জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
কোনো বিষয়ে নিজেকে বড় মনে করে অন্য মানুষকে তুচ্ছ মনে করার নামই অহংকার।
বাস্তবেই যে ছোট তাকে ছোট মনে করা অহংকার নয়। বরং অহংকার হচ্ছে, সে ছোট বলে তাকে তুচ্ছ জ্ঞান করা। কাড়ি কাড়ি টাকা যার ব্যাংক একাউন্টে সঞ্চিত, সে তো যে দিন এনে দিন খায় তাকে অর্থবিত্তে ছোট মনে করতেই পারে। এটা অহংকার নয়। অহংকার হচ্ছে তাকে তাচ্ছিল্য করা, গরীব বলে তাকে হেয় করা।
অহংকার একটি ঘাতক ব্যাধি।
পবিত্র কুরআনে নানাভাবে চিত্রিত হয়েছে এই ঘাতক ব্যাধির কথা।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-
سَاَصْرِفُ عَنْ اٰیٰتِیَ الَّذِیْنَ یَتَكَبَّرُوْنَ فِی الْاَرْضِ بِغَیْرِ الْحَقِّ.
পৃথিবীতে যারা অন্যায়ভাবে অহংকার প্রকাশ করে তাদেরকে অবশ্যই আমি আমার নিদর্শনাবলি থেকে বিমুখ করে রাখব। -সূরা আ‘রাফ (৭) : ১৪৬
اِلٰهُكُمْ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ فَالَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ بِالْاٰخِرَةِ قُلُوْبُهُمْ مُّنْكِرَةٌ وَّ هُمْ مُّسْتَكْبِرُوْنَ لَا جَرَمَ اَنَّ اللهَ یَعْلَمُ مَا یُسِرُّوْنَ وَ مَا یُعْلِنُوْنَ اِنَّهٗ لَا یُحِبُّ الْمُسْتَكْبِرِیْنَ.
তোমাদের মাবুদ এক মাবুদ। সুতরাং যারা আখেরাতে ঈমান রাখে না তাদের অন্তরে অবিশ্বাস বদ্ধমূল হয়ে গেছে এবং তারা অহংকারে লিপ্ত। স্পষ্ট কথা, তারা যা গোপনে করে তা আল্লাহ জানেন এবং যা প্রকাশ্যে করে তাও। নিশ্চয়ই তিনি অহংকারীকে পছন্দ করেন না। -সূরা নাহল (১৬) : ২২-২৩
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
لاَ يَدْخُلُ الجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ مِنْ كِبْرٍ، وَلاَ يَدْخُلُ النَّارَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةٍ مِنْ إِيمَانٍ.
তিল পরিমাণ অহংকার যার অন্তরে আছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না, আর তিল পরিমাণ ঈমান যার অন্তরে আছে সে দোজখে যাবে না। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৯৮
,
★সুতরাং আপনার বাবার জন্য অহংকার পরিত্যাগ করা উচিত।
,
তবে এই কারনে আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবেনা।
এই অজুহাতে আপনার সন্তানকে আসতে বাধা দেওয়া,স্বামীকে আসতে বাধা দেওয়া শরয়ী দৃষ্টিকোন থেকে নিষেধ।
,
সন্তানকে নিয়ে আসলে তো আপনার বাবা কোনো কথা তেমন বলবেনা,স্বামী কে নিয়ে আসলে যদি তাকে গালিগালাজ করে,অপছন্দ প্রকাশ করে,তাহলে কম আসবে।
যেকোনো ভাবে খোজ খবর রাখা অব্যাহত রাখবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ "
জুবাইর ইবনু মুত্বঈম (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
বুখারী (অধ্যায় : আদব, হাঃ ৫৯৮৪), মুসলিম (অধ্যায় : সদ্ব্যবহার)।
وَعَنْ عَبْدُ اللهِ بْنِ أَبِىْ أَوْفٰى قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ:لَا تَنْزِلُ الرَّحْمَةُ عَلٰى قَوْمٍ فِيهِمْ قَاطِعُ الرَّحِمِ
আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, সে সম্প্রদায়ের ওপর আল্লাহ তা‘আলার রহমত নাযিল হবে না, যারা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী।
(মিশকাতুল মাসাবিহ ৪৯৩১,আল আদাবুল মুফরাদ ৬৩,)