بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
জুমআর রাতে সকল নবী ও আম্বিয়াদের কাছে তাদের জাতির এবং পিতা-মাতার
কবরে তাদের সন্তানদের আমল দেখানো হয় মর্মে হাকিম তিরমিযী রহ. তার রচিত নাওয়াদিরুল উসূল
নামক কিতাবের ২১৩ নং পৃষ্ঠায় একটি বর্ণনা এনেছেন। একই বর্ণনা আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী
রহ. তার কিতাব শরহুস সুদুর মিসরী নামক কিতাবে ২৭৫/১৭৮ নং পৃষ্ঠায় এনেছেন। তাছাড়া কানযুল
উম্মাল ফি সুনানিল আক্বওয়াল নামক হাদিসের কিতাবেও এই মর্মে হাদিস বিদ্যমান রয়েছে। হাদিস নং-৪৫৪৯৩।
প্রতি বৃহস্পতিবারে আল্লাহ তায়ালার সামনে বান্দাদের নেক ও বদ
আমল দায়িত্বশীল ফেরেস্তারা পেশ করে থাকেন মর্মে
সহীহ হাদিসে এসেছে। এইজন্যই নবীজী সা. বৃহস্পতিবার রোযা রাখতেন। নবীজী সা. ইরশাদ করেছেন
যে,
حدثنا محمد بن يحيى حدثنا أبو عاصم عن محمد بن رفاعة عن
سهيل بن أبي صالح عن أبيه عن أبي هريرة : أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال
تعرض الأعمال يوم الإثنين والخميس فأحب أن يعرض عملي وأنا صائم (سنن الترمذى-كتاب
الصوم، باب ما جاء في صوم يوم الإثنين والخميس، رقم الحديث-747
অর্থাৎ হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। নবীজী সা. ইরশাদ করেছেন
যে, সোম ও বৃহস্পতিবার আমল উপস্থাপন করা হয়। আমি এটা পছন্দ করি যে, যখন আমার আমল এমন অবস্থায় উপস্থাপিত হোক যখন আমি রোযাদার। (সুনানে
তিরমিযী, হাদিস নং-৭৪৭)
এই হাদিসে নবীজী সা. এর কাছে উপস্থাপনের কথা বলা হয়নি। নবীর
আমল তার নিজের কাছে উপস্থাপন করার কোন অর্থ হয়না। মানে হল আল্লাহর কাছে উপস্থাপন করা
হয়। এই ব্যাখ্যাটির পক্ষে অর্থাৎ আল্লাহর কাছে আমল উপস্থাপন করা হয় এই মর্মে স্পষ্ট
বর্ণনা এসেছে আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী রহ. এর তিরমিযী শরীফের তাক্বরীর আল আরফুস
শাজী নামক ব্যাখ্যগ্রন্থে। যার ভাষ্য হল-
واما وجه الصوم يوم الاثنين ففى رواية عن ابن عباس بسند قوى
…….لان يوم الأثنين والخميس ترفع الاعمال الى الله تعالى
অর্থাৎ সোম ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখার কারণ হল, হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে সহীহ বর্ণনায় এসেছে যে, এই দু’দিন আল্লাহ তায়ালার কাছে আমল উপস্থাপন করা হয়। (আল আরফুস
শাজী-রোযা অধ্যায়, সোমও বৃহস্পতিবার রোযা প্রসঙ্গে, পৃষ্ঠা নং-২৯৬)
হযরত আওস ইবনে আউস (রা:) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ … ﻓﺄﻛﺜﺮﻭﺍ ﻋﻠﻲ ﻣﻦ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻓﻴﻪ، ﻓﺈﻥ ﺻﻼﺗﻜﻢ ﻣﻌﺮﻭﺿﺔ ﻋﻠﻲ ﺇﻥ ﻣﻦ ﺃﻓﻀﻞ ﺃﻳﺎﻣﻜﻢ ﻳﻮﻡ
নিশ্চয়ই জুমার দিন শ্রেষ্ঠতম দিনগুলোর অন্যতম। … সুতরাং সেদিন তোমরা আঁমার উপর বেশি বেশি দরূদ পড়। নিশ্চয় তোমাদের দরূদ আঁমার কাছে পেশ
করা হয়। (সুনানে আবু দাউদ,হাদিস:১০৪৭,মুসনাদে আহমদ,হাদিস,১৬১৬২,সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৯১০। [হাদিসটির সনদ সহীহ])
হযরত আনাস (রা:) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
ﺻﻼﺓً ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻋﺸﺮﺍً ﻭﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ، ﻓﻤﻦ ﺻﻠﻰ ﻋﻠﻲ ﺃﻛﺜﺮﻭﺍ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻋﻠﻲ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ
তোমরা জুমার রাত ও জুমার দিনে আঁমার উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ
কর। যে ব্যক্তি আঁমার উপর একবার দরূদ পাঠ করে আল্লাহ তাআলা তার উপর দশবার রহমত নাযিল করেন। (আসসুনানুল কুবরা, বায়হাকী ৩/২৪৯,ফাযাইলুল আওকাত, বায়হাকী- ২৭৭,আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, ইবনুস সুন্নী ৩৭৯)
বি:দ্র: এই বিষয়টির উপর বিশ্বাস বা না বিশ্বাসের উপর ঈমান নির্ভরশীল
নয়। তাই এটি নিয়ে বাড়াবাড়ি কিছুতেই কাম্য নয়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের দ্বীনের ক্ষেত্রে
সহীহ বুঝ দান করুন
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন !
দরুদ ও সালাম, দান-সদকা ইত্যাদী নফল আমলের সাওয়াব ঈসালে সাওয়াব
হিসেবে নবীজীর রওজায় পৌছানো হয় এই মর্মে একাধিক বর্ণনা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে
“বান্দার ফরজ কোন ইবাদতের সাওয়াব আম্বিয়া আ: কবরে পৌছানো হয়” এরকম কোন বর্ণনা সুস্পষ্ট
ভাবে পাওয়া যায় না। বরং ফরজ ইবাদত বান্দার নিজের জন্য হয়ে থাকে। মোটকথা, যেসব আমল ঈসালে
সাওয়াব হিসেবে করা যায় সেসব আমলের সাওয়াব নবীগনের কবরে পৌঁছার দোয়া করা যাবে। ঈসালে
সাওয়াব সম্পর্কে জানুন: https://www.ifatwa.info/53447/?show=53447#q53447