আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
136 views
in পবিত্রতা (Purity) by (27 points)
১.এক মেয়ের স্বামী তার বিয়ের শুরু থেকে অনেক বেশি দায়িত্বজ্ঞানহীন, অনুভূতিহীন, দয়ামায়াহীন, কেয়ারলেস।অনেক অনেক দুআ করার পরেও সে ঠিক এমনই থেকে গেছে।
এই মেয়ে পুরো অসুস্হ,  বাচ্চা প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে, ব্লিডিং হচ্ছে  এমন অবস্থায় ওয়াইফকে   রেখে কয়দিনের জন্য গিয়েছে অন্য জায়গায়, তার কথা সে আসলেও তো আর বাচ্চা বাচবে না, সে এসে কি করবে।

অথচ তার ওয়াইফ কে এখন হাজারটা টেস্ট করতে নিয়ে যাওয়া, ডাক্তার দেখানো সহ এইসব কাজ করার মতোন কেউ নাই, স্বামী এরপরেও আসেনি

এমন দয়ামায়াহীন,  কেয়ারলেস স্বভাবের তার হাজার কাহিনী আছে, এই স্বামীর জন্য ভীষন মানসিক কষ্টে   ওয়াইফের ঈমান আমল সব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এখন এই ওয়াইফ যদি এখন থেকে ভবিষ্যতে সকল দুআ কবুলের সময় দুআ করে যে আল্লাহ যেনো তারবজন্য সর্বোত্তম কল্যাণের ফয়সালা করেন আর   খুব তাড়াতাড়ি তাকে হালাল  উপায়ে সর্বোত্তম কল্যাণকর মাহরামের ব্যবস্হা করে দেন যে আল্লাহর সন্তষ্টির জন্য মেয়েটাকে ভালোবেসে এই মেয়ের মৃত্যু পর্যন্ত সকল দায়িত্ব নিবে, প্রতিমাসে হাতখরচ দিবে, মেয়েটার দেখাশোনা করবে,আর এইটাই যেনো মেয়েটার জন্য কল্যাণকর  হয়, এমন দুআ করা কি জায়েজ হবে???

২.বাচ্চা পেটে,  এখন হালকা ফোটা ফোটা রক্ত যাচ্ছে প্রায় সারাদিন, গর্ভপাত হয়ে গিয়েছে কিনা বোঝা যায়নি,
সারাদিন ই অল্প রক্ত যেতেই আছে,
এই অবস্হায় কি নামাজ পড়া যাবে?

৩.উপরোক্ত অবস্হায় মুসহাফ দেখে ধরে পড়া যাবে?
৪.উপরোক্ত অবস্হায় অনলাইনে  নাজেরা ক্লাসে কুরআন পড়া যাবে উস্তাদাকে শোনানোর জন্য?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

স্বামীর উপর ওয়াজিব যে,সে তার স্ত্রীর ভরণপোষণ করবে।

الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَبِمَا أَنْفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ

পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে।(সূরা নিসা-৩৪)

لِيُنْفِقْ ذُو سَعَةٍ مِنْ سَعَتِهِ وَمَنْ قُدِرَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ فَلْيُنْفِقْ مِمَّا آتَاهُ اللَّهُ لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا مَا آتَاهَا

বিত্তশালী ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয় করবে। যে ব্যক্তি সীমিত পরিমাণে রিযিকপ্রাপ্ত, সে আল্লাহ যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় করবে। (সূরা তালাক-৭)

হাকীম ইবনু মু‘আবিয়াহ আল-কুশাইরী (রহ.) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত।

وعَنْ مُعَاوِيَةَ الْقُشَيْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : " قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا حَقُّ زَوْجَةِ أَحَدِنَا عَلَيْهِ ؟ قَالَ : ( أَنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طَعِمْتَ ، وَتَكْسُوَهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ ، وَلَا تَضْرِبْ الْوَجْهَ ، وَلَا تُقَبِّحْ ، وَلَا تَهْجُرْ إِلَّا فِي الْبَيْتِ)

 তিনি বলেন, একদা আমি বলি, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কারো উপর তার স্ত্রীর কি হক রয়েছে? তিনি বললেনঃ তুমি যখন আহার করবে তাকেও আহার করাবে। তুমি পোশাক পরিধান করলে তাকেও পোশাক দিবে। তার মুখমন্ডলে মারবে না, তাকে গালমন্দ করবে না এবং পৃথক রাখতে হলে ঘরের মধ্যেই রাখবে।(আবু দাউদ-২১৪২,ইবনে মা'জা-১৮৫০)

 

স্বামী তার স্ত্রীর ভরণপোষণ আদায় না করলে এবং স্ত্রীকে সঙ্গ না দিলে,স্ত্রী যদি কাযী সাহেবের নিকট বিচার দায়ের করে,তাহলে কাযী সাহেব উক্ত বিবাহকে ভঙ্গ করে দেয়ার অধিকার রাখেন।(জাদীদ ফেকহী মাসাঈল-৩/১০০)

স্বামীর উপর আবশ্যক যে, মধ্যম ধরণের খোরাকি স্ত্রীকে প্রদান করা।এবং প্রয়োজনিয় খরচাপাতি স্বামীর উপর ওয়াজিব।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ

নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯)

নারীদের সাথে সদ্ভাবে ব্যবহার করতে হলে তাদেরকে নিয়মমাফিক অন্ন-বস্র-বাসস্থান দিতে হবে। খোরাকি ব্যতিত বিলাসিতার ব্যবস্থা স্বামীর উপর ওয়াজিব নয়।

