আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
284 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (28 points)
আসসালামু আলাইকুম

আমার বাবা সারাজীবন প্রচন্ড অহংকার, মানুষকে নিন্দা করে অনেক। যার ঢাকা বাড়ি নেই তাদের মানুষই মনে করেনা। ডিরেক্ট বলে গরীব মানুষ আমি দেখতে পারিনা। আরো অনেক অদ্ভুত কথা বার্তা। যা শুনলে মেজাজ ঠিক রাখতে পারিনা। আমার নানার বাড়ির আত্মীয় স্বজন কেও আব্বু অনেক নিন্দা করে, অপমান করে। আমার বিয়ের সময় আব্বু মন থেকে খুশি ছিলনা কারণ আমার স্বামীর ঢাকায় বাড়ি নেই আর নিম্ম-মধ্যবিত্ত পরিবারের, আমি জোর করে আব্বুকে বিয়েতে রাজী করাইছি। আমার স্বামী সরকারী চাকুরী করে। আমি চাইনা আমার স্বামী-সন্তান আব্বুর বাসায় আসুক। এতে কি আমার গোনাহ হবে? আমি এসে খোঁজ খবর নিব যেহেতু আমি সন্তান।

1 Answer

0 votes
by (566,370 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

কোনো বিষয়ে নিজেকে বড় মনে করে অন্য মানুষকে তুচ্ছ মনে করার নামই অহংকার।

বাস্তবেই যে ছোট তাকে ছোট মনে করা অহংকার নয়। বরং অহংকার হচ্ছে, সে ছোট বলে তাকে তুচ্ছ জ্ঞান করা। কাড়ি কাড়ি টাকা যার ব্যাংক একাউন্টে সঞ্চিত, সে তো যে দিন এনে দিন খায় তাকে অর্থবিত্তে ছোট মনে করতেই পারে। এটা অহংকার নয়। অহংকার হচ্ছে তাকে তাচ্ছিল্য করা, গরীব বলে তাকে হেয় করা।
অহংকার একটি ঘাতক ব্যাধি। 

পবিত্র কুরআনে নানাভাবে চিত্রিত হয়েছে এই ঘাতক ব্যাধির কথা।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-
سَاَصْرِفُ عَنْ اٰیٰتِیَ الَّذِیْنَ یَتَكَبَّرُوْنَ فِی الْاَرْضِ بِغَیْرِ الْحَقِّ.
পৃথিবীতে যারা অন্যায়ভাবে অহংকার প্রকাশ করে তাদেরকে অবশ্যই আমি আমার নিদর্শনাবলি থেকে বিমুখ করে রাখব। -সূরা আ‘রাফ (৭) : ১৪৬

اِلٰهُكُمْ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ فَالَّذِیْنَ لَا یُؤْمِنُوْنَ بِالْاٰخِرَةِ قُلُوْبُهُمْ مُّنْكِرَةٌ وَّ هُمْ مُّسْتَكْبِرُوْنَ لَا جَرَمَ اَنَّ اللهَ یَعْلَمُ مَا یُسِرُّوْنَ وَ مَا یُعْلِنُوْنَ   اِنَّهٗ لَا یُحِبُّ الْمُسْتَكْبِرِیْنَ.
তোমাদের মাবুদ এক মাবুদ। সুতরাং যারা আখেরাতে ঈমান রাখে না তাদের অন্তরে অবিশ্বাস বদ্ধমূল হয়ে গেছে এবং তারা অহংকারে লিপ্ত। স্পষ্ট কথা, তারা যা গোপনে করে তা আল্লাহ জানেন এবং যা প্রকাশ্যে করে তাও। নিশ্চয়ই তিনি অহংকারীকে পছন্দ করেন না। -সূরা নাহল (১৬) : ২২-২৩

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
لاَ يَدْخُلُ الجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ مِنْ كِبْرٍ، وَلاَ يَدْخُلُ النَّارَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةٍ مِنْ إِيمَانٍ.
তিল পরিমাণ অহংকার যার অন্তরে আছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না, আর তিল পরিমাণ ঈমান যার অন্তরে আছে সে দোজখে যাবে না। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৯৮
,
★সুতরাং আপনার বাবার জন্য অহংকার পরিত্যাগ করা উচিত।   
,
তবে এই কারনে আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবেনা।
এই অজুহাতে আপনার সন্তানকে আসতে বাধা দেওয়া,স্বামীকে আসতে বাধা দেওয়া শরয়ী দৃষ্টিকোন থেকে নিষেধ।
,
সন্তানকে নিয়ে আসলে তো আপনার বাবা কোনো কথা তেমন বলবেনা,স্বামী কে নিয়ে আসলে যদি তাকে গালিগালাজ করে,অপছন্দ প্রকাশ করে,তাহলে কম আসবে।
যেকোনো ভাবে  খোজ খবর রাখা অব্যাহত রাখবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ "

জুবাইর ইবনু মুত্বঈম (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
বুখারী (অধ্যায় : আদব, হাঃ ৫৯৮৪), মুসলিম (অধ্যায় : সদ্ব্যবহার)।

وَعَنْ عَبْدُ اللهِ بْنِ أَبِىْ أَوْفٰى قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ:لَا تَنْزِلُ الرَّحْمَةُ عَلٰى قَوْمٍ فِيهِمْ قَاطِعُ الرَّحِمِ 

আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, সে সম্প্রদায়ের ওপর আল্লাহ তা‘আলার রহমত নাযিল হবে না, যারা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী। 
(মিশকাতুল মাসাবিহ ৪৯৩১,আল আদাবুল মুফরাদ ৬৩,)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...