্ত কথোপকথন এ কি তালাক পতিত হবে?

২. স্বামি স্ত্রীর ঝগড়ার সময় স্বামি যদি তালাকের নিয়ত ছাড়া কেনায়া বাক্য ব্যবহার করে অর্থাৎ রাগের মাথায় কিংবা শাসনের উদ্দেশ্যে তাহলে কি তালাক পতিত হবে?
৩ . বলা হয়েছে যে, স্ত্রীর তালাকের আবেদন চাওয়ার সময় যদি স্বামি কেনায়া বাক্য ব্যবহার করে তাহলে তালাক হয়ে যাবে। কোন কোন বাক্য তালাকের তালাকের আবেদন চাওয়াকে বুঝায় ? স্পষ্ট করলে ভালো হতো। এক্ষেত্রে কি তালাকের নিয়ত না থাকলে ও তালাক হবে । স্বামী তো রাগের মাথায় বা স্ত্রীকে শাসন করার উদ্দেশ্যেও বলতে পারে ।

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,
نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُْمَّةِ

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ: 
٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন,ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।
ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা,বেহুশি বা পাগলামির দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাকও গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।

বিবেক বুদ্ধি লোপ পেতে বসা ওয়াসওয়াসা রোগীর এমন কোনো কথা বার্তা যা মুরতাদ হওয়াকে লাযিম করে দেয়, সেই কথাবার্তার দরুণ উক্ত ওয়াসওয়াসার রোগী মুরতাদ হবে না।(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/835

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) প্রশ্নে বর্ণিত কথোপকথন দ্বারা তালাকের কোনো প্রশ্নই আসেনা।

(২)
স্বামি স্ত্রীর ঝগড়ার সময় স্বামি যদি তালাকের নিয়ত ছাড়া কেনায়া বাক্য ব্যবহার করে অর্থাৎ রাগের মাথায় কিংবা শাসনের উদ্দেশ্যে তাহলে তালাক পতিত হবে না।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1049

(৩)
স্ত্রীর তালাকের আবেদন চাওয়ার সময় যদি স্বামী এমন কেনায়া বাক্য উচ্ছারণ করে, যা তালাক বুঝায়,তাহলে নিয়ত ব্যতিত তালাক হবে। তবে যে শব্দগুলো তালাকের আবেদনের জবাব এবং রদ উভয়টা বুঝাবে,সে শব্দুগুলো দ্বারা তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)

কোন কোন বাক্য তালাকের আবেদন চাওয়াকে বুঝায় ?
এগুলো সু- নির্ধারিত ভাবে বলা যাবে না। বরং মূলনীতি আকারে বলা যাবে,
তালাকের আলোচনার পরিস্থিতিতে সকল প্রকার কেনায়া তালাক শব্দ দ্বারা তালাক পতিত হবে,তবে যে শব্দগুলো তালাকের আবেদনের জবাব এবং আকেদনকে রদ উভয়টা বুঝাবে,সে শব্দগুলো দ্বারা তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)

স্পষ্ট করলে ভালো হতো। এক্ষেত্রে কি তালাকের নিয়ত না থাকলে ও তালাক হবে ।

স্বামী রাগের মাথায় বা স্ত্রীকে শাসন করার উদ্দেশ্যে বললেও তালাক হবে যদি তালাকের আবেদনের মুহূর্তে বলা হয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (8 points)
"তোর সংসার করা লাগবে না" বলায় কি কেনায়া তালাক পতিত হবে যদি নিয়ত না থাকে ?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...