স্ত্রীর নিজস্ব নেসাব পরিমাণ মাল (ক্রমবর্ধমান হোক বা অক্রমবর্ধমান হোক) থাকলে স্ত্রীর উপর কুরবানি ওয়াজিব। স্বামীর উপর কুরবানি ওয়াজিব হলেই যে, স্ত্রীকে কুরবানি দিতে হবে।বিষয়টা এমন নয়।

হাকীম ইবনু মু‘আবিয়াহ আল-কুশাইরী (রহ.) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত।

وعَنْ مُعَاوِيَةَ الْقُشَيْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : " قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا حَقُّ زَوْجَةِ أَحَدِنَا عَلَيْهِ ؟ قَالَ : ( أَنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طَعِمْتَ ، وَتَكْسُوَهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ ، وَلَا تَضْرِبْ الْوَجْهَ ، وَلَا تُقَبِّحْ ، وَلَا تَهْجُرْ إِلَّا فِي الْبَيْتِ)

তিনি বলেন, একদা আমি বলি, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কারো উপর তার স্ত্রীর কি হক রয়েছে? তিনি বললেনঃ তুমি যখন আহার করবে তাকেও আহার করাবে। তুমি পোশাক পরিধান করলে তাকেও পোশাক দিবে। তার মুখমন্ডলে মারবে না, তাকে গালমন্দ করবে না এবং পৃথক রাখতে হলে ঘরের মধ্যেই রাখবে।(আবু দাউদ-২১৪২,ইবনে মা'জা-১৮৫০)

স্বামী তার স্ত্রীর ভরণপোষণ আদায় না করলে এবং স্ত্রীকে সঙ্গ না দিলে,স্ত্রী যদি কাযী সাহেবের নিকট বিচার দায়ের করে,তাহলে কাযী সাহেব উক্ত বিবাহকে ভঙ্গ করে দেয়ার অধিকার রাখেন। (জাদীদ ফেকহী মাসাঈল-৩/১০০)বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন https://www.ifatwa.info/5139

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে আপনার উপর আবশ্যক যে, আপনি দ্রুত কোন ডাক্তারের চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। যদি স্বামী না যান তাহলে অন্য মাহরামকে সাথে নিয়ে যাবেন। যদি তাও সম্ভব না হয় তাহলে আপনার কোন প্রতিবেশী বোনকে সাথে নিয়ে যাবেন। কারণ, ৪৮ মাইলের কম সফরে মাহরাম থাকা আবশ্যক নয়। আপনার স্বামী নিজ দায়িত্ব পালন না করলে গুনাহগার হবে। আপনার জন্য উচিত তাকে হেকমত ও ভালোবাসার সাথে বুঝাতে থাকা ও তার হেদায়াতের জন্য দোয়া করতে থাকা। আপনি উক্ত দোয়া করতে পারেন। হতে পারে সেই দোয়ার রেজাল্ট হিসেবে আল্লাহ তায়ালা আপনার স্বামীকেই পূর্ণ হেদায়াত দান করবেন ইনশাআল্লাহ।

২-৪. অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে গর্ভের বাচ্চা পূর্ণ হওয়ার পূর্বে প্রসব হয়ে গেলে তাতে যদি মানবাকৃতি প্রকাশ পায় তবে এর বিধি-বিধান বাচ্চা হওয়ার বিধিবিধানের মতো। অর্থাৎ বাচ্চা জন্ম হওয়ার পর রক্তপাতকে নিফাস বলা হয়। যার সর্বোচ্চ সীমা ৪০ দিন। নূন্যতম কোন সীমা নেই। তদ্রুপ অপূর্ণাঙ্গ বাচ্চা গর্ভপাতের পরে রক্তপাত নিফাস হিসেবে গণ্য হবে। যা সর্বোচ্চ ৪০ দিন পর্যন্ত গণ্য হতে পারে। ৪০ দিনের আগে যেদিন রক্ত বন্ধ হবে, সেদিন থেকে নামাজ রোযা আরম্ভ করতে হবে।

উল্লেখ্য, নিফাসকালীন ছুটে যাওয়া নামাজগুলো পরবর্তীতে কাযা করতে হবে না। যেমনিভাবে হায়েযকালীন ছুটে যাওয়া নামাজগুলো পরবর্তীতে কাযা করতে হয় না। নিফাসকালীন ছুটে যাওয়া রোজাগুলো পরবর্তীতে কাযা করতে হবে। যেমনিভাবে হায়েযকালীন ছুটে যাওয়া রোজাগুলো পরবর্তীতে কাযা করতে হয়।

আর যদি গর্ভপাত হওয়া বস্তুটি শুধুই গোশতের টুকরো অথবা রক্তপিণ্ড মাত্র, মানবাকৃতির কোন কিছুই তাতে বিদ্যমান নয়, সেক্ষেত্রে এ ধরনের গর্ভপাতের পর রক্তপাতকে ইস্তিহাযা হিসেবে গণ্য করবে। প্রতি ওয়াক্তে পরিচ্ছন্ন হয়ে নতুন অজু করে নামাজ পড়বে এবং এই অবস্থায় রোজা রাখতে হবে। এবং মাসহাব স্পর্শ করে কুরআন তেলাওয়াতও করতে পারবে ও অন্যকে পড়া শুনাতেও পারবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...