আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
120 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু উস্তাদ। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর জন্য পর্দার বিধান কিরকম,মুখ হাত আর পা বাদে সমস্ত শরীর আবৃত থাকাই কি যথেষ্ট ? মাহরাম মেইনটেইন যেখানে অসম্ভব ওয়ার্ডে ? পুরুষ ইন্টার্ন ডাক্তার যারা প্রেশার চেক করেন এবং পার্লস শরীরে হাত দিয়ে চেক করে, এবং পুরুষ নার্স -সেবক তারা ক্যানুলা করা কতটুকু জায়েজ, অপারগ হলে মানে মহিলা নার্স না পারলে? সাধারণত ক্যানুলা করতে গেলে সারা হাত ডান এবং বাম এবং ২পা তারা চেক করে কোথায় শিরা দেখা যায়, এক্ষেত্রে যার শিরা পাওয়া যায় নাহ তার ক্ষেত্রে বেশিক্ষণই তারা খুজঁবে, আর সেই সুযোগে কোনো পুরুষ যদি ওই নারীকে নিয়ে অন্য কিছু চিন্তা করে এবং মেয়েটা বুঝতে পারে যে লোকটা তাকে খারাপ উদ্দেশ্যে স্পর্শ করছে যদিও বাহ্যিক ভাবে বুঝা যায় সে ক্যানুলার জন্য শিরা খুঁজছে! এক্ষেত্রে মেয়েটার কি গুনাহ হবে?
আর ওয়ার্ডে পুরুষ এর আসা যাওয়া কমন সাথে অনেক পুরুষ ডাক্তারও আছে, এমনটা অসম্ভব যে কেউ একটানা ১৫/২০দিন বোরকা পড়ে থাকবে, আমাকে একটু নাসীহা করুন, এমতাবস্থায় কিভাবে পর্দা মেইনটেইন করবো, আমি মাস্ক পড়ে মুখ ঢেকে রাখলেও অনেক সময় খাবার টাইমে পুরুষ ডাক্তার, পুরুষ নার্স চলে আসে, ওই সময় না পারি মুখ ঢাকতে না পারি লুকাইতে, এমনকি ঘুমের সময়ও সেইম অবস্থা।
আমি প্রায়ই হাসপাতালে দীর্ঘ সময় থাকি৷ বাহিরে তো খুব পর্দা করি৷ বাসায়ও মাহরাম মেইনটেইন করি, কিন্তু হসপিটাল আসলেই আমার সাথে এমন হয়! আমি কিভাবে কি করবো উস্তাদ প্লিজ পরামর্শ দিন।

1 Answer

0 votes
by (567,240 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/7711/ ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ  
শরীয়তের মূলনীতি হল, পুরুষ যাবে পুরুষ ডাক্তারের কাছে, মহিলা যাবে মহিলা ডাক্তারের কাছে। যদি পুরুষ ডাক্তার পাওয়া না যায়, তাহলে মহিলা ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে পারবে। অনুরূপভাবে মহিলার জন্যও যদি মহিলা ডাক্তার না পাওয়া না যায়, তাহলে পুরুষ ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে পারবে। (সারাখসী, আল-মাবসূত ১০/১৫৬ ; কাসানী,বাদাই ৫/১২২)

হযরত আনাস ইবনু মালিক রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

كان رسول الله ﷺ يغزو بأم سليم ونسوة من الأنصار معه إذا غزا فيسقين الماء ويداوين الجرحى

রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন অভিযানে বের হতেন তখন তিনি উম্মু সুলাইম রাযি. ও কিছু আনসারী মহিলাকে সাথে নিয়ে যেতেন। তাঁরা পানি পরিবেশন করতেন এবং আহতদের চিকিৎসা করতেন। (মুসলিম ১৮১০)

এ হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী রহ. বলেন,

وهذه المداواة لمحارمهن وأزواجهن ، وما كان منها لغيرهم لا يكون فيه مس بشرة إلا في موضع الحاجة

এ হাদীস থেকে জানা যায় যে, যুদ্ধক্ষেত্রের উদ্দেশ্যে মেয়েদের বের হওয়া এবং পানি পরিবেশন ও চিকিৎসা প্রভৃতি কাজে তাদেরকে খাটানো জায়িয। তারা মাহরাম ও স্বামীদের চিকিৎসা ও সেবা করবে। অন্যদেরও সাধারণভাবে স্পর্শ করা ছাড়া চিকিৎসা করতে পারবে; তদুপরি জরুরতের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় স্থান স্পর্শ করতেও কোন অসুবিধা নেই। (নববী, শরহু মুসলিম, পৃ ৫১১)

ইবনু হাজার আসকালানী রহ. বলেন,

فيه جواز معالجة المرأة الأجنبية الرجل الأجنبي للضرورة

এ হাদীস থেকে জানা যায় যে, প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে মহিলার জন্য বেগানা পুরুষের চিকিৎসা করা জায়িয হবে।  (ইবনে হাজার, ফাতহুল বারী ৬/৮০)

আরো জানুনঃ 
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার যে রোগ হয়েছে,সে সংক্রান্ত কোনো মহিলা ডাক্তার পেলে এভাবে পুরুষ ডাক্তারকে দেখানো কোনোভাবেই জায়েজ হবেনা।
,
আপনি যদি কোনো মহিলা ডাক্তার না পান,সেক্ষেত্রে এভাবে পুরুষ ডাক্তার দেখানো যাবে।
পুরুষ ডাক্তার বা গায়রে মাহরাম পুরুষ কেহ সেই রুমে আসলে বা  আপনি পর্দা করবেন।
চেহারা সহ পূর্ণ শরীর ঢেকে রাখবেন।
বোরকা পড়তেই হবে,এমন আবশ্যকীয়তা নেই।
তবে অন্য কাপড় পরিধান করেই হোক,চেহারা হাত পা সহ পূর্ণ শরীর ঢেকে রাখতে হবে।
,
ডাক্তার চিকিৎসার প্রয়োজনে যে অঙ্গ অনাবৃত করতে বলবেন, শুধু সেই অঙ্গ অনাবৃত করবেন।
বাকি শরীর ঢেকে রাখবেন।
,
শিরা খুজতে গিয়ে ডাক্তার যদি খারপ কিছু কল্পনা করে,তাহলে এতে আপনার গুনাহ হবেনা।
আপনি মনে কোনো খারাপ কল্পনা আনবেননা।

ঘুমানোর সময় যেহেতু রুমে অন্য পুরুষ আসার সম্ভাবনা রয়েছে,তাই যথাসম্ভব আপনি কাথা দিয়ে বা অন্য কাপড় দিয়ে চেহারা সহ পুরো শরীর ঢেকে ঘুমাবেন।
পূর্ণ পর্দা অব্যাহত রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
আল্লাহ তায়ালা আপনার সহায় হোন।
আমিন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...