আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
184 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আমি কিছু প্রশ্ন এর উত্তর জানতে চায় । আমাকে কেউ সাহায্য করুন।
ঘটনা টা প্রথম থেকে শুরু করি।
আমি একজন কে ভালোবাসি। আমরা দুই জন দুইজন কে অনেক ভালোবাসি।এই ভালবাসার সম্পর্কটাকে স্থায়ী করবার জন্য গত বছর বিয়ে করি। বিয়েটা আমাদের পরিবার এর কেউ জানত না ।বিয়েটা আমরা গোপন রাখি।
বিয়ে টা যখন হয় তখন আমাদের কোনো সাক্ষী ছিল না । কাজী দুই জন মানুষ এর নাম সাক্ষ্য এর জায়গায় লিখে দেয় যাদের আমরা চিনতাম না ।সাতে কাজিও কিছু গাপ্লা করে কাবিন নিয়ে । যাই হোক বিয়ের ৫ মাস পর আমরা বুঝতে পারি আমাদের বিয়ে টা ঠিক ভাবে হয় নাই । পরে আমরা আবার কাজী এর সাতে যোগাযোগ করি এবং সমস্যা কথা টা বলি। কাজী আবার দুই জন সাক্ষী নিয়ে আসে এবং বিয়ে টা পরাই আবার। সাক্ষী দুইজন এর মধ্যে একজন ছিল বয়স্ক এবং আর একজন ছিল ১৮ বসর কম বয়স।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের বিয়ে টা কি হইসে ?
কারণ মেয়ে এর বাসা এবং আমার বাসার কেউ জানত না । এবং দ্বিতীয়বার যখন বিয়ে টা করানো হয় যেই সাক্ষী গুলো ছিল ওদের নাম ঠিকানা কাবিন এই নেই ।
সুতরাং আপনাদের কাছে প্রশ্ন হল এই বিবাহটা কি হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (59,730 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

মাতাপিতার বৈধ আদেশ মানা, তাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক ঘোষনা করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

 

সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল, ২৩)

 

অভিভাবক ছাড়া বিবাহ সংক্রান্ত জানুনঃ https://ifatwa.info/4801/

নিজে নিজে বিয়ে সম্পর্কে আরো জানুন- https://ifatwa.info/2730/

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

মাতাপিতার পরামর্শেই বিয়েতে কল্যাণ নিহিত রয়েছে। সকলের জন্য উচিত হলো  মাতাপিতা এবং পারিবারিক ভাবে প্রশ্নে উল্লেখিত  বিয়ে করা। যেকোনো মেয়েকে/ছেলেকে বিবাহের ক্ষেত্রে পরিবারকে বুঝিয়ে রাজি করানো জরুরি। পারিবারিক ভাবে বিয়ে করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টাকে অব্যাহত রাখা উচিত। আমরা কাউকে পালিয়ে বা গোপন বিয়ের পরামর্শ কখনো দিতে পারিনা।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

 তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

 

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

চোখের যিনা সম্পর্কে আরো জানুন-  https://www.ifatwa.info/4094

গোনাহের শাস্তি ও তাওবা- https://www.ifatwa.info/906

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. মাতাপিতা সন্তুষ্টি ও অনুমতি নিয়ে সবাইকে অগ্রসর হতে হবে এবং মাতাপিতার সন্তুষ্টিই দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের উত্তম মাধ্যম। মাতাপিতাকে কষ্ট দিয়ে জীবনে সূখী হওয়া যাবে না। তাছাড়া বৈধ ও ভালো কাজে মাতাপিতার নির্দেশ মান্য করাও ওয়াজিব। পিতা মাতা সাধারণত সন্তানদের থেকে ভালো বুঝেন৷ সর্বদা তারা সন্তানদের কল্যাণ চান৷ অনেক ছেলে মেয়ে যারা নিজেদের পছন্দের ছেলে মেয়েকে আবেগবশত বিয়ে করে পরবর্তীতে অনেক কষ্টে আছে৷

২. উল্লেখ্য যে, অনেক মেয়ে গোপনে বিয়ে করে অনেক কষ্টে আছে। অনেক সময় ছেলে তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে থাকে। আবার পারিবারিক ভাবে উভয় পক্ষের পরিবার এই বিয়েতে রাজী হতে চাই না। আবার স্বামী তাকে আর পরবর্তীতে স্ত্রী হিসেবে মেনে নেয় না বা মেনে নিতে চাই না।

 

৩. পূর্বে অনেক ফাতাওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে,মাতাপিতার সম্মতি ব্যতীত কখনো কোনো মুসলমান যুবক যুবতীর জন্য একা একা বিয়ে করা সমীচীন হবে না,মঙ্গলজনক হবে না। মাতাপিতাকে না জানিয়ে বালিগ ছেলে মেয়ের বিবাহ নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। অনেক উলামায়ে কেরাম অভিভাবকহীন বিয়েকে বাতিল বলে মনে করেন। হানাফি মাযহাব মতে কু'ফু হিসেবে ছেলে মেয়ের সমকক্ষ বা বেশী মর্যাদার অধীকারী হলেই কেবল বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে। নতুবা মেয়ের অভিভাবকের অনুমতির উপর বিয়ে মওকুফ থাকবে।

 

৪. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি ঐ স্বাক্ষী বালেগ পুরুষ হয়ে থাকে এবং উক্ত ক্ষেত্রে বিবাহের সকল শর্ত পাওয়া যায় তাহলে বিয়েটা সহীহ হবে, অন্যথায় নয়। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/56002/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